এ বারও বাজেট পেশের পর চর্চিত নির্মলা সীতারমণের শাড়ি

Budget 2024 : Finance Minister Nirmala Sitharaman in Tussar Silk Saree: ঘন নীল জমিনে নক্সীকাঁথা! কোন শাড়ি পরে বাজেট পেশ করলেন নির্মলা সীতারমণ? জানুন কাপড়ের উপকরণের দামও

নয়াদিল্লি : প্রতি বছরের মতো এ বারও বাজেট পেশের পর চর্চিত নির্মলা সীতারমণের শাড়ি। বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পরনে ছিল নীল রঙের তসর। তার উপর ঘিয়ে রঙা সুতোয় করা কাঁথাকাজ। শাড়ির সঙ্গে মানানসই ঘিয়ে রঙা ব্লাউজ। সেখানে বসানো নীল জরিদার পাড়। নির্মলার শাড়ির সিল্ক কোন ধরনের তা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চলছিল চর্চা ও আলোচনা। তিনি নিজে কিছু না জানালেও অধিকাংশ শাড়ি বিশেষজ্ঞের মত, ভাগলপুরী তসর সিল্কের উপরই করা হয়েছিল নকসীকাঁথার কাজ।

প্রসঙ্গত বিহারের ভাগলপুরকে বলা হয় দেশের সিল্কনগরী। এখানে তৈরি করা হয় একাধিক রকমের রেশমী কাপড়। সবথেকে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় তসর সিল্ক। বিদেশেও প্রচুর রফতানি হয় ভাগলপুরী সিল্ক। বয়নশিল্পী আলোক কুমার জানিয়েছেন ভাগলপুরের তসর খুবই বিখ্যাত। এই শাড়ির অনেক বিশেষত্ব রয়েছে। দেখতে নক্সাদার হলেও হাল্কা হয় ওজনের দিক থেকে। যত পুরনো হয়, তত উজ্জ্বলতা বাড়ে ভাগলপুরী সিল্কের। বয়নশিল্পীর মতে একটি ভাগলপুরী তসর শাড়ি তৈরিতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগে।

উজ্জ্বল প্রাকৃতিক বুনোটের জন্য তসর সিল্ক প্রসিদ্ধ। রেশমকীটকে গুটি-সহ গরম করা হয় তন্তু বার করার জন্য। যদি লার্ভা বার হওয়ার পর কীটের গুটি সিদ্ধ করা হয়, তাহলে তাকে ‘অহিংসা রেশম’ বলা হয়। বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম রেশম উৎপন্নকারী দেশ ভারত৷ বিহারের ভাগলপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদহ তসর উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে৷ ইদানীং তসর চাষে বাকি রাজ্যকে টেক্কা দিচ্ছে ঝাড়খণ্ড৷ এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসে তসর শিল্প আলোচিত হয় দিল্লির লাল কেল্লায়৷ বলিউডের বহু সেলেব্রিটিদের মধ্যেও এই জনপ্রিয়তা তুঙ্গে৷ সাধারণ মানের ভাগলপুরী তসরের দাম ঘোরাফেরা করে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত৷ তার পর কাজের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় মূল্য৷

আরও পড়ুন : টগরফুল ধরছে না বাড়ির গাছে? দিনের এই সময় দিতে হবে এই বিশেষ জিনিস! সাদা কুঁড়ি ও ফুলে ঢেকে যাবে গাছ

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের হ্যান্ডলুম শাড়িপ্রীতির কথা বহুচর্চিত৷ বছরভর তো বটেই৷ বিশেষ করে বাজেট পেশ করার দিন তিনি সাধারণত বেছে নেন উজ্জ্বল বর্ণের বিশেষ কোনও হ্যান্ডলুম শাড়ি৷ দেশের কোনও প্রান্তের বয়নশিল্পীদের হাতে বোনা শাড়ি তিনি পরেন বাজেট পেশের দিন৷ গত বছর নির্মলা বেছে নিয়েছিলেন উজ্জ্বল লাল ও কালোর যুগলবন্দিতে হ্যান্ডলুম শাড়ি৷ লাল জমিনের সঙ্গে চওড়া কালো টেম্পল পাড়, অর্থাৎ যে ধরনের পাড়ে থাকে মন্দিরের চূড়ার মোটিফ৷ শাড়ির পাড়ে ছিল জরির ছোয়াঁও৷ এছাড়াও শাড়িতে ছড়িয়ে ছিল সূক্ষ্ম কসুটি কাজ৷

২০১৯ সালে তাঁর জীবনে প্রথম বাজেট পেশ করার দিন তিনি পরেছিলেন গোলাপি রঙের শাড়িতে সরু জরির পাড় মঙ্গলগিরি৷ অন্ধ্রপ্রদেশে বড় হয়ে ওঠা নির্মলা সেদিন বেছে নিয়েছিলেন নিজের রাজ্যের হ্যান্ডলুমই৷

 

তার পরের বছর ২০২০ সালে অর্থমন্ত্রীর পরনে ছিল উজ্জ্বল হলুদ রঙের সিল্ক৷ সঙ্গে হাল্কা আকাশি রঙা সরু পাড়৷ ২০২১-এ তিনি পরেছিলেন লাল-সাদা পচমপল্লী শাড়ি৷ ঐতিহ্যবাহী সেই দক্ষিণী শাড়িতে ছিল ইক্কত মোটিফ৷ এ বছর নির্মলার ঘন নীল ভাগলপুরী তসর সিল্কের জমিন জুড়ে বিছিয়ে রইল বাংলার কাঁথাকাজ৷