তমলুক: জামিনের শর্ত হিসেবে ধৃতদের নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হয়ে সমাজসেবা মূলক কাজ করতে হবে, এমনই নির্দেশ তমলুক জেলা আদালতের বিচারকের। তমলুক জেলা আদালতের এই ব্যতিক্রমী শর্তে জামিনের আদেশ সাড়া ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ব্যতিক্রমী এই জামিনের শর্তে পাঁচজন বিচারাধীন ব্যক্তি জামিন পেলেন। জেলা আদালতের ব্যতিক্রমী শর্তে জামিন অনলাইন জুয়ার ঠেকে পাঁচজন ধৃতদের। বিচারকের রায়ে খুশি সরকারি আইনজীবী ও ধৃতদের আইনজীবীরাও।
গত ২৪ অক্টোবর তমলুক নিমতৌড়ি এলাকায় অনলাইনে জুয়া খেলার অভিযোগে পাঁচজন যুবককে আটক করে তমলুক থানার পুলিশ। থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর, তাদের নামে মামলা দায়ের করে তমলুক থানার পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া ওই পাঁচজনকে তমলুক সিজিএম কোর্টে তোলা হয়। সরকারি পক্ষের আইনজীবী এবং অভিযুক্তদের সওয়াল শোনার পর বিচারক অভিক কুমার চট্টোপাধ্যায় তিনটি শর্তে ধৃতদের জামিন দেন।
আরও পড়ুন: বাইরে বাজি ফাটছে, ঘরে-বাইরে পোষ্য-পথকুকুররা! কী করবেন? ওদের কষ্ট কমবে কীভাবে?
এই তিনটি শর্তের মধ্যে অন্যতম শর্ত হল তাদের নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের থেকে সমাজসেবামূলক কাজে যুক্ত থাকতে হবে টানা ২০ দিন। তমলুক রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমে কুড়ি দিন সেবামূলক কাজ করার শর্তে অনলাইন জুয়ার থেকে ধৃত পাঁচজনকে জামিন দিল তমলুক জেলা আদালত। তমলুক সিজিএম কোর্ট এই ব্যতিক্রমী নির্দেশ দিয়েছেন। অভিনব এই নির্দেশকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। প্রথমত, কোর্টের নির্দেশ ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত, সপ্তাহে একদিন তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরা দিতে হবে। তবে তৃতীয় শর্তটি একেবারে ব্যতিক্রমী।
কুড়ি দিন সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তমলুক রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন সেবাশ্রমে সেবা মূলক কাজ করতে হবে। ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশের কপি রামকৃষ্ণ মিশনে পাঠানো হয়েছে। সেখানে প্রত্যেকদিন পাঁচ জনের হাজিরা খাতা রেখে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে, তারপরে ছুটির সময় রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষের কাছ থেকে সই করে হাজিরা খাতাটা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ একটি সোর্স মারফত জানতে পেরে ওই জুয়ার ঠেকে হানা দিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল। আদালতে মামলা উঠলে বিচারক তাদের এই ব্যতিক্রমী নির্দেশে জামিন মঞ্জুর করেন। সেই মতো অভিযুক্তরা প্রতিদিন তমলুকের রামকৃষ্ণ মঠ ও সেবাশ্রমে এসে সেবামূলক কাজে যুক্ত হয়েছেন।
— সৈকত শী