মেক্সিকো সিটি: মাটির নীচে কত সভ্যতার ধ্বংসস্তূপ যে লুকিয়ে রয়েছে- তার খবর কে রাখে! খননকালে অনেক সময়ই রহস্যময় জিনিস উঠে আসে। তখন চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয়। মেক্সিকোর ঘটনা অনেকটা সেরকমই।
নর্দমার জন্য খনন কাজ চলছিল। বড় বড় মেশিনে মাটি খুঁড়তে ব্যস্ত শ্রমিকরা। হঠাৎই মাটির ভিতর থেকে ঠকঠক শব্দ। শ্রমিকরা ভেবেছিলেন, কোনও পাথর বা কাঠের জিনিস হবে হয়তো। কিন্তু যা বেরিয়ে এল তাতে হতবাক হয়ে গেলেন সকলে।
লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম মেক্সিকোর নয়ারি রাজ্যে পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য নর্দমা খোঁড়ার কাজ চলছে। প্রায় ৪ কিলোমিটার খোঁড়ার পর পোজো ডি ইবারায় শুরু হয় খননকাজ। তখনই আশ্চর্যজনক ঘটনা সামনে আসে।
মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে আসে কঙ্কাল। শ্রমিকরা ভেবেছিলেন, কোনও প্রাণীর হবে হয়তো। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই কঙ্কালের স্তূপ বেরিয়ে আসে। ভয় পেয়ে যান শ্রমিকরা। তার ওপরে কঙ্কালগুলো মানুষের। কী হয়েছিল?
শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। ঘটনাস্থলে আসে প্রত্নতাত্বিকরা। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন, কঙ্কালগুলো মানুষের। উরুর হাড়, পা এবং বুকের হাড়ের পাশাপাশি ৭টি খুলি উদ্ধার হয়েছে।
![(Photo_Claudia Servín Rosas, INAH)](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/03/Inah-2024-03-03a68eaf6f5976413c39f7664b942fcc.jpg)
শহরের মাঝখানে কীভাবে এত কঙ্কাল এল? বিস্মিত প্রত্নতাত্ত্বিকরাও। কারণ এই জায়গার কোনও ঐতিহাসিক প্রমাণ এর আগে মেলেনি। হাড়ের পাশাপাশি কিছু সেরামিকের পাত্র এবং ভাস্কর্যও পাওয়া গিয়েছে।
প্রায় ১৫০০ বছরের পুরনো কঙ্কাল: মেক্সিকোর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজি ও হিস্টরির গবেষকরা অবাক। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন, কঙ্কালগুলো প্রায় ১৫০০ বছরের প্রাচীন। মাথার খুলিগুলো বিভিন্ন বয়সের পুরুষের। তাঁদের কবর দেওয়া হয়েছিল এবং কিছু হাড়গোড় স্তূপাকারে রাখা হয়। মনে করা হচ্ছে, এটা সেই সময়ের কোনও রীতি।
৫০০ খ্রীস্টাব্দ থেকে ৮৫০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত এই ধরনের আচারের প্রমাণ পাওয়া যায়। নতুন বসতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে মৃতদের সমাধিস্থ করা হয়। যাই হোক, বর্তমানে এই ধরনের রীতি রেওয়াজের কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায় না মেক্সিকোয়।