পাঁচমিশালি মুম্বইয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্যের মালিক বাবা সিদ্দিকি, কেমন ছিল তাঁর যাত্রাপথ? Gallery October 17, 2024 Bangla Digital Desk দশেরার সন্ধ্যায় এনসিপি নেতা তথা তিনবারের বিধায়ক বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে খুন করে আততায়ীরা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা মুম্বইতে। কিন্তু কে এই বাবা সিদ্দিকি? তিনি শুধু রাজনৈতিক নেতা নন। তাঁর আরও অনেক পরিচয় রয়েছে। বাবা সিদ্দিকি সলমন ঘনিষ্ঠ। গোটা বলিউড তাঁকে এক ডাকে চেনে। সলমন ও শাহরুখের সম্পর্ক জোড়া লাগিয়েছিলেন তিনি। তবে শুধু রাজনীতি বা বলিউড নয়, বাবা সিদ্দিকি রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীও। কোটি কোটি টাকার মালিক তিনি। নব্বইয়ের দশকে শুরু হয় বাবা সিদ্দিকি রাজনীতি ও ব্যবসায় পা রাখেন। সেই সময় বান্দ্রা পশ্চিমে যুব কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন তিনি। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে মুম্বইয়ের রাজনীতির মুখ হয়ে ওঠেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, রিয়েল এস্টেটের বাজার যত বাড়ে, বাবা সিদ্দিকির রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক উত্থানও তত গতি পায়। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি বান্দ্রা পশ্চিমে কংগ্রেসের তরুণ কর্পোরেটর হিসাবে আবির্ভূত হন বাবা সিদ্দিকি। পরণে থাকত জিনস আর টি-শার্ট। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সদর দফতর হয়ে উঠেছিল তাঁর ঘরবাড়ি। ১৯৯৮ সালে চালু হল বস্তি পুনঃউন্নয়ন নীতি। রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের কপাল খুলে গেল। এই পলিসির আওতায় বস্তিবাসীদের বিনামূল্যে বাড়ি দেয় সরকার। জমির একটা অংশ বাণিজ্যিক ও বিলাবহুল প্রকল্পে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয় ডেভেলপারদের। বান্দ্রা, খার এবং সান্তাক্রুজে তখন বাবা সিদ্দিকির রাজত্ব। তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে। তবে এই প্রকল্পের কাজ করেছিলেন এইচডিআইএল-এর প্রধান রাকেশ ওয়াধাওয়ান এবং রাজস্থানের রাজনীতিবিদ রফিক ম্যান্ডেলিয়া। দু’জনেই সিদ্দিকির অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন। ২০২৩ সালে রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনের সময় ম্যান্ডেলিয়ার ঘোষিত সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৬৬ কোটি টাকা। ১৯৯৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বান্দ্রা পশ্চিম থেকে ভোটে লড়েন বাবা সিদ্দিকি। বিপুল ভোটে জেতেন। হয়ে ওঠেন মুম্বইয়ের রাজনীতির পরিচিত মুখ। এই সময় থেকেই বিএমসি-এর বিল্ডিং প্রস্তাবনা বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বাজারের খবর অনুযায়ী, সিদ্দিকির অঙ্গুলিহেলন ছাড়া বান্দ্রা পশ্চিমে বিল্ডিং ইউজ সার্টিফিকেট মিলত না। ২০০৪ সালে নিজস্ব রিয়েল এস্টেট ফার্ম শুরু করেন সিদ্দিকি। Geers Developers Pvt Ltd। তাঁর প্রথম কাজ হল লিংকিং রোডের লিঙ্ক স্কোয়ার মল। এর মধ্যে বাবা সিদ্দিকির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ২০১৭ সালে তাঁর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। অর্থ পাচারের অভিযোগে তাঁর ৩৩টি হাই এন্ড অ্যাপার্টমেন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুই প্রমাণ করতে পারেনি ইডি। রাজনীতি ও ব্যবসার জটিল জগতে সাপ লুডো খেলেছেন বাবা সিদ্দিকি। কখনও তাঁর ঘুঁটি পড়েছে সাপের মুখে। কখনও মইতে চেপে তরতরিয়ে উঠেছেন উপরে। তবে মানতেই হবে, রিয়েল এস্টেটের জগতে সোনা ফলিয়েছেন তিনি। বর্তমানে সিদ্দিকি সাম্রাজ্যের আনুমানিক মূল্য ১৫ হাজার কোটি টাকা। দুবাই এবং লন্ডনেও তাঁর ব্যবসা রয়েছে। এই তথ্য দিয়েছেন বান্দ্রারই এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।