সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগে সূতানুটি, গোবিন্দপুর আর কলকাতা নামে তিনটি ছোট্ট গ্রামের একসঙ্গে মিলে পথ চলা শুরু। তিন শতাব্দী পর আজ কল্লোলিনী তিলোত্তমা কলকাতা এক সমৃদ্ধশালী মহানগরী। কিন্তু দিনের বেলায় ঝাঁ চকচকে এই শহরের আশ্রয় ছেড়ে আমাদের সঙ্গে আজকে চলুন মাঝরাতের ছায়াঘেরা পথে।আলো আঁধারি অলিগলির মধ্যে পাবেন এক অন্য কলকাতা, যেখানে শোনা যায় শতাব্দিপ্রাচীন অশরীরী আত্মাদের আর্তনাদ, গা ছমছমে পরিবেশে অনুভব করা যায় সাবেকি কলকাতার ভূতুড়ে ইতিহাস। খুব সাবধান, হৃদয়ের দুর্বলতা থাকলে রাত বাড়ার পর কলকাতার এই কটি জায়গায় না যাওয়াই ভাল।পুতুলবাড়ি-নামটি যত মিষ্টি, এই বাড়ির ইতিহাস ততধিক ভয়ানক। সাবেকি উত্তর কলকাতার ইতিহাসের সাক্ষী এই বাড়িটি আজ কলকাতার অন্যতম অভিশপ্ত বাড়ি বলে খ্যাত। গঙ্গারধারে অবস্থিত এই পোড়োবাড়িটি দেখলে মনে হবে এই বুঝি ভেঙে পড়ল।বাড়ির একতলায় গেঞ্জির কারখানায় হাতে গোনা কয়েকজন কাজ করেন। আর বন্ধ দোতলার ঘর গুলোতে সাজানো আছে অসংখ্য পুরনো পুতুল। এককালে বাবুদের আসর বসত এই দু’তলায়, হত বাইজিদের নাচ।জানা যায়নি সেই বাবুদের লালসতৃপ্তির শিকার হয়েছেন কত অগুনতি মহিলা এই বাড়িতে। তাদের হাসি, চিৎকার, পায়ের নুপুরের ঝংকারের আওয়াজ ভেসে আসে সূর্য ডুবলেই।আহিরীটোলায় অবস্থিত এই বাড়িটি নিয়ে আজও রহস্যের শেষ নেই। এই বাড়িটিতে এখনো রাত্রি হলে কেউ আর দোতলা বা তিনতলায় ওঠার সাহস পান না। শুধুমাত্র রাত্রিবেলা নয়, ভরদুপুরে অশরীরীর উপদ্রব বুঝতে পারা যায়। তবে এই বাড়িটির পিছনে একটি ছোট রহস্য গল্প রয়েছে। এক সময় বাড়িটিতে এক বড়লোক বাস করতেন।বাড়িটি পুরো দেখাশোনার জন্য ছিল প্রচুর দাসী। মনিব সেই দাসীদের উপর যৌন অত্যাচার করতেন। দাসীরা একদিন এর বিরোধিতা করেছিলেন। এর ফলে তাদেরকে হত্যা করা হয়।হত্যা করা হলে তাদের লাশ বাড়ির পিছনে মাটি চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। ধরে নেওয়া হয়, এই কারণে আজও সেই দাসীদের আত্মা এই বাড়িটিতে ঘুরঘুর করে। শোনা যায় কান্নার শব্দ।