দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এখন সেভাবে দেখা যায় না এই ফল। তবে আগেকার দিনের মানুষের এই ফল ছিল খুব পছন্দের। এটি হল ফুটি। সাধারণ যেকোনও জমিতেই চাষ করা যায় ফুটি। সাধারণত বেশ বড় আকারের হয়। কাঁচা ফুটি সবুজ হয়, পাকলে হলুদ রঙের হয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফল ফেটে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।
ফুটির বাইরের দিকটা দেখতে অনেকটাই কুমড়োর মত হালকা ডোরাকাটা হয়। খেতে তেমন মিষ্টি নয়। তবে আগেকারদিনে মানুষরা গুড় বা বাতাসা দিয়ে এই ফুটি খেত। কিন্তু এখন আর সেভাবে জমিতে চাষ হতে দেখা যায় না ফুটি। তবে এবার সুন্দরবনে এই ধরনের ফল চাষ হতে দেখা যাচ্ছে। এবং কৃষকরা ভাল মুনাফাও করছেন। কারণ এই ফল খেলে নানান উপকারও হয়।
ফুটি কাঁচা অবস্থায় রান্না করে খাওয়া যায়। তার পাশাপাশি এই ফল হজম শক্তি বাড়ায়। মিষ্টি কম থাকায় ডাইবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও এই ফল খেতে পারেন। এইটা সাধারণত শুষ্ক ও উষ্ণ জলবায়ুতে উর্বর দোআঁশ ও পলি মাটিতে ভাল চাষ হয়। আপনি যদি ফুটি চাষ করতে চান তবে এর জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল ফেব্রুয়ারি মাস। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বীজ রোপণ করতে হবে। এতে খুব একটা সারের প্রয়োজন পড়ে না। তবে ভাল ফলন ও গাছের পোকা রোধ করার জন্য রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। এবং ফল জন্মানোর পর যাতে ফল পচে না যায় যার জন্য জমিতে ফলের নিচে খড় বিছিয়ে দেওয়াটা বাধ্যতামূলক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফল এক কেজি থেকে দু কেজি, এমনকি আড়াই কেজি ওজন পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই ফল অনেক সময় ফেটে যায়। সেটা রোধ করতে গেলে জমিতে নিয়মিত পরিমাণ মত জল দিতে হবে। তাতে ফাটার সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে।
কোচবিহার: তুফানগঞ্জ সদর মহকুমাশাসকের দফতর চত্বরে থাকা পতিত জমিকে বাগানে রূপান্তর করা হল। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগানো হয়েজে এই পতিত জমিতে। তবে এই কাজ কিন্তু আজকে শুরু করা হয়নি। অনেকটা সময়ে কেটে গিয়েছে কাজ শুরু করার পরে। গত বছরের অগস্ট মাসের সময় থেকে এই বাগান তৈরির কাজ শুরু করা হয়।
তুফানগঞ্জ মহকুমা শাসকের দফতরের নাজির বাবু সুকিল চন্দ্র রাভা জানান, বর্তমান সদর মহকুমাশাসক বাগান অত্যন্ত পছন্দ করেন। গাছপালার প্রতি তাঁর প্রেম অনেকটাই বেশি। এখানে আসার পর থেকেই তিনি দেখছিলেন দফতরের পেছনের একটি জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। একেবারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে জঙ্গল ও ঝোপঝাড় হয়ে রয়েছে সেখানে। তাই তাঁর উদ্যোগে এবং দফতরের কর্মীদের সহায়তায় এখানে বাগান গড়ে তোলা হয়। বাগানের বিষয়ে একজন গাছপ্রেমী ব্যক্তি অনেকটাই সহায়তা করেছেন।
গত বছরের অগস্ট মাস থেকে এই বাগান তৈরির কাজ শুরু করা হয়। তারপর গাছগুলিও নিজেদের মতন বাড়তে শুরু করেছে। বাগানের বেশিরভাগ গাছে ফলও এসেছে। আর বাগানের গাছের এই ফলগুলি এটাই নিশ্চিত করে যে পরিত্যক্ত জমিকে বাগানে রূপান্তরিত করার সরকারি উদ্যোগ সফল হয়েছে। এখানকার গাছের ফল দেখে খুশি সদর মহকুমাশাসক থেকে শুরু করে দফতরের প্রত্যেক কর্মী।
বর্তমানে তুফানগঞ্জ মহকুমা এলাকায় এই বাগান ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বহু গাছপ্রেমী মানুষ এই বাগান দেখে অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন নিজেদেরও বাগান তৈরি করার। এছাড়াও অন্যান্য মহকুমা শহরের সরকারি দফতর গুলিও নিজেদের মতন প্রচেষ্টা শুরু করেছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে হয়তো তাঁরাও এই ধরনের বাগান তৈরি করতে সফল হবেন।
বসিরহাট: ছাদ যেন আস্ত বাগান, দেখা মিলছে একাধিক প্রজাতির ফলের গাছ। বাড়ির সামনে আসতেই ছাদের উপরে তাকালেই চোখ আটকে যায়। আস্ত বাগান মাথায় নিয়ে যেন দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটি। সেই বাড়ির সিঁড়ি পেরিয়ে ছাদে উঠে এলে নিজের চোখকেও বিশ্বাস হয় না। এ যে ছাদের ওপর রীতিমতো আস্ত বাগান!
বসিরহাটের বিবিপুরের গৃহশিক্ষক কামাল হোসেন ঘরের ছাদে ফলের বাগান তৈরি করেছেন। অবসর সময়ে কামাল হোসেন নিজ বাড়ির ছাদে শখের বসে এই বাগান গড়ে তুলেছেন। বাড়ির ছাদের জায়গাকে কাজে লাগিয়ে বিষমুক্ত ফল খাওয়া যাবে পাশাপাশি ফুল চাষেও সৌন্দর্য্য মনকে প্রশান্তি দেবে এমনটাই ভাবেন তিনি। তার বাড়ির প্রবেশ পথে, সিঁড়িতে উঠার সময় সব জায়গাতেই দেখা যাবে টবে এসব ফুল বা ফলের গাছ।
ছাদ বাগানে শোভা পাচ্ছে আপেল, চেরি, জামরুল, কুল, আম, কমলা-সহ বিভিন্ন ধরনের ফল চাষ। ছাদের বাগানে চাষ করা বিষমুক্ত ফল পরিবার সহ আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশীদের উপহার দেন। গৃহশিক্ষকতার পাশাপাশি অবসরে গাছের পরিচর্যা করেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ছাদ বাগানে গেলে মন ভরে যায় বলে জানান।