কলকাতা: আর কিছুদিনের মধ্যেই দরজায় কড়া নাড়বে শীত বুড়ো। শীতে ঠান্ডার প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অনেকেই চ্যবনপ্রাশ খান। বাজারে একাধিক ব্র্যান্ডেড কোম্পানির চ্যবনপ্রাশ পাওয়া যায়। পাশাপাশি, অনেক আয়ুর্বেদিক চ্যবনপ্রাশও মেলে। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে দামি চ্যবনপ্রাশ কোনটা জানেন? এই চ্যবনপ্রাশ তৈরি হয় ঝাড়খণ্ডের পলামৌয়ে। ১০ গ্রামের দাম জানলে যে কেউ অবাক হয়ে যাবেন।
পলামৌয়ের বাসিন্দা আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ শিব কুমার পাণ্ডে আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে এখনও পর্যন্ত কয়েকশো ধরনের চ্যবনপ্রাশ তৈরি করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হল কেশর চ্যবনপ্রাশ। তাঁর দাবি, এই চ্যবনপ্রাশ বিশ্বের সবচেয়ে দামি। কারণ বেজায় জটিল পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়। আসলে স্বাস্থ্যবর্ধক চ্যবনপ্রাশ এটি। যা শরীরে রক্ত সঞ্চালনকে উন্নত করে।
শিব কুমার পাণ্ডে জানান, বহু বছর ধরে তিনি এই চ্যবনপ্রাশ তৈরি করছেন। চ্যবনপ্রাশ ঋষি চ্যবন উদ্ভাবন করেন। তিনি শত শত প্রকার চ্যবনপ্রাশ উদ্ভাবন করেন, যার মধ্যে কেশর চ্যবনপ্রাশ অন্যতম। এই চ্যবনপ্রাশে থাকে কিশমিশ, লবঙ্গ এবং জাফরান। প্রথমত, জাফরানের নির্যাস প্রস্তুত করা হয়। তারপরে কিশমিশের নির্যাস এবং লবঙ্গ মিশিয়ে এটি তৈরি করতে ২ মাস সময় লাগে। ১ কেজি জাফরান চ্যবনপ্রাশ তৈরি করার জন্য ৭৫০ গ্রাম জাফরান, ১৫০ গ্রাম লবঙ্গের নির্যাস এবং ১০০ গ্রাম কিশমিশের নির্যাস ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জাফরান উষ্ণ প্রকৃতির যা দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে যা হৃদরোগ, মস্তিষ্কের রোগ, সায়াটিকা, আর্থ্রাইটিসের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। আর লবঙ্গ শ্বাসতন্ত্রের জন্য দারুণ উপকারী। এছাড়া কিশমিশের মধ্যে রয়েছে রক্ত বৃদ্ধির ক্ষমতা যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
শিব কুমার বলেছেন, রাতের বেলায় দুধের সঙ্গে কেশর চ্যবনপ্রাশ মিশিয়ে খেতে হবে। সকালে জলের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন রাতের খাবার খাওয়ার পরে ঘুমানোর আগে দুধের সঙ্গে ২ গ্রাম জাফরান চ্যবনপ্রাশ মিশিয়ে খেলে অনেক রোগ সেরে যায়।
তিনি আরও বলেন, আগের সময়ের তুলনায় আজকের দিনে মাত্র ২ শতাংশ জাফরান উৎপাদিত হয়, ফলে এই চ্যবনপ্রাশের দাম অনেকটাই বেশি হয়। এক কেজি জাফরান চ্যবনপ্রাশের দাম ৫ লক্ষ টাকা। এর ১০ গ্রামের বাক্সের দাম ৫০০০ টাকা। এই বাক্সটি মাত্র পাঁচ দিনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।