বেঙ্গল সাইক্লোনের কথা কি মনে আছে আপনাদের? সালটা ছিল ১৭৩৭ সাল, ১১ অক্টোবর। একেবারে কাউকে কিছু না বুঝতে দিয়ে গভীর রাতে হানা দিয়েছিল সে। যার কারণেই বিপর্যয়ের ঘাত ছিল প্রবল।বাংলার ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতি ঝড়ের ইতিহাস খুঁজতে গেলে প্রথমেই নাম আসে ১৭৩৭ সালের ভয়ঙ্কর হুগলি রিভার সাইক্লোন বা ক্যালকাটা সাইক্লোনের। এই সাইক্লোনের ধ্বংসলীলা ছিল ভয়াবহ। শহর কলকাতার দক্ষিণ প্রান্তে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। প্রায় তিন লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান এই ঝড়ে।শুধু কলকাতাতেই প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩ হাজার মানুষ। ২০০টি জাহাজ-নৌকা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই ঝড়ের সময় ৩০ থেকে ৪০ ফুটের ঢেউ উঠেছিল গঙ্গায়৷ তাই আগে থেকে সতর্কতাও সম্ভব ছিল না৷গ্রেট বেঙ্গল সাইক্লোন অব ১৭৩৭ বলেই পরিচিত ছিল এই সুনামি কিংবা ঘূর্ণিঝড়। যেটার মাপ আজকের দিনে ৪ তলা বিল্ডিং এর সমান। ৬ ঘন্টা টানা বৃষ্টি যার কারণে ৩৮১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল, যার কল্পনা করলেই এখন ভয় লাগে গা শিউড়ে ওঠে। কারণ তখনকার সময়ে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের।এরপর ১৭৮৭, ১৭৮৯,১৮২২, ১৮৩৩ সালে গাঙ্গেয় বঙ্গে বারবার হানা দেয় প্রাণঘাতি ঝড়। দশ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এই সব ঝড়ে।এরপর বাংলায় ঝড়ের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতি হয় ১৮৭৬ সালের দ্য গ্রেট বেঙ্গল সাইক্লোন বা কুখ্যাত বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন। এই ঝড়ের তাণ্ডবে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ মারা যান।বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলে আছড়ে পড়া এই ঝড়ের ধ্বংসলীলার জেরে ঢাকা শহরে লোক সমাগম এক ধাক্কায় লাফিয়ে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। এই সাইক্লোন মোকাবিলায় ইংরেজ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে পরবর্তী সময়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।