মেদিনীপুর : ফের মাংস ও ডিমের দাম কি বাড়তে চলেছে ? নাকি আতঙ্কে মাংস ও ডিম খাওয়া ছাড়বেন অনেকেই ! সরকারের একটি সিদ্ধান্তে এমন প্রশ্ন সামনে এসেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আন্তরাজ্য বর্ডার। স্বাভাবিকভাবে ওড়িশা থেকে এ রাজ্যে সমস্ত ধরনের পোল্ট্রি এবং পোল্ট্রিজাত দ্রব্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
রাজ্যকে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে অবশ্য এমন পদক্ষেপ। ওড়িশা থেকে এ রাজ্যে পোল্ট্রিজাত সামগ্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। ফলে ওড়িশা থেকে মুরগি ও ডিম আমদানি একপ্রকার বন্ধ হল। দাঁতনের সোনাকোনিয়াতে জোরদার করা হয়েছে নাকা। বর্ডারে একাধিক গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। ফেরত পাঠানো হচ্ছে ওড়িশায়। বালেশ্বর-খড়্গপুর জাতীয় সড়কের সোনাকোনিয়াতে এই নাকা জোরদার করা হয়েছে।
প্রশাসন জানাচ্ছে, ওড়িশার কয়েকটি জেলায় এইচ-৫ এন-১ ভাইরাস তথা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়েছে। যার প্রচলিত নাম বার্ড ফ্লু। যার জেরে বহু মুরগি মারা যাচ্ছে ওড়িশায়। যা মুরগি ও ডিমের সঙ্গে এ রাজ্যে চলে আসতে পারে। মুরগির মধ্য দিয়ে সংক্রমণ মানুষের মধ্যেও ছড়াতে পারে। তাই রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ। তবে রাজ্যে উৎপাদিত মুরগি ও ডিমের ক্ষেত্রে এমন নিষেধাজ্ঞা নেই।
ইতিমধ্যেই নাকা পয়েন্টে জোর নজরদারি চালানো হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনে তরফে। প্রতিটি গাড়িতে নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। দাঁতন বিধানসভার বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, ” সংক্রমণ যাতে রাজ্যে না ছড়ায় তাই কিছুদিনের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মানুষের স্বাস্থ্যের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে রাজ্য সরকার তৎপর।”
রাজ্য সরকারের নির্দেশ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে সড়ক পথে আসা বহু গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। গাড়িগুলিকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না রাজ্যে। গাড়িগুলিকে ফের ওড়িশার দিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। নতুন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আপাতত এই পদক্ষেপ চলবে। তবে এই নিষেধাজ্ঞায় আটকে পড়ছে অন্যান্য রাজ্য থেকে বহন করে আনা পোল্ট্রিজাত সামগ্রীর গাড়িগুলিও। শুধু সড়ক পথ নয়, নজরদারি চালানো হচ্ছে রেলপথেও। ট্রেনেও যেন এ রাজ্যে পোল্ট্রিজাত সামগ্রী না ঢুকতে পারে তা দেখা হচ্ছে রেল পুলিশের পক্ষ থেকেও।যার জেরে রাজ্যে মাংস ও ডিমের ঘাটতি পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞায় সমস্যায় পড়েছেন ট্রাক চালক ও খালাসীরা। ওড়িশার ওপর দিয়ে আসা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মুরগি ও ডিম লোড করে আসাম যাওয়ার বহু গাড়ি আটকে পড়েছে সোনাকোনিয়া সীমানায়।চালকদের বক্তব্য, “পুলিশ যেতে দিচ্ছে না। কতদিন আটকে থাকতে হবে জানি না। আমরা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ডিম নিয়ে আসাম যাচ্ছিলাম। তাও আটকেছে নে খাওয়ার, জল পেতে অসুবিধা হচ্ছে।” স্বাভাবিকভাবে এ রাজ্যে মানুষের এবং পাখিদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্য এই সিদ্ধান্ত।
Ranjan Chanda