চাকরির টোপ দিয়ে প্রতারণা চক্র 

Fraud Case: মাত্র ৬ মাসের ট্রেনিংয়ে মিলবে সরকারি-বেসরকারি চাকরি, ভাঙড়ে তুলকালাম কাণ্ড…! আত্মসাৎ কোটি কোটি টাকা

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: চাকরির নামে প্রতারণা ভাঙড়ে, মাত্র ৬ মাসের ট্রেনিং। খরচ পনেরো থেকে পঁচিশ হাজার টাকা। আর সেই ট্রেনিং শেষে মিলবে সরকারি-বেসরকারি দফতরের চাকরি। যেখানে স্যালারি পাওয়া যাবে পঁচিশ থেকে তিরিশ হাজার টাকা। এভাবেই ভাঙড় থানার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ভাঙড় বাজারে বসে চাকরির নামে প্রতারনা চালাচ্ছিল একটি চক্র। সেই প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে ভাঙড় থানায় অভিযোগ জানালেন কয়েকজন প্রতারিত বেকার যুবক, যুবতী। তাঁদের দাবী, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা টাকা হাতিয়েছেন ভাঙড়ের বাসিন্দা প্রবীর মণ্ডল। অবিলম্বে ওই যুবককে গ্রেফতার করতে হবে এবং টাকা ফেরত দিতে হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড় ১ ব্লকের জাগুলগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী প্রবীর মণ্ডল তাঁর স্ত্রী কঙ্কনা মাঝি, শ্যালক সঞ্জয় মাঝি ও সন্দীপন সাধুখাঁ-সহ বেশ কয়েকজন মিলে স্মার্ট ভ্যালুর অফিস খুলে বসে, ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ের উল্টোদিকে কর্মতীর্থ বিল্ডিং-এর তিনতলায়। এমনিতেই জাগুলগাছি পঞ্চায়েতের কর্মী প্রবীর মণ্ডলের বিরুদ্ধে সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পের ঘরের টাকা-সহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

২০২১ সালে ভাঙড় থানার ঘটকপুকুরে প্রথমে স্মার্ট ভ্যালুর অফিস খোলে। সেখানে বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সময়ে ভাঙড় থানা (তৎকালীন রাজ্য পুলিশের অধীনস্থ) ওই সংস্থার অফিস বন্ধ করে দেয়। এর পাশাপাশি পুলিশ কয়েকজন প্রতারিত যুবক-যুবতীকে ওই সংস্থার থেকে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফের ওই সংস্থা ভাঙড় কলেজের উল্টোদিকে কর্মতীর্থ বিল্ডিংয়ে নতুন করে অফিস খুলে বসে।

আরও পড়ুন-  বিরাট ক্ষতিকর…! ‘তেলাপিয়া’ মাছ-ই ডেকে আনছে ভয়ঙ্কর বিপদ, যা বলছেন গবেষকরা, শুনলে আঁতকে উঠবেন

বিশেষ করে ভাঙড় কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, বেকার যুবক-যুবতীদের টার্গেট করে আবারও ফাঁদ পাতা শুরু করে। তাঁদেরকে বলা হয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্লক অফিস, পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন জায়গায় ডাটা এন্ট্রির কাজ দেওয়া হবে। এজন্য তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু ওই সমস্ত যুবক-যুবতীরা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও চাকরি কোনও কিছুই পাইনি। যখনই তারা চাকরির কথা বলতে যায় তখন তাদের বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দিয়ে বিক্রি করার কথা বলা হয় এবং নতুন নতুন ছেলে মেয়েদের সংস্থায় ভর্তি করানোর কথা বলা হয়। বিনিময়ে তাদের কমিশন দেওয়ার কথা বলা হয়। দুই-তিন বছর ধরে ওই সমস্ত যুবক-যুবতীরা চাকরি ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ না পেয়ে এবং টাকা ফেরত চেয়েও না পেয়ে দিন কয়েক আগে ভাঙড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

আরও পড়ুন-   বলুন তো, স্ত্রী-রা কি রাখি পড়াতে পারেন স্বামীকে? ৯৯ শতাংশই ‘এই’ ভুলটা করেন, আপনিও কি তাই করছেন? আজই শুধরে নিন…

এদিন প্রতারিত যুবক-যুবতীরা টাকা ফেরতের দাবিতে ভাঙড় থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।এদিন এই ঘটনার পর ভাঙড় থানার পুলিশ ওই সংস্কার অফিসে তদন্ত করতে যায়। শৌভিক বিশ্বাস নামে এক প্রতারিত যুবক বলেন, ওখানে কম্পিউটার ট্রেনিং দেওয়া হবে বলা হলেও কোনও কম্পিউটার ছিল না। বাজারের মধ্যে প্রকাশ্যে এসব চালাচ্ছিলেন অভিযুক্তরা। প্রতারিত মাম্পি পারভিন বলেন, মূলত কন্যাশ্রী পাওয়া কলেজ পড়ুয়াদের টার্গেট করা হতো চাকরির নাম করে। কারণ সহজেই ওঁদের থেকে প্রকল্পের টাকা হাতানো যেত। পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধকরা হয়েছে। ঘটনার নিন্দা করেছেন ভাঙড় বাজার ব্যসায়ী সমিতির সভাপতি সাবিরুল ইসলাম।

সুমন সাহা