মৈনাক দেবনাথ, নদিয়া: ছাদনাতলা থেকে শুরু করে বরপক্ষ কনেপক্ষ নিয়ে বিয়ের আসর জমজমাট! পাত পেড়ে খাওয়ানো হল আমন্ত্রিত অতিথিদের। তবে এই বিয়ে কিন্তু কোনও মানব মানবীর বিয়ে নয়। এই বিয়ে দুটি গাছের। নদিয়ার শান্তিপুরে বট ও অশ্বত্থ গাছের বিয়ে দেওয়া হল মহাসমারোহে। তবে গাছেদের বিয়ে বলে কিন্তু দায়সারা ভাবে সম্পন্ন করা হয়নি এই বিয়ে। ছিল বরপক্ষ, কনেপক্ষ। উপস্থিত ছিলেন পুরোহিত ক্ষৌরকার প্রত্যেকেই। দধিমঙ্গল থেকে শুরু করে আশীর্বাদ, গায়ে হলুদ, যজ্ঞ, মালাবদল এমনকি সিঁদুরদান! প্রতিটি প্রথাই মানা হয়েছে নিয়ম করে। এখানে বটগাছ হল কনে। আর অশ্বত্থ গাছ হল বর! শান্তিপুরের এই অশ্বত্থ গাছের বয়স ১৮ বছরের কাছাকাছি এবং বটগাছের ১২ বছর। প্রায় পাশাপাশিই রয়েছে এই দুটি গাছ। বুধবার সমস্ত নিয়ম মেনেই দেওয়া হল বট ও অশ্বত্থ গাছের বিয়ে।
উল্লেখ্য, দিনের পর দিন চওড়া রাস্তা উড়ালপুল ইমারত তৈরি করার জন্য লক্ষ লক্ষ গাছ কাটা হচ্ছে। প্রশাসন থেকে শুরু করে সমাজকর্মীরা প্রত্যেকেই সাধারণ মানুষকে জাগরিত করার জন্য একের পর এক প্রচার অভিযান চালাচ্ছেন। তবুও থামানো যাচ্ছে না বৃক্ষ ছেদন। সাধারণ মানুষ একদিকে নির্বিচারে বৃক্ষ ছেদন করছেন নিজেদের স্বার্থকে ত্বরান্বিত করার জন্য। আবার অপরদিকে তাদেরই একাংশ বৃক্ষকে দেবতা মনে করে তাদের বিবাহের রীতি নিয়ম পালন করছেন।
আরও পড়ুন : রুটি খেয়ে কমান ব্লাড সুগার! শুধু ডায়াবেটিসে গমের আটার বদলে খান এর রুটি
অন্যদিকে সকলে সেজেগুজে বিয়েবাড়িতে এসে সেলফি তোলা তাসা বাজিয়ে নাচ , দীর্ঘ ক্ষণের বিবাহ দেখা অবশেষে বসে পাতপেড়ে খাওয়া এসবই হয় সন্ধ্যার পর থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন ১৮ বছর আগে একসাথে বট ও অশ্বত্থ লাগানো হলেও বটগাছ ছাগলে মুড়ে খেয়ে যাওয়ার কারণে আকার আকৃতি অনুযায়ী তার বয়স ১২ আর এই ১২বছর বাদেই বিবাহযোগ্যা হয়ে উঠে সে। একই সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে বেড়ে ওঠা দুই গাছের শুভ পরিণয় সম্পন্ন না হলে নাকি অমঙ্গল হয় এলাকায়। অন্যদিকে চার হাত থুড়ি শয়ে শয়ে ডাল ডাল এবং হাজার হাজার পাতা একত্রিত করলে শস্যশ্যামলা হয়ে ওঠে এলাকা মানুষ।