উত্তর ২৪ পরগনা: অবশেষে পুলিশের জালে জেলা জুড়ে চলা বাচ্চা চুরির গুজবের মূল মাস্টারমাইন্ড। কীভাবে শুরু হয়েছিল এই বাচ্চা চুরির গুজব ছড়ানো! কি কারণে এই গুজব ছড়ালো তার পিছনে থাকা বড় কারণ উদঘাটন করল বারাসাত জেলা পুলিশ। এদিন বারাসাত থানায় রীতিমত সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘটনার রহস্য প্রকাশ্যে আনেন বারাসাত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়ার।
জানা যায়, বারাসাত কাজীপাড়ায় নিখোঁজ থাকা শিশুর দেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনার তদন্তে নেমে, শিশুটির সম্পর্কে জ্যাঠা আঞ্জীব নবিকে গ্রেফতার করে বারাসাত থানার পুলিশ। তাকে পুলিশি জিজ্ঞাসায় উঠে আসে এই বাচ্চা চুরির গুজবের একেবারে গোড়ার কথা। পুলিশের তরফ থেকে জানা যায়ব, কাজীপাড়ার ওই শিশুটিকে প্রতিহিংসার বশে খুন করেন এই অভিযুক্ত আঞ্জীব নবি। তবে পুলিশি তদন্তের মোড় ঘোরাতে গুজব ছড়ান বাচ্চা চুরি করে শরীর থেকে অঙ্গ বের করে নেওয়ার বীভৎস কাহিনী শুনিয়ে।
কখনও ছেলেধরা, কখনও কিডনি পাচার এ ধরনের নানা রকম গুজব ছড়ান খুনের ঘটনা আড়াল করতে। যেহেতু তিনি স্থানীয় মসজিদে আজানের কাজ করতেন, তাই এলাকার মানুষজনও তার কথা সহজেই বিশ্বাস করে নেন। যা একান্তই আঞ্জীব নবির মস্তিষ্ক প্রসূত বলে দাবি বারাসাত পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়ার। সেই প্রত্যেককে জানিয়েছে বাইরের লোক দেখলেই মারধর করতে হবে। তাতেই মানুষজন বাইরের লোককে দেখলে আতঙ্কে উত্তপ্ত হয়ে মারধর করতে শুরু করেন।
এরপর থেকেই জেলার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে এই আতঙ্ক। মহিলা সহ বেশ কয়েকজন কে এই সন্দেহের বশে গণপিটুনির শিকার হতে হয়। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সচেতনতা মূলক প্রচারের পাশাপাশি গ্রেফতার করতে হয় প্রায় ৪৫ জনকে। তবে অবশেষে কাজীপাড়ায় শিশু খুনের কিনারার মধ্যে দিয়েই জেলা জুড়ে চলা এই গুজবের আসল মাস্টারমাইন্ডকে ধরে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, এদিন দেগঙ্গা এলাকায় এক মহিলাকে ছেলে ধরা সন্দেহে গ্রামবাসীরা আটক করলেও কোনরকম আইন হাতে তুলে নেয়নি। অবশেষে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এই বিষয়টিকে পুলিশি সচেতনতার প্রভাব বলেই মনে করছে জেলা পুলিশের কর্তারা। তবে আরও বেশ কয়েকদিন জেলার বিভিন্ন স্কুল সহ অন্যান্য থানা গুলিতেও এই গুজব আটকাতে সচেতনতা প্রচার চালানো হবে বলেই জেলা পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
Rudra Narayan Roy