তীব্র গরমে ঘন ঘন জল খেলেও তৃষ্ণা মিটবে না, শরীর পড়বে ডিহাইড্রেশনে। সঙ্গে কমতে থাকবে শরীরে প্রয়োজনীয় লবণ এবং মিনারেলের পরিমাণও, যার দরুণ দেখা দেবে অপরিসীম ক্লান্তি, আচ্ছন্ন একটা ভাব।একমাত্র প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়াই গরমের এই সমস্যার সমাধান নয়, দরকার পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবারও। মরশুমি ফল এই ব্যাপারে আমাদের কাজে আসতে পারে। যেমন, ফলসার কথাই ধরা যাক। দেখতে ছোট হলে কী হবে, পুষ্টিগুণে যে কোনও ফলকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ফলসার।আসলে, ফলসায় প্রচুর পরিমাণে জল থাকে, যা গরমে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়ক। এছাড়াও এতে উপস্থিত ভিটামিন ও মিনারেল ত্বককে রক্ষা করতে এবং শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। লখনউ সরকারি আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যক্ষ ও ডিন অধ্যাপক মাখন লাল এই প্রসঙ্গে বলেছেন যে ফলসা দেখতে ছোট এবং গোলাকার হলেও এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে এটি খাওয়া হয়। ফলসা থেকে তৈরি শরবত গরম থেকে মুক্তি দেয় এবং এটি শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রেখে জলশূন্যতা রোধ করে। কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, আয়রন, ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন এ, সি, বি১, বি২, বি৩-এর মতো পুষ্টি উপাদান এতে পাওয়া যায়।ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা নিয়ন্ত্রণ করে– ফলসায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় তা রক্ত চলাচলকে মসৃণ রাখে। এতে আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতার সম্ভাবনা কমে যায়। ক্লান্তি ও মাথা ঘোরার মতো সমস্যাতেও ফলসা খাওয়া উপকারী। ফলসাতে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম উপাদান রক্তের প্রবাহে সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ক্লোরাইডের মাত্রাকে ভারসাম্যপূর্ণ করে, যার ফলে স্নায়ু এবং পেশির কার্যকলাপ উন্নত হয়।ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী– এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি জয়েন্টের ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো পরিস্থিতিতে উপশম দেয়। এছাড়া ফলসার মধ্যে রয়েছে পলিফেনল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স, যা খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে। ফলে, এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।