মুম্বই: বদলাপুর যৌন হেনস্থায় অভিযুক্তের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। অক্ষয় শিন্ডের পরিবারের দাবি “এনকাউন্টার” করা হয়েছে। অন্য দিকে মহারাষ্ট্র সরকার বলছে, আত্মরক্ষা করেছে পুলিশ। ঘটনার পরই বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছে বিরোধীরা।
সোমবার অভিযুক্তকে তালোজা জেল থেকে বদলাপুর নিয়ে যাওয়ার সময় মুম্বরা বাইপাসের কাছে ঘটনাটি ঘটে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন পুলিশ কমিশনার আশুতোষ ডামব্রে। কমিটিতে রয়েছেন দুই জন ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ, দুই জন সহকারী পুলিশ কমিশনার এবং দুই জন পুলিশ ইনস্পেক্টর। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পাঞ্জাবরাও উগলে।
ঘটনার পর ময়নাতদন্তের জন্য অক্ষয় শিন্ডের দেহ আনা হয় জেজে হাসপাতালে। তখনই অভিযুক্তের মা এবং কাকা পুলিশের দিকে আঙুল তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, বদলাপুর স্কুল এবং পুলিশের যোগসাজশে অক্ষয়কে এনকাউন্টার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, বদলাপুর স্কুলের সাফাইকর্মী ছিলেন অক্ষয়। দুই পড়ুয়াকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। অক্ষয়ের বাবা আনা শিন্ডে বলছেন, এই হত্যার যথাযথ তদন্ত করতে হবে।
সংবাদমাধ্যমে পুলিশের বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন অক্ষয়ের মা এবং কাকা। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশের বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার দাবি ভুয়ো। শুধু তাই নয়, পুলিশ হেফাজতে অক্ষয়কে মারধর এবং টাকা চাওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। অক্ষয়ের মা বলেন, “আমার ছেলেকে পুলিশ মেরেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।“ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “ছেলে বাজি ফাটাতে ভয় পেত। সে পুলিশকে গুলি করবে, এ কথা বিশ্বাস করি না।’’
পুলিশের দাবি, গাড়িতে যাওয়ার সময় আচমকাই এক পুলিশকর্মীর বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালান অক্ষয় শিন্ডে। গুরুতর জখম হন এক অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইনস্পেক্টর। পাল্টা অক্ষয়কে গুলি করেন এক পুলিশকর্মী। এরপর রক্তাক্ত অক্ষয়কে কালওয়া সিভিল হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অক্ষয়ের মায়ের কথায়, “সকালে স্কুলে গিয়েছিল। জানি না সেখানে কী হল। গাড়ি চালাতেও জানে না, গুলি চালাবে কী করে? যারা আমার ছেলেকে মারল তাদের শাস্তি দিতে হবে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।’’
ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে বলেছেন, “অক্ষয়ের বিরুদ্ধে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। সেই মামলার তদন্তের জন্যি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গাড়িতে যাওয়ার সময় এক পুলিশকর্মীর বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালান অক্ষয়। তখনই আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ।“ বিরোধী দলনেতা বিজয় ওয়াদেত্তিইয়ার প্রমাণ নষ্টের চেষ্টার অভিযোগ করেন। সরকারের দিকে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি। বিজয় বলেন, “ট্রানজিটের সময় অক্ষয়ের হাত খোলা ছিল? পুলিশ কীভাবে এত অসাবধান হল? বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।“