নদিয়া: বিপুল বেআইনি মাদক বাজেয়াপ্ত হয় মালয়েশিয়ায়। আর তাতে জড়িয়েছে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের নাম। চিকিৎসককে সিবিআই পরিচয় দিয়ে ভিডিও কলিং করে চিকিৎসকের অ্যাকাউন্ট থেকে দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নবদ্বীপ মহেশগঞ্জ গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক গোবিন্দ গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে। ঘটনার পর প্রতিনিয়ত ফোন আসছে আরও টাকা দেওয়ার জন্য। আর সেই টাকা দিলেই সিবিআইয়ের হাত থেকে নারকোটিক বিভাগের বাজেয়াপ্ত করা মামলা থেকে সুরাহা মিলবে।
ঘটনার পর চিকিৎসক গোবিন্দ গোপাল বিশ্বাস কৃষ্ণনগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন। নবদ্বীপ থানাতেও একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একই সঙ্গে পুলিশের তৎপরতায় তার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এবং সমস্ত রকম লিঙ্ক আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
চিকিৎসক গোবিন্দ গোপাল বিশ্বাস জানান, সকাল সাড়ে নটা নাগাদ তাঁর কাছে ফোন আসে। নারকোটিক বিভাগ প্রচুর পরিমাণ নেশা জাতীয় দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করেছে। তাতে যোগসাজস রয়েছে এই চিকিৎসকের। এ কথা শোনার পর চিকিৎসক হতভম্ব হয়ে পড়ে। তিনি এসবের সঙ্গে জড়িত না, অথচ তাঁর নামে এত বড় অভিযোগ।
আর এই অভিযোগ থেকে সুরাহা মিলবে টাকা দিলেই। শুধু তাই না, অসুস্থ বাবা এবং পরিবারের থেকে তাঁকে গ্রেফতার করার ভয় দেখানো হয়। শুধু তাই নয়, তাঁকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, দিল্লিতে গিয়ে সিবিআই দফতরে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এইরকম ভাবে প্রবল চাপ সৃষ্টি করতে থাকে চিকিৎসকের ওপর। আর সেই চাপ সহ্য না করতে পেরে টাকা দিয়ে মুক্তির আশায় তার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে ১ লক্ষ পরে আরও ৫০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করা হয়। এরপর আরও টাকা দাবি করতে গেলে চিকিৎসক ভুল পিন নম্বর দেন। তখনই পেটিএম ব্লক হয়ে যায়। শুধুমাত্র সম্মানের কথা ভেবেই তিনি মস্ত বড় একটি ভুল করেছেন বলে জানান সরকারি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক ।
এরপর তড়িঘড়ি ছুটে আসেন নবদ্বীপ থানায়। কৃষ্ণনগর সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানানোর পর নবদ্বীপ থানাতেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। যদিও চিকিৎসকের অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নবদ্বীপ থানার পুলিশ এবং কৃষ্ণনগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা। এর সঙ্গে বড় কোনও চক্র জড়িয়ে আছে কিনা তার ও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।