ডিসুরিয়া আক্রান্ত হলে কী কী করবেন জানুন

Dysuria Disease symptoms : প্রস্রাবের সময় প্রবল জ্বালা হচ্ছে! সাবধান, অবহেলা করলেই বিপদ

নয়াদিল্লি :  প্রস্রাব করার সময় প্রচণ্ড জ্বালা করছে? এই ধরনের অস্বস্তি, ডিসুরিয়া নামে পরিচিত।

মূত্রাশয়, মূত্রনালী বা পেরিনিয়াম (মলদ্বার এবং যৌনাঙ্গের মধ্যবর্তী স্থান) এর মতো বিভিন্ন স্থানে ঘটতে পারে। আপনি যদি এটি অনুভব করেন তবে এটিকে উপেক্ষা না করাই ভালো। ডিসুরিয়া বিভিন্ন কারণের কারণে হতে পারে। সংক্রমণ, বা কিডনিতে পাথর হলে এমন হতেই পারে। কোন পরিস্থিতিতে বুঝবেন আপনি এই রোগে আক্রান্ত? বিস্তারিত জানুন।

আরও পড়ুন : বৃষ্টি হলেই মন চা-পকোড়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে কেন, জানুন এই বিশেষ কারণ

· প্রস্রাব করতে অসুবিধা: এই উপসর্গটি অতি সাধারণ। প্রস্রাবের দুর্বল স্রোত, মাঝে মাঝে তা শুরু এবং বন্ধ হলে ব্যাপারটি অবহেলা করবেন না৷ সকালে প্রস্রাবের সময় বা দীর্ঘ সময় প্রস্রাব না করার পর এই লক্ষণগুলি দেখতে পাওয়া যায়৷

· প্রস্রাবের সময় পরিবর্তন: স্বাভাবিকের চেয়ে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া এর অন্যতম লক্ষণ।

· ব্যথা বা অস্বস্তি: তলপেটে, পাশে বা পিঠের নিচের অংশে ধারাবাহিকভাবে ব্যথা হওয়া এর লক্ষণ। এই ব্যথা প্রথমে অল্প থাকলেও পরে তা তীব্র অস্বস্তিতে পরিণত হতে পারে৷ বিশেষ করে প্রস্রাব করার সময়। এখানেই শেষ নয়, প্রস্রাবের পর জায়গাটিতে প্রবল জ্বালা হবে৷

· প্রস্রাবে রক্ত: লালচে প্রস্রাব হওয়াও মূত্রনালীর একটি সমস্যা৷ এই লক্ষণটি গুরুতর এবং উপেক্ষা করা উচিত নয়।

· শরীরের বিভিন্ন অংশ ফোলা: মূত্রনালীতে সমস্যা হলে গোড়ালি, পা ফুলে যেতে পারে। আসলে এই সমস্যায় কিডনি শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল এবং বর্জ্য অপসারণ করতে পারে না। এমন পরিস্থিতি হলে অবিলম্বে চিকিৎসা করান, না হলে কিন্তু বড় বিপদ হতে পারে।

আরও পড়ুন : নেকড়ে, বাঁদরের পর এবার উত্তর প্রদেশে মানুষখেকোর উৎপাত, ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীর

কোন কোন কারণে এই সমস্যাগুলি হতে পারে?

· কিডনিতে পাথর: কিডনিতে পাথরযুক্ত ব্যক্তিরা প্রস্রাব করার সময় অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন। মূত্রনালী বা কিডনির মধ্য দিয়ে কিডনির পাথর চলাচলের কারণে ব্যাথা বা জ্বালা হতে পারে।

যৌন সংক্রমণ (STIs): বেদনাদায়ক প্রস্রাব যৌনাঙ্গে হারপিস, গনোরিয়া বা ক্ল্যামাইডিয়ার মতো STI-এর একটি উপসর্গের জন্য হতে পারে, যা মূত্রনালীর প্রদাহ এবং অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে।

· ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই): ইউটিআই, প্রায়ই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে সৃষ্টি হয়, এতে প্রস্রাবের সময় প্রবল ব্যাথা হয়ে থাকে৷

প্রোস্টেটাইটিস: প্রোস্টেট গ্রন্থির জ্বলন প্রস্রাব করার সময় উল্লেখযোগ্য অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, যা প্রস্রাবের ফ্রিকোয়েন্সি এবং গুণমান উভয়কেই প্রভাবিত করে।

· সাবান বা সুগন্ধি: নিম্নমানের সাবান, পারফিউম বা ব্যক্তিগত যত্নের অন্যান্য পণ্য ব্যবহার করলে মূত্রনালীর জ্বালা হতে পারে এবং বেদনাদায়ক প্রস্রাব হতে পারে।

চিকিৎসা কী কী?

· ডাক্তার দেখান : এই সমস্যা বা অস্বস্তিগুলি উপেক্ষা করবেন না। অবিলম্বে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করুন৷ অবহেলা করলে পরবর্তিকালে অস্ত্রোপচারও করতে হতে পারে।

· জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান: প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার জল পান করা একটি সহজ এবং কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার। এটি টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং অস্বস্তি দূর করতে পারে।

· সাবান ও পারফিউম ব্যবহারে সাবধান: যৌনাঙ্গের কাছে স্বস্তার সাবান, পারফিউম বা অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, এগুলি জ্বালার সৃষ্টি করতে পারে।

· অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করুন: মূত্রনালীর সংক্রমণ, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যান৷ নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকে সমস্যা সমাধান সম্ভব৷

· নির্দিষ্ট কিছু পানীয়কে ত্যাগ করুন : অ্যালকোহল, ক্যাফিন এবং কার্বনেটেড বা অ্যাসিডিক পানীয় থেকে বিরত থাকুন, কারণ এগুলি মূত্রাশয়ের সমস্যাকে বাড়িয়ে দিতে পারে তাতে রেজাল্ট আরও খারাপ হতে পারে।

প্রস্রাব করার সময় বেদনা হলে সেটি সহ্য করা খুব কঠিন৷ তবে এর উপসর্গ বুঝতে পেরে চিকিৎসা করলে সমস্যা সমাধান সম্ভব৷ তাই আপনি যদি ক্রমাগত এমন সমস্যার সম্মুখীন হন, তাহলে আর দেরি করবেন না৷ আজই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে চিকিৎসা শুরু করে দিন৷