দক্ষিণ 24 পরগনা: কুলতলির কৈখালিতে তৈরি হতে চলেছে ভাসমান পনটন জেটি। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন, সেচ ও বন দফতরের প্রতিনিধিরা জেটি তৈরির জায়গা পরিদর্শন ও করেন। মাতলা নদীর ধারে অবস্থিত কৈখালি সুন্দরবনের অন্যতম প্রবেশদ্বার। কিন্তু বেহাল জেটিঘাট-সহ বিভিন্ন কারণে এখানে পর্যটকদের আনাগোনা অপেক্ষাকৃত কম। পনটন জেটি তৈরি হলে এই এলাকায় পর্যটনে গতি আসবে বলেই মনে করছেন এলাকার মানুষজন। পাশাপাশি লাভবান হবেন জলপথের নিত্যযাত্রী ও মৎস্যজীবীরাও। কৈখালি থেকে লঞ্চে পৌঁছে যাওয়া যায় বনি ক্যাম্প, কলসদ্বীপের মত সুন্দরবনের গভীরে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে। এখান থেকে লঞ্চে দিনের দিনই ঘুরে আসা যায় ঝড়খালি-সহ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র থেকে। পাশাপাশি কৈখালি জায়গাটিও মনোরম। নদীর পাড়েই নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের একটি শাখা রয়েছে। নদীর পাড়ে রাত্রিবাসেরও জায়গা আছে। পর্যটকদের কাছে তাই এই জায়গাটির আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। কিন্তু বেহাল জেটিঘাটেরর কারণে অনেকেই এড়িয়ে চলেন এই জায়গাটিকে।
আরও পড়ুন: মিড ডে মিলে ড্রাগন ফল! স্কুলের ছাদবাগানের ফলনেই পুষ্টির জোগান ছাত্রদের
আমফান-ইয়াসে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল কৈখালির বর্তমান জেটিঘাটটি। দীর্ঘদিন ভাঙাচোরা অবস্থায় ছিল সেটি। ফলে সমস্যায় পড়তেন পর্যটক থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা। পরে জেটিঘাটের সাময়িক সংস্কার হয়েছে। তবে নদীতে জল কম থাকলে যাত্রীদের লঞ্চে ওঠা-নামায় সমস্যা হয়। পনটন জেটি হলে এই সমস্যা অনেকটাই মিটবে। পাশাপাশি এই জেটি ঘাট থেকে বহু নিত্যযাত্রী কুলতলির বিভিন্ন প্রান্তে জাতায়াত করেন। তাঁদেরও সুবিধা হবে। কৈখালি ঘাট থেকে বহু মৎস্যজীবী ট্রলারও মাছ ধরতে নদী-সমুদ্রে পাড়ি দেয়। ভাসমান জেটি হলে সুফল মিলবে তাঁদেরও। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১৮ সাল নাগাদ কৈখালিতে একটি ভাসমান পনটন জেটি তৈরির উদ্যোগ নেন স্থানীয় বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল। সেই মত পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। সেচ ও পূর্ত দফতরের যৌথ উদ্যোগে জেটি তৈরি হবে বলে ঠিক হয়। প্রাথমিকভাবে জেটি তৈরির জন্য একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দফতরের তরফে পরিদর্শন করে সেই জায়গায় জেটি তৈরি করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই নতুন করে জায়গা দেখার কাজ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বর্ষার শুরুতেই বাড়ছে হাঁস, মুরগির রোগ! পশু চিকিৎসকের সহজ পরামর্শেই কামাল করুন
সেই কাজেই সম্প্রতি কৈখালিতে আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ, সেচ, বন দফতরের প্রতিনিধিরা। ছিলেন বিধায়ক, প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিক-সহ স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনও। এ দিন নদীর পাড় বরাবর একাধিক জায়গা দেখেন তাঁরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, দু’টি জায়গা বাছাই করা হয়। তার মধ্যে যে কোনও একটি জায়গায় জেটি তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সেচ ও পূর্ত দফতরের কাছে। সেই প্রস্তাব অনুমোদন হলেই জেটি তৈরির বাকি প্রক্রিয়া শুরু হবে।কুলতলির বিডিও সুচন্দন বৈদ্য বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এখানে পনটন জেটি তৈরির প্রস্তুতি চলছে। অতিরিক্ত জেলা শাসক-সহ অন্যান্য দফতরের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে জায়গা দেখা হয়েছে। আপতত দু’টি জায়গা ঠিক করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে জেটি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই জেটি তৈরি হলে পর্যটন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
সুমন সাহা