কোচবিহার: একটা সময় ছিল যখন বাটা মশলার প্রয়োগ সবচাইতে বেশি করা হত বেশিরভাগ রান্নার মধ্যে। তবে আধুনিকতার এই যুগে বাটা মশলার পর্ব প্রায় নেই বললেই চলে। হয় আধুনিক মেশিনে তৈরি করা হয় অথবা বাজার থেকে কিনে এনে মশলা ব্যবহার করা হয় রান্নার মধ্যে। তবে আজও দুর্গাপুজো এলেই বাঙালির সেই সাবেকিয়ানা ফিরে আসে বিভিন্ন বাড়িতে। পুজোর কয়েকদিন বাটা মশলা ব্যবহার করা হয় বেশিরভাগ রান্নায়। ফলে প্রয়োজন পড়ে পুরনো সময়ের শিলনোড়ার। যে জিনিস দিয়ে সহজেই মশলা বেটে নেওয়া সম্ভব।
বেশকিছু ফেরিওয়ালা রয়েছেন যাঁরা পুজো আসলেই বিভিন্ন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। এই ফেরিওয়ালারা শিলনোড়া কাজ করে থাকেন। পুজো আসলেই বহু বাড়িতে তাঁদের ডাক পড়ে। এমনই এক ফেরিওয়ালা পরিমল বৈশ্য জানান, “দীর্ঘ সময় ধরে এই কাজ করেন। বলতে গেলে একপ্রকার বংশ পরম্পরায় এই কাজের যোগদান তাঁর। একটা সময় তাঁর বাবার কাছ থেকে এই কাজের শিক্ষা নিয়েছেন তিনি। বর্তমান সময়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে এই কাজ করেন তিনি। তবে দুর্গাপুজো আসলে এই কাজের ফেরিওয়ালাদের চাহিদা বেড়ে ওঠে বিভিন্ন এলাকায়।”
তিনি আরও জানান, “বর্তমান সময়ে শিলনোড়া কোড়ানোর কাজ সারাবছর থাকেনা বললেই চলে। তবে বেশ কিছু বাড়িতে আজও এই জিনিস ব্যবহার করা হয় মশলা কিংবা অন্যান্য জিনিস বাটার জন্য। তাই সেই বাড়িগুলিতে আজও ডাক পড়ে এই তাঁদের।” কোচবিহারের এক প্রবীন বাসিন্দা রচনা অধিকারী জানান, “একটা সময় এই জিনিসগুলি ব্যবহার করেই রান্নার বাটা মশলা তৈরি করা হত। তবে এখন আরও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের উপায় বেরিয়েছে। তাই কদর কমেছে এই জিনিসগুলির। তবে আজও এই জিনিসে বাটা মশলা যেকোনও রান্নার স্বাদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।”
দীর্ঘ সময় পরেও আজও সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়নি এই প্রাচীন জিনিসটি। আজও বহু বাড়িতে পুজো আসলেই এই জিনিস ব্যবহারের পর্ব চলে। তাই আজও এই ফেরিওয়ালাদের প্রয়োজন সম্পূর্ণ ফুরিয়ে যায়নি। পুজোর সময় দুটো পয়সা বেশি উপার্জন করতে পারেন এই ফেরিওয়ালারা।
Sarthak Pandit