প্রতীকী ছবি।

CPIM: আসন সমঝোতা নিয়ে কী ভাবছে সিপিএম? কোন আসনে প্রার্থী দেবে কে? বিরাট চমক আলিমুদ্দিনের আলোচনায়

কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ৪২ লোকসভা কেন্দ্রেই জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচার। কয়েকটি আসন ছাড়া বিজেপির তরফেও প্রায় সব কটি আসনেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলকে টক্কর দিতে তারাও শুরু করে দিয়েছে প্রচার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের প্রার্থী তালিকায় সম্পূর্ণ হয়নি।

শুক্রবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার জন্য প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত মাত্র দুটি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে বামেরা। এ দিন বামফ্রন্টের তরফে দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক চলে। কিন্তু সেই বৈঠকেও জট কাটেনি। তাই আরও দু’দিন সময় নেওয়া হল। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়ে দিয়েছেন রবিবারের মধ্যেই পূর্ণ তালিকা প্রকাশিত করতে চাইছেন তাঁরা। তবে কোনওভাবেই তাড়াহুড়ো না করার রণকৌশল নেওয়া হয়েছে বলেই সূত্রের খবর।

আরও পড়ুনঃ একটি পাতা বা ফুলই যথেষ্ট! ঝোপে জন্মানো এই গাছ পাইলসের মহাশত্রু, জেনে নিয়ে আজই খান

কেন এতটা সময় নিচ্ছে বামেরা তা নিয়ে একদিকে যেমন রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ঠিক তেমনই কটাক্ষ শুনতে হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকেও। যদিও এরপরেও ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এক সাংবাদিক বৈঠকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “আজ লিস্ট ঘোষণা করার কথা ছিল, কিন্তু পারছি না৷ সিট অ্যাডজাস্টমেন্ট ইত্যাদি নিয়ে সব জায়গায় এখনও পর্যন্ত জট খোলা যায়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কংগ্রেস আইএসএফ-সহ বিজেপি তৃণমূল বিরোধী সব শক্তিকে এক জায়গায় করতে। এই সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কোনও তাড়াহুড়ো  করছি না, সময় আছে। ফেজ ওয়াইজ নির্বাচন হচ্ছে। হামরো পার্টি ঘোষণা করেছে তাঁরা তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তাঁরা প্রার্থী ঠিক করছে। হামরো পার্টির ভূমিকা পজেটিভ। সবার সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তাই বলে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইতে অংশগ্রহন করা হবে না।

বামফ্রন্টের তরফে কোচবিহার আলিপুরদুয়ারে প্রার্থী ঘোষণা করেছি। তার মধ্যে আবার কেউ প্রার্থী দিয়ে থাকলে আবেদন করব যেন একটাই প্রার্থী থাকে। আমরা বামফ্রন্টে ঠিক করেছি রবিবারের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিকে যেতে পারব। শুধু বামফ্রন্ট হলে ৪২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়াই যেত। কিন্তু বিজেপি তৃণমূল বিরোধী সব শক্তি এক জায়গায় করাই আমাদের উদ্দেশ্য। তার মধ্যে যেমন রাজনৈতিক দল রয়েছে, তেমনই সামাজিক সংগঠনগুলো রয়েছে।”

আরও পড়ুনঃ ঠিক ক’টার মধ্যে ‘ডিনার’ শরীরের জন্য ‘পারফেক্ট’? দেরি করে খেলে কী কী ক্ষতি? বিশেষজ্ঞের হাড়হিম সতর্কতা

রবিবারে পূর্নাঙ্গ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও সেটা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বামেদের অন্দরেও। সূত্রের খবর, সিপিএম চেষ্টা করছে ত্রিমুখী লড়াইতে তাদের একজন প্রার্থী দিতে। কিন্তু বেশকিছু আসনে যে রকমের জট রয়েছে তা খোলা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

পুরুলিয়া আসনে প্রার্থী দিতে ফরওয়ার্ড ব্লক এবং কংগ্রেস দু’পক্ষই অনড়। আলিপুরদুয়ারে আরএসপির সঙ্গে কংগ্রেসের একইরকম সমস্যা রয়েছে। যদিও এই আসনে ইতিমধ্যেই বামেদের তরফে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আবার বসিরহাটে সিপিএম সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক ও আন্দোলনের মুখ নিরাপদ সর্দারকে প্রার্থী করতে চায়। সেখানে আবার বামফ্রন্টের তরফে সিপিআই লড়াই করে থাকে। তাই সেই আসন ছাড়তে নিমরাজি সিপিআই। আইএসএফ বেশকিছু আসনের সাথে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ এবং শ্রীরামপুরে। সেখানে আবার মুর্শিদাবাদে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং শ্রীরামপুরে দিপ্সীতা ধরকে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে সিপিএম।

সংখ্যার বিচারেও আইএসএফের সঙ্গে সমস্যা রয়েছে। দলের তরফে আটটি আসন চাওয়া হলেও বামেরা তিনটি আসন ছাড়তে চায়। এখন রবিবারের মধ্যে সব জট কীভাবে খোলে সেদিকেই তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। যদিও সিপিএম চাইছে আরো ধৈর্য ধরতে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মতে বাংলায় একটা প্রবাদ রয়েছে ‘ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না’, আপাতত সেই নীতিতেই আসন সমঝোতার পথে হাঁটছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।