দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট কিছু সাধারণ জ্ঞান অনেকেই খেয়াল রাখেন না। অথচ এর অভাবেই নেমে আসতে পারে নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তাই কিছু সাধারণ জ্ঞানমূলক তথ্য জেনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আজ এই প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক নিত্যনৈমিত্তিক জীবনের এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। দই আমাদের খাদ্যতালিকায় একটি খুবই সাধারণ জিনিস যা প্রায় সকলেই কম বেশি সেবন করে থাকেন।দই প্রায় সবাই নিয়মিত খান। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এটি দুধের চেয়েও উন্নত। দই ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ, যা শরীরের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর বলেই মনে করা হয়। যদিও জানলে অবাক হবেন এমনকি দইয়ের মতো পুষ্টিকর খাবারও আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে যদি ভুল ভাবে খাওয়া হয়।জেনে রাখা ভাল যে এমন একটি খাবার আছে, যা দইয়ের সঙ্গে খেলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর হতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষ এই জিনিসটির সঙ্গে দই খাওয়ার বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।আয়ুর্বেদে দই ও মাছ একসঙ্গে খাওয়া নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হয়। আয়ুর্বেদ চিকিৎসক সুজিতা মুত্রেজা বলেন, আয়ুর্বেদে দই ও মাছকে বিপরীত খাবার বলা হয়। তাই দুটোই একসঙ্গে খেলে অনেক ধরনের ক্ষতি হয়।অমৃতসরের ডায়েটিশিয়ান ও পুষ্টিবিদ মিসেস সঞ্চিতা খান্না তাঁর পরামর্শে বলেন, “দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য যেমন দই কিছু খাবারের সঙ্গে খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেব। মাছ খাওয়ার অন্তত ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা পর দই খাওয়া উচিত। ভাল হজমের জন্য এবং খাবারের অ্যালার্জি এবং অসহিষ্ণুতা এড়াতে এবং সামগ্রিক ভাল স্বাস্থ্যের জন্য এই সতর্কতা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। আপনি যদি রাতের খাবারে একটি মাছের পদ খাচ্ছেন। তবে সেই নির্দিষ্ট দিনে ঘুমানোর সময় দই বা দুধ খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভাল।”কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, দইয়ের সঙ্গে এই খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। দই এবং মাছ এই দুই খাবারের উভয়তেই প্রভূত প্রোটিন থাকে। ১০০ গ্রাম দইতে ১১ গ্রাম প্রোটিন থাকে। অন্যদিকে ১০ গ্রাম রান্না করা মাছে ২২ গ্রাম প্রোটিন থাকে।বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে একসঙ্গে এত প্রোটিন হজম করতে পাকস্থলী অসুবিধার সম্মুখীন হয়, তাই এই দুটি একসঙ্গে না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দুই খাবার খেলে গ্যাস ও বদহজমের মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।দই এবং পেঁয়াজ: তবে মাছ ছাড়াও একাধিক খাওয়ার দইয়ের সঙ্গে খেলে শরীরে বিষক্রিয়া জাতীয় প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এই তালিকায় রয়েছে দই ও পেঁয়াজ। এই দুই খাবার একসঙ্গে খেলে অ্যালার্জি, গ্যাস, অ্যাসিডিটি, এমনকি বমিও হতে পারে। এর কারণ, দইতে শীতল প্রভাব আছে, অন্যদিকে পেঁয়াজ বিপরীতধর্মী। ফলস্বরূপ, এই দুটি খাবার একত্রিত খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। তবে আমরা অনেকেই অসাবধানতাবশত দই এবং পেঁয়াজ একসঙ্গে খেয়ে ফেলি।আম ও দই: তালিকায় আছে আম। ফলের মধ্যে আম আপনার শরীরের জন্য গরম। যেখানে দই একটি শীতল প্রভাব প্রদান করে। এগুলি একই সঙ্গে খাওয়ার ফলে ত্বকের সমস্যা এবং অন্যান্য জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ কারণে দইয়ের সঙ্গে আম কখনই একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়।উরদ ডাল ও দই: উরদ ডাল আপনার শরীরে গরম প্রভাব ফেলে। তাই এর সঙ্গে দই খেলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। এটি পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং অ্যাসিডিটির পাশাপাশি পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।দই এবং দুধ: আমরা সবাই জানি, দই দুধ থেকে তৈরি হয়। দুধ ও দই একত্রে খেলে তা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের প্রভূত ক্ষতি করে এবং এর ফলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি এবং এমনকি বমিও হতে পারে।শর্তত্যাগ: শুধুমাত্র আপনাদের সচেতনতার উদ্দেশ্যেই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে। আমরা এই লেখায় সাধারণ জ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবনের কিছু সাধারণ তথ্য শেয়ার করেছি মাত্র। আপনি যদি কোথাও আপনার স্বাস্থ্য, জীবন ও বিজ্ঞানের যোগ সম্পর্কিত কিছু পড়েন তবে তা গ্রহণ করার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
