পাঁচমিশালি Captain Anshuman Singh: ‘আগের দিন ভবিষ্যতের কথা হচ্ছিল, পরের দিন খবর এল শহিদ হয়েছেন’, ক্যাপ্টেনের স্ত্রীর কথা শুনলে বুক কেঁপে উঠবে Gallery July 9, 2024 Bangla Digital Desk ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মশগুল ছিলেন দুই তরুণ-তরুণী। জীবন, সন্তান, অবসর সব কিছু নিয়ে কথা হয়েছিল। পরদিন সকালে খবর এল স্বামী শহিদ হয়েছেন। কীর্তি চক্র সম্মান হাতে এমনটাই জানালেন শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের পত্নী স্মৃতি সিং। তিনি বললেন, মাত্র ৭-৮ ঘণ্টার মধ্যে যে এমন অঘটন ঘটে যেতে পারে বিশ্বাস করতে পারিনি। মানতে পারছিলাম না স্বামী আর পৃথিবীতে নেই। পঞ্জাব রেজিমেন্টের ২৬ ব্যাটেলিয়ানের ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং ছিলেন আর্মি মেডিক্যাল অফিসার। মরণোত্তর কীর্তি চক্র স্মমানে ভূষিত করা হয়েছে তাঁকে। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রয়াত অংশুমানের স্ত্রী স্মৃতি। পরনে সাদা শাড়ি, থমথমে মুখে। তাঁর হাতেই দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্ব পুরস্কার কীর্তি চক্র তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সিয়াচেনে আগুনের করাল গ্রাস থেকে সহযোদ্ধাদের বাঁচাতে গিয়ে শহিদ হন ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং। স্মৃতি এবং শহিদ ক্যাপ্টেনের মায়ের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে কীর্তি চক্র সম্মান গ্রহণের একটি ছোট ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্মৃতি হাতজোড় করে প্রয়াত স্বামীর আত্মত্যাগের কথা বলছেন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট এক্সের একটি পোস্টে রাষ্ট্রপতি মুর্মুকে বলতে শোনা যাচ্ছে, নিজের কথা না ভেবে আগুন থেকে সহকর্মীদের বাঁচানোর জন্য সাহসিকতা ও সংকল্প দেখিয়েছেন ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং। সিয়াচেনে ২০২৩-এর ১৯ জুলাই ভোর ৩টে নাগাদ শর্ট সার্কিট থেকে সেনাবাহিনীর গোলাবারুদের ডাম্পে আগুন লেগে যায়। ফাইবার গ্লাসের ঘরে আটকে পড়েন বেশ কয়েকজন সেনা। তাঁদের বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দেন ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং। চার-পাঁচজনকে উদ্ধার করে আনেন। কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাশের মেডিক্যাল ক্যাম্পে। ভিতরে রাখা ওষুধ বের করে আনতে গিয়ে গুরুতর দগ্ধ হন ক্যাপ্টেন অংশুমান। তাঁকে বাঁচানো যায়নি। কীর্তি চক্র পুরস্কার হাতে পুরনো দিনের কথা বলে চলেন স্মৃতি, “ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম দিন আমাদের দেখা হয়েছিল। আর প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। একমাস পর আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পান অংশুমান। বরাবরই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তারপর দীর্ঘ ৮ বছর লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপে কাটিয়েছি আমরা। তারপর ঠিক করি, এবার আমাদের বিয়ে করা উচিত”। স্মৃতি বলেন, “বিয়ের দুই মাসের মধ্যেই সিয়াচেনে পোস্টিং হয় অংশুমানের। ১৯ জুলাই সকালে তাঁর শহিদ হওয়ার খবর পাই। আমি এখনও এই দুঃখ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। মনে মনে ভাবছি এটা সত্যি নয়। কিন্তু এখন আমার হাতে কীর্তি চক্র সম্মান। আর এটাই সত্যি। তিনি নায়ক। আমরা আমাদের জীবনকে কিছুটা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারি। তিনি তাঁর জীবন অন্য তিনটি পরিবারকে বাঁচানোর জন্য উৎসর্গ করেছেন”।