বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার ছেলে বলে কলকাতায় ব্যবসার জিনিস কিনতে গিয়ে অবহেলিত হতে হয়েছিল বাবলুকে। ২০২৪ সালে কালী পুজোর আগে সেই কলকাতাতেই বিক্রি হচ্ছে বাবলুর তৈরি প্রোডাক্ট। সাত বছর আগে ইলেকট্রিক্যাল জিনিসের ব্যবসা শুরু করেছিলেন বাঁকুড়ার বাবলু গড়াই। ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে শুরু হয়েছিল। প্রান্তিক বাঁকুড়ায় ইলেকট্রিক্যাল জিনিসপত্রের প্রোডাকশন খুব কমই ছিল। সে কারণে কলকাতা এবং আসানসোল থেকে কাঁচামাল কিনে আনতে হত বাবলুকে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে, পরিবারের আর্থিক অবস্থা সামাল দিতে ব্যবসা শুরু করা বাবলু, দৌড়াদৌড়ি করতেন আসানসোল থেকে কলকাতা।
তবে বাঁকুড়ার ছেলে বলে তাকে অবহেলিত হতে হয়েছিল কলকাতায়। শুনতে হয়েছিল, ‘বাঁকুড়ার ছেলেরা পারে না।’ মনে জেদ নিয়ে ফিরে আসেন বাবলু। মাত্র ৪০০০ টাকা দিয়ে পুরো দমে শুরু করেন ব্যবসা, বর্তমানে বাবলু প্রায় ৪০টি ইলেকট্রিক্যাল প্রোডাক্ট বিক্রি করে থাকেন। নিজে ম্যানুফ্যাকচারিং করেন বেশ কিছু প্রোডাক্ট। বাঁকুড়াতে মানুষের জন্য তৈরি করেছেন কর্মসংস্থান। যে কলকাতা তাকে একদিন বঞ্চিত করেছিল, সেই কলকাতাতে পুরো দামে বিক্রি হয় বাঁকুড়ার বাবলু গড়াইয়ের ইলেকট্রিক্যাল প্রোডাক্ট।
আরও পড়ুন: বাঁকুড়ায় বেড়াতে গেলে এই তিন জায়গা মিস করবেন না! অনেকেই জানেন না
কালীপুজোর আগে পুরোদমে বিক্রি হচ্ছে রকমারি আলো। বাঁকুড়ার ইউনিটে তৈরি হচ্ছে জল প্রদীপ এবং মোমবাতি চেইন। কাজ করছেন আট থেকে দশ জন। জল দিলেই জ্বলবে প্রদীপ। মোমবাতির মত দেখতে লাইট সাজানো রয়েছে একের পর এক, দীপাবলীর রাতে এবং কালী পুজোতে শোভা বাড়াবে আপনার বাড়ির। সবই হোল সেলে বিক্রি করে থাকেন বাবলু। এছাড়াও এক্সটেনশন কর্ড তৈরি এবং পাখা অ্যাসেম্বেল করেন বাঁকুড়ার এই ব্যবসায়ী। সারা বছরই থাকে প্রোডাক্ট তৈরি এবং প্রোডাক্ট বিক্রি করার ব্যস্ততা।
আরও পড়ুন: ব্লেডে মা কালী, ধানে মা কালী, পেন্সিলের শিষেও মা কালী! এই মাইক্রো আর্ট দেখলে চমকাবেন!
প্রান্তিক বাঁকুড়ার বুক থেকে সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা একটি ছেলে উঠে এসে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। সেই ব্যবসা আজ ছড়িয়েছে বাঁকুড়া থেকে কলকাতা। দীপাবলীর এবং কালী পুজোর আগে বাজারে যে আলোগুলি দেখতে পাবেন তার অধিকাংশই বাবলুর তৈরি। ভবিষ্যতে আরও ইউনিট বাড়ানোর কথা ভাবছেন বাঁকুড়ার এই ব্যবসায়ী।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী