কলকাতাঃ সৃজন ভট্টাচার্য ও সায়নী ঘোষ সাম্প্রতিক রাজনীতির ময়দানে দু’জনেই পরিচিত মুখ। বিপরীত মেরুর দুই নেতৃত্বের নাম, ছবি বহু কর্মসূচিতে বহুবার ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু কোনও দিন সেই প্রচারের জায়গা এতটা কম হয়নি যে একজনের ছবির উপরে আরেকজনের মুখ লাগাতে হবে। কোনওদিন যেটা হয়নি এ বার সেটাই হল।
তরুণ দুই নেতা ঘটনাচক্রে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএমের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সৃজন ভট্টাচার্য আর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সায়নী ঘোষ। নাম ঘোষণার পর থেকে চাপানউতোর চলছিলই। সরাসরি না হলেও একে অপরকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণও চালিয়েছেন। এতদূর পর্যন্ত সব স্বাভাবিকই ছিল। তাল কাটতে শুরু করে ভোটের দু’দিন আগে নাকতলা এলাকায় সৃজনের পোস্টার ছেঁড়ার ঘটনায়। সিপিএমের অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতকারী এই কাজ করেছে। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু ভোটের দিন যা ঘটল, তা দেখে উপস্থিত সকলেই অবাক।
আরও পড়ুনঃ কাঞ্চনজঙ্ঘার টানে ইচ্ছে হলেই আর সান্দাকফু যেতে পারবেন না কেউ! পর্যটকদের জন্য বিরাট নির্দেশিকা
সিপিএমের অভিযোগ, বাইক বাহিনী এসে সিপিএমের অস্থায়ী বুথগুলো ভাঙচুর করে। উপস্থিত দলীয় কর্মীদের আক্রমণ করে। এবং সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যের ছবির উপর সায়নী ঘোষের ছবি দেওয়া স্টিকার সাটিয়ে দেওয়া হয়।
নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই একটার পর একটা ঘটনা ঘটে চলেছে এই লোকসভা কেন্দ্রে। সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গাতে এজেন্ট বসতে না দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে ছুটে গিয়েছেন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। এজেন্ট বসাতে গিয়ে কয়েকটি জায়গাতে বিক্ষোভের সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। শুনতে হয় গো ব্যাক স্লোগান। বারুইপুর একটি জায়গাতে এজেন্টকে জোর করে তুলে দেওয়ার খবর য়ে সেখানে ছুটে যান তিনি। এখানেও বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হয় তাঁকে। কুইক রেসপন্স টিম না থাকায় পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরেই চলে গিয়েছিল বলে সিপিএমের অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে সরানো সম্ভব হয়। এর পরেই খবর আসতে থাকে যাদবপুরের বেশ কিছু জায়গাতে অস্থায়ী বুথ ভেঙে দিচ্ছে বাইক বাহিনী। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের গিয়ে দেখা যায় চেয়ার টেবিল ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং আক্রমণ করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে বাদ যায়নি মহিলারাও এক্ষেত্রেও অভিযোগের তীর রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে কমিশনের নজরদারির অভিযোগও করে সিপিএম।
সৃজন জানিয়েছেন, “আসলে ওরা ভয় পেয়েছে। ওদের হাঁটু ঠকঠক করে কাঁপছে। তাই ভোটের দু’দিন আগে থেকে সন্ত্রাস করছে। অসুস্থ, বয়স্ক এমনকি মহিলাদেরও ছাড়েনি তৃণমূলের দুস্কৃতীরা। ১০১, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় শুধুমাত্র বেছে বেছে সিপিএমের অস্থায়ী বুথ ভাঙা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দল আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। মানুষ ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী যেভাবে থাকার কথা ছিল সেভাবে দেখা যায়নি।”
UJJAL ROY