বাঁকুড়া : বাঁকুড়ার প্রথম মহিলা ড্রোন পাইলট, গৃহবধূ ময়না সিংহ মহাপাত্র ড্রোন চালিয়ে বাঁচাচ্ছেন কৃষকদের জীবন। হ্যাঁ বাঁকুড়া জেলায় চাষের জমিতে ওষুধ কিংবা জল স্প্রে করতে গিয়ে সাপের কামড়ে প্রতিবছর প্রাণ হারান এক বড় সংখ্যক কৃষকরা। চাষ জমিতে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা এতটাই ঘনঘন হয় যে, এই ঘটনা ঘটলে যেন সাধারণ মানুষ আর অবাক হননা। তবে গরীব কৃষকরা পায়ে হাতে চট বেঁধে মাঠে নামেন চাষের কাজে। প্রতিনিয়ত মৃত্যু ভয় তাদের মাথার ওপর কালো মেঘের মত দানা বেঁধে থাকে।
তবে এই মৃত্যু ভয় এবার গৃহবধূ ড্রোন পাইলটের ড্রোনের প্রপেলারের হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে দক্ষিণ বাঁকুড়া এলাকায়। নিজে “এগ্রিকালচার” ড্রোন চালানো শিখে সেই ড্রোন উড়িয়ে জমিতে ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছেন ময়না সিংহ মহাপাত্র। বেঁচে যাচ্ছে সময়, পরিশ্রম। বেঁচে যাচ্ছে কৃষকদের প্রাণ। শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না কৃষকরা। জলের অপচয় কম হচ্ছে। ওষুধ ফসলের প্রতিটি অংশে পৌঁছে যাচ্ছে, ফলন হচ্ছে ভাল। দুর্দান্ত এক বিপ্লব একা হাতে প্রান্তিক বাঁকুড়ায় নিয়ে এলেন এই গৃহবধূ। ময়না সিংহ মহাপাত্র অবাক করেছেন সকলকে।
আরও পড়ুন : বাঁকুড়ায় দাবার যুদ্ধে ৮ থেকে ৮০! পুরস্কার মূল্য জানলে অবাক হবেন
একজন কৃষক সারাদিন কাজ করলে বিঘা চার জমিতে ওষুধ ছড়াতে পারবেন। তবে ময়না সিংহ মহাপাত্রের এই ড্রোন মাত্র দুই থেকে আড়াই মিনিটে এক বিঘা জমিতে ছড়িয়ে দিচ্ছে ওষুধ। তরল সার এবং ওষুধ ছড়ানো যায় এই ড্রোনের মাধ্যমে। ড্রোনের নিচে লাগানো রয়েছে একটি ছোট্ট ট্যাংকি। তাতেই ভরা হচ্ছে তরল ওষুধ। প্রতি বিঘায় ১০০ টাকা করে পারিশ্রমিকে এই কাজ করছেন ময়না সিংহ মহাপাত্র। কৃষকরাও যথেষ্ট আগ্রহী হয়েছেন, তবে একটি মাত্র ড্রোন থাকায় কাজ করে শেষ করতে পারছেন না ময়না।
আরও পড়ুন : মুকুটমণিপুর এত সুন্দর জায়গা…! তাও কেন কমছে পর্যটক? কারণ জানলে অবাক হবেন!
ময়না সিংহ মহাপাত্র নিজে কৃষক পরিবারের মেয়ে। সেই কারণেই কৃষকদের সব সমস্যার সঙ্গে তাঁর ওঠা বসা। সেই কারণেই এমন একটি মৌলিক চিন্তা ধারা থেকে কৃষি ড্রোন চালানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। উত্তরপ্রদেশে ড্রোন চালানো শিখে বাঁকুড়ার বুকে ১৮ কেজির একটি সুবিশাল ড্রোন ক্যালিব্রেট থেকে শুরু করে পরিচর্যা করে লাল মাটি উড়িয়ে বাঁকুড়ার কৃষিকে নতুন দিগন্ত পৌঁছে দিতে চাইছেন ময়না সিংহ মহাপাত্র।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী