শিলিগুড়ি: জম্মু-কাশ্মীরের ডোডায় সেনা-জঙ্গি লড়াইয়ে শহিদ হয়েছেন দার্জিলিংয়ের লেবংয়ের বাসিন্দা ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ থাপা। সীমান্ত রক্ষা করতে গিয়ে মাত্র ২৭ বছর বয়সে প্রাণ দিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের ডোডা থেকে চার ঘণ্টা দূরত্বে থাকা এক পাহাড়ি জঙ্গলে একটি অভিযানের সময় হঠাৎ করেই জঙ্গিরা হামলা চালায়। জঙ্গিদের হামলার পালটা জবাব দেয় সেনা জওয়ানরাও। দু’পক্ষের লড়াইয়ে ব্রিজেশ-সহ আরও চার সেনা জওয়ানের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ব্রিজেশ থাপার শহিদ হওয়ার খবর ইতিমধ্যে সেনা আধিকারিকদের তরফে তাঁর পরিবারকে জানানো হয়েছে।
খবর শুনে শোকে আছন্ন পরিবারের সদস্যরা। ব্রিজেশের কথা বলতে গিয়ে ক্যামেরার সামনেই কেঁদে ভাসান কাকা যোগেশ থাপা। তাঁর কথায়, “গতকাল রাতে ডোডায় নিহত হয়েছে আমার ভাইপো। আমরা তার মরদেহ আসার অপেক্ষা করছি। তার পর আমরা দার্জিলিং যাব। ব্রিজেশের বাবা-মা দার্জিলিংয়ে থাকেন। ওর বাবা সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল। সেনা এলাকাতেই ব্রিজেশের জন্ম আর বেড়ে ওঠা। সবে ৫ বছর আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছিল…। তার মধ্যেই সব শেষ। আমরা আশা করছি আগামিকালের মধ্যে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে… এটা বলা সহজ যে তিনি দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, কিন্তু পরিবার হিসেবে আমরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি তা কখনও পূরণ হতে পারে না। আমরা জানি না সরকার কবে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। প্রতিদিন প্রাণ যাচ্ছে আমাদের সেনাদের…”
#WATCH | Siliguri, West Bengal: Yogesh Thapa, uncle of Captain Brijesh Thapa, who lost his life in an encounter in J&K’s Doda, remembers his nephew.
He says, “… He was killed in action last night in Doda. We are waiting for his body to arrive, after which we will go to… pic.twitter.com/AWqAwd6YA5
— ANI (@ANI) July 16, 2024
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ব্রিজেশ ডিফেন্স সার্ভিসের শর্ট সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় পাশ করেন ও ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তারপর ১০ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের মোতায়েন ছিলেন। এরপর এক্সট্রা রেজিমেন্টাল ডিউটির জন্য ভারতীয় সেনার বিশেষ বিভাগ ১৪৫ আর্মি এয়ার ডিফেন্সের অধীন জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা সেনা ছাউনিতে বদলি হন। সেখানে ব্রিজেশ থাপা এ-কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন। নিজের ট্রুপ নিয়ে ডোডা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা দূরত্বে একটি অভিযানে যাওয়ার সময় আচমকা তাঁদের উপর হামলা হয়। আর সেই হামলাতেই প্রাণ হারান ব্রিজেশ।
আরও পড়ুন- খুব খারাপ লাগছে…’ কাশ্মীর সীমান্তে শহিদ বাংলার তরুণকে নিয়ে কী লিখলেন মমতা?
আগামী ১৭ জুলাই ব্রিজেশের দেহ বিশেষ বিমানে শিলিগুড়িতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হবে। এরপর তাঁকে বাগডোগরা সেনা ছাউনিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা জানানো হবে। সেখান থেকে তাঁর দেহ সড়কপথে লেবং যাবে। ব্রিজেশের বাবা কর্নেল ভুবনেশ থাপা বলেন, ‘‘ছোট থেকেই ব্রিজেশের সেনার প্রতি খুব টান ছিল। নিজেকে সেভাবেই তৈরি করেছিল। কষ্ট খানিকটা হচ্ছে, কিন্তু আক্ষেপ নেই । আমার সন্তান দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ হয়েছে।”