মারাংবুরু পুজোকে ঘিরে ভক্তদের ভিড়

Bankura News: পুজো তো অনেক দেখেছেন! তবে বাঁকুড়ার এই পুজো, দেখেন নি বললেই চলে

বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে অগ্রহায়ণ মাসে বিশেষ দিনে সাঁওতাল জনগোষ্টির দেবাদিদেব মারাংবুরু থানে মারাংবুরু পূজিত হন। এই পুজোকে হাজার হাজার মারাংবুরু ভক্তের সমাগম হয়। সকাল থেকে সুশৃঙ্খল ভাবে মহিলারা লাইন দিয়ে পুজো দেন ও তাঁদের মনস্কামনাপ্রার্থনা করেন। বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও পুরুলিয়া, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম জেলার ভক্তগণ যোগ দান করেন এই পুজোতে।

এক বিরাট আয়োজন। তাও আবার শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে। লাইন দিয়ে ভক্তের সমাগম। যেন এক মিলন মেলা। সঙ্গে রয়েছে আদিবাসী নৃত্য, বাদ্যযন্ত্র সহযোগে। এই সময় পর্যটকরাও আসেন। তারা উপভোগ করেন এই মেলা এবং পুজো। বাবুনাথ টুডু জানান, “এই পুজো অনেক আগে হত। শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে এটি ষষ্ঠ বছর।” শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে ষষ্ঠতম মারাং বুরু পুজো। আদিবাসি নারীরা মাথায় বেঁধেছেন লাল ফুল আর পুরুষেরাও বেশ আগ্রহের সঙ্গে করেছেন যোগদান।

আরও পড়ুন: বাঁকুড়ার প্রথম মহিলা ড্রোন পাইলট বাঁচাচ্ছেন কৃষকদের প্রাণ

আপনি যদি ‘মারাং বুরু’ শব্দটিকে সহজভাবে অনুবাদ করেন যার অর্থ বড় পাহাড় (মারাং = বড়, বুরু = পর্বত)। কিন্তু এটি আসলে ভগবান শিব বা মহাদেবকে নির্দেশ করে। সাঁওতালি সংস্কৃতিতে পাথর বা মাটির পুতুলের পুজা করা হয় যা সাধারণত ঘোড়া বা হাতির পুতুল। সঙ্গে হাতি, ঘোড়া বাঁকুড়ার একটি পরিচয়। পুজোর মরশুম চলছে। দুর্গাপুজো, লক্ষ্মী পুজো পেরিয়ে এবার অপেক্ষা কালী পুজোর। তবে বাঁকুড়ার পর্যটন মানচিত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে হচ্ছে মারাংবুরু পুজো। উপভোগ করছেন গোটা রাজ্যের মানুষ।

আরও পড়ুন: মুকুটমণিপুর এত সুন্দর জায়গা…! তাও কেন কমছে পর্যটক? কারণ জানলে অবাক হবেন!

ধামসা মাদলের বোল। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আদিবাসী রমণীদের নাচ। চলছে পুজার্চনা। গ্রামীণ সংস্কৃতি থেকে বহু দূরে থেকেও আজও এভাবেই নিজেদের ঐতিহ্য আর পরম্পরা বাঁচিয়ে রেখেছেন বাঁকুড়ার আদিবাসীরা। শীত কাল জুড়ে থাকে বিভিন্ন আদিবাসী উৎসব। এরপর দেখা যাবে অত্যন্ত সুন্দর বাহা পরব। তারপর দেখা যাবে ‘খেরওয়াল টুকৌ’। লাল মাটির জেলাতে সত্যিকারের স্পষ্টভাবে অনুভূত হচ্ছে উৎসবের মরশুম।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী