ঝাড়গ্রাম: পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যেতে চাইছেন আমাজনের মতো রেন ফরেস্টের জঙ্গলে। রেন ফরেস্টের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর তীরে বসে সময় কাটাতে চাইছেন। এসব কিছুর পাশাপাশি পুজোর দিনে পুজো দিতে পারবেন এমন এক সেরা ঠিকানা হতে পারে পর্যটকদের জন্য কনক অরণ্য।ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়ে রয়েছে কনক অরণ্য। জঙ্গলমহলের আর পাঁচ’টা জঙ্গলের তুলনায় কনক অরণ্যের জঙ্গল সম্পূর্ণ আলাদা। আমাজন অববাহিকার রেইন ফরেস্টের মতো লতানো পেচানো গাছের গভীর জঙ্গল রয়েছে। দিনের বেলা জঙ্গলের অনেক জায়গায় সূর্যের আলো ছুঁতে পারে না মাটি।
কনক অরণ্যের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ডুলুং নদী। এই সময় নদীতে জল বেশি থাকায় প্রতিমুহূর্তে গর্জন দিচ্ছে ডুলুং। ডুলুং কুল কুল আওয়াজ উপভোগের পাশাপাশি সময় কাটাতে পারেন নদীর তীরে বসে। পুজোর সময় দেবী কনক দুর্গাকে, দুর্গার রূপে পুজো করা হয়। কনক অরণ্য বেড়ানোর পাশাপাশি মহাষ্টমীর পুজোও পর্যটকরা দিতে পারবে চিল্কিগড় কনক দুর্গা মন্দিরে।
কনক অরণ্য প্রায় ৬০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এরমধ্যে ৩৮৮টি বিভিন্ন প্রজাতির ভেষজ গুল্ম গাছ এবং লতা গুল্ম-সহ ১১৫ টি ঔষধি গাছ রয়েছে। কিছু গাছ ও লতা গুল্ম জাতীয় গাছ বিলুপ্তপ্রায় রয়েছে। এই নিরবিচ্ছিন্ন জঙ্গলটিকে রক্ষা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে জীববৈচিত্র্য হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদে সরকারি চাকরির বিরাট সুযোগ! নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আজই জেনে আবেদন করুন
চিল্কিগড় কনক দুর্গা মন্দির ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সিকিউরিটি ইনচার্জ মানস জানা বলেন, “জঙ্গলমহলের আর পাঁচটা জঙ্গলের তুলনায় চিল্কিগড়ের কনক অরণ্যের জঙ্গল সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে আমাজনের রেইন ফরেস্টের মত গাছ-গাছালি ভর্তি রয়েছে। কনক অরণ্যের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে ডুলুং নদী। ফলে একটি মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এই গাছ-গাছালির মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে এবং হনুমানের দল বসবাস করে। যারা সারাদিন ধরে এখানে বাচ্চাদের নিয়ে খেলা করে বেড়াচ্ছে। কনক অরণ্যের মাঝে রয়েছে বা কনক দুর্গা মন্দির। পর্যটকরা এখানে বেড়ানোর পাশাপাশি মন্দিরে পুজো দিতেও পারে”।
আরও পড়ুনঃ পুজো বোলপুর-শান্তিনিকেতনে কাটানোর প্ল্যান? সোনাঝুরি হাট নিয়ে এল বিরাট আপডেট
কনকদুর্গা মন্দিরের পুরোহিত গৌতম সারেঙ্গি বলেন, “যারা ঝাড়গ্রাম বেড়াতে আসছেন তারা যদি কনক অরণ্য এবং চিল্কিগড়ের মন্দির না বেড়াতে আসেন তাহলে তাদের ঝাড়গ্রাম বেড়াতে আসাটাই বৃথা যাবে। কারণ তাঁরা এত সুন্দর মনোরম পরিবেশ এবং আধ্যাত্মিক জায়গা যেখানে মনের শান্তি পাবে সেখানে না আসলে বেড়ানোর মূল সুখটুকুই পাওয়া যাবে না”।তাই পুজোয় যারা জঙ্গলমহল বেড়াতে আসার পরিকল্পনা করছেন তাদেরকে অবশ্যই চলে আসতে হবে চিল্কিগড়ের কনক অরণ্যে অথবা যারা এখনো বেড়ানোর প্ল্যানিং করতে পারেননি তাঁদের জন্য এটা সেরা ডেস্টিনেশন হতে পারে।”
বুদ্ধদেব বেরা