লাইফস্টাইল Fruits: কোন ‘ফলে’ সবচেয়ে বেশি ‘চিনি’ থাকে বলুন তো…? চমকে যাবেন ‘নাম’ শুনলে! Gallery September 15, 2024 Bangla Digital Desk বর্তমান জীবনে সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকতে সবসময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্য সচেতন হলেও অনেক ক্ষেত্রেই স্বাদের জন্যই আমরা এমন অনেক খাবার খেয়ে ফেলি যা শরীরে বয়ে আনতে পারে হাজার রোগের ঝুঁকি। ডায়াবেটিস থেকে স্থূলতা ঘরে ঘরে ক্রমশ বাড়তে থাকা একাধিক স্বাস্থ্যগত সমস্যায় সাধারণত চিনি খাওয়া নিয়ে সতর্ক করেন বিশেষজ্ঞরা। জেনে রাখা জরুরি, আপাত ভাবে নিরীহ হলেও কেক-পেস্ট্রি বা মিষ্টি ছাড়াও কিন্তু একাধিক খাবার রয়েছে যাতে চিনির মাত্রা ভয়ঙ্কর বেশি থাকে। আসলে এমন অনেক খাবার রয়েছে যাতে চিনির পরিমাণ কম বলেই মনে হয়। তবে সত্য আসলে অনেক কঠিন। যেসব খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি তার তালিকায় মিল্ক চকোলেট বার, ক্যারামেল ক্যান্ডি থেকে শুরু করে কেক, কুকিজ, ডোনাট বা আইসক্রিম থাকলেও এই তালিকায় রয়েছে একাধিক ফলও। রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান বেথ জার্ওনি একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকায় তাঁর পরামর্শে বলেন ফল একটি প্রাকৃতিক খাবার যা এই তালিকায় রয়েছে। ফল শরীরে চিনির মাত্রা বাড়াতে অন্যতম প্রাকৃতিক স্বাস্থ্যকর উপায় হিসাবে গণ্য হয়। ফল খাওয়া নিঃসন্দেহে ভাল। এটি ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর, এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এতে যা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে সাহায্য করে। একইসঙ্গে তিনি তাঁর পরামর্শে ব্যাখ্যা করেন, “আমি চাই না কেউ ফলে থাকা চিনিকে ভয় করুক কারণ এগুলি প্রাকৃতিক চিনি। “শরীর এই চিনিকে কুকিজ এবং কেক বা এই ধরণের অন্যান্য খাবারের চিনির চেয়ে ভিন্নভাবে প্রসেস করে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আপনি এটি অতিরিক্ত পরিমানে খেতে পারেন।” আপনি যা খাচ্ছেন তাতে চিনির পরিমান কতটা সে সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞ বলেন, এই কারণেই বিশেষত যাঁরা নানা শারীরিক জটিলতার শিকার বিশেষত টাইপ 1 বা টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জানতে হবে কোন ফলে কত শর্করা রয়েছে। জানেন কোনটি সেই ফল যার মারাত্মক চিনির পরিমাণের কারণে তাকে “প্রকৃতির মিছরি” হিসাবে অভিহিত করা হয়? চলুন বুঝে নেওয়া যাক তালিকা দেখে। আপেলএকটি বড় আপেলে চিনির পরিমান: : ২৫.১ গ্রাম ।আপেলের বেশিরভাগ চিনি ফ্রুক্টোজ, যাকে প্রায়শই ‘ফলের চিনি’ বলা হয় যেখানে শর্করা প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়। মনে হয় যে ফ্রুক্টোজ রক্তে শর্করা বা ইনসুলিনের মাত্রা অন্যান্য শর্করা যেমন গ্লুকোজ বা সুক্রোজের মতো ততটা বৃদ্ধি করে না। আপেলে থাকা ফাইবার উপাদান আবার গ্লুকোজ বিপাককে সাহায্য করে, যা রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে।গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সবুজ আপেলে সাধারণত লাল জাতের আপেলের তুলনায় কম চিনি থাকে। কলাএকটি কলায় চিনি : ১৫.৪ গ্রাম।কলাতে বেশি মিষ্টি আছে বিশ্বাস না হলেও এই ফলের খোসার নীচে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি লুকিয়ে থাকে। কলা পাকলে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যায়। চেরি১ কাপ চেরিতে চিনি : ১৯.৭ গ্রাম।চেরি খাওয়া অত্যন্ত সহজ। অনেকেই এক বাটি চেরি চোখের নিমেষে শেষ করে দিতে পারেন। কিন্তু এই চেরিতেই লুকিয়ে বড় মাত্রার চিনি? বিশেষজ্ঞের মতে, “চেরি আপনার জন্য দুর্দান্ত, তবে আপনি কতগুলি খাচ্ছেন সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করুন। ডায়াবেটিসের মতো রোগীদের অতিরিক্ত চেরি না খাওয়াই ভাল।” আঙুর১ কাপ আঙুরে চিনি : ১৪.৯ গ্রাম।চেরির চেয়ে আঙুর খেতে আরও সহজ। আপনি যদি ডায়েটে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে চান তবে আপনি একটি এই ফলটি খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক হন। আমএকটি আমে চিনি : ৪৬ গ্রাম।গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফলগুলিতে সাধারণত উচ্চ চিনির মাত্রা থাকে, আম একটি প্রধান উদাহরণ।আপনি যদি আম খাওয়ার সময় চিনির পরিমাণ কমাতে চান তবে পরিমান নিয়ন্ত্রণ জরুরি। কমলালেবুএকটি বড় কমলালেবুতে চিনির মাত্রা : ১৭.২ গ্রাম।কমলালেবুর ফাইবার আপনার রক্তে চিনির নিঃসরণ সহজ করতে সাহায্য করতে পারে। তবে কার্যকরী প্রভাব পেতে এক গ্লাস জুস পান না করে ফলটি ছুলে খান। কমলার রসে চিনি অনেক বেশি ঘনীভূত হয়। বলা হয়, ১০০% কমলার রসে এতটাই চিনি থাকে যে এটি প্রায়শই সোডার সঙ্গে তুলনা করা হয়। আনারস১ কাপ আনারস টুকরোয় চিনি : ১৬.৩ গ্রাম।আনারসের আঠালো মিষ্টতা উচ্চ চিনির মাত্রার জন্য দায়ী – এবং সেই মাত্রাগুলি কেবল তখনই বেড়ে যায় যখন ফলটি জুস করা হয় বা একটি চিনির সিরায় পরিবেশন করা হয়। আপনি যদি চিনি ছাড়াই আনারস খান তাহলে বিপদ কম। তরমুজ১ কাপ তরমুজের মধ্যে চিনি : ৯ .৪২ গ্রাম।তরমুজে শর্করা বেশি থাকতে পারে কিন্তু এতে কার্বোহাইড্রেট খুবই কম থাকে, অর্থাৎ, গরমের দিনে এক টুকরো তরমুজ খাওয়া আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা আকাশচুম্বী করে দেবে না। বিশেষজ্ঞের মতে, “যদি না আপনার ডায়াবেটিস বা অন্য কোনও স্বাস্থ্যগত অবস্থা থাকে যেখানে আপনাকে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে পরিমান নিয়ন্ত্রণে রেখে ফল খেলে তা কখনই উদ্বেগের বিষয় হতে পারে না। কারণ, ফল সবসময় মিষ্টি, বেকড খাবার বা অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাবারের চেয়ে একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প।