#মিশিগান: বেশ কয়েক মিটার উঁচু থেকে গড়িয়ে পড়ছে কয়েকটি কিশোর-কিশোরী। ঢেউ খেলানো ধাতব পাতের উপর ধাক্কা খেতে খেতে তারা এমন ভাবেই নিচে পড়ছে যে, কেউ সোজা হয়ে বসে থাকতে পারছে না, কেউ একেবারে শুয়ে পড়ছে। কখনও তারা হাওয়ায় লাফিয়ে উঠছে, পর মুহূর্তেই আছড়ে পড়ছে। একেবারে নিচে মাটিতে পড়ার সময় এক কিশোরীর ঘাড়ের কাছে আঘাতও লাগে। দৃশ্য দেখে আতঙ্কে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ারই কথা। যে কোনও সময় ঘাড় মটকে যেতে পারত, ভেঙে যেত পারত শিরদাঁড়া।
কিন্তু বিষয় হল এটি কোনও দুর্ঘটনা নয়, নয় কোনও দুর্যোগও। রীতিমতো গাঁটের কড়ি খরচ বিনোদন উপভোগ করতে যাওয়া পার্কে, আনন্দ পেতেই চড়া স্লাইড (Slide)-এ। কিন্তু আনন্দের বহর দেখে তাজ্জব তামাম দুনিয়া। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্লাইডে চড়ে প্রাণটাই বেরিয়ে আসার জোগাড়।
আরও পড়ুন: ভৌতিক কারণে অন্ধকার নামার পর যে কটি জায়গায় যাওয়া নিষেধ রয়েছে ভারতে!
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ডিট্রয়েট মিশিগানে (Detroit Michigan) অবস্থিত বেল আইল (Bell Isle) পার্কের এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই হাড় হিম করে দিয়েছে নেট দুনিয়ার। গত সপ্তাহেই বেল আইল পার্কে ওই বৃহৎ স্লাইডটি চালু করা হয়। প্রথম কয়েকজন কিশোর কিশোরী তাতে চড়তেই আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন তাদের অভিভাবকেরা। ঘণ্টা চারেক পরে বন্ধ করে দিতে হয় রাইড। যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, সামান্য কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্যই এমন হয়েছে। নির্দিষ্ট আচরণ বিধি মেনে স্লাইডে চড়লে কোনও সমস্যাই থাকার কথা নয়।
রবিবারের এই ঘটনার পর ভিডিও ট্যুইটারে (Twitter) শেয়ার হয়। ১১ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছেন ওই ভিডিও। আর কমেন্ট বক্সেও জমা হয়েছে নানা রকমের মন্তব্য, যার বেশির ভাগ অংশ জুড়েই রয়েছে আতঙ্ক আর উদ্বেগ।
The giant slide at Belle Isle Park in Michigan was open for only 4 hours before workers shut it down to make adjustments.
I wonder why they decided to do such a thing ? pic.twitter.com/q7jpFdLdAO
— Art (@artcombatpod) August 19, 2022
একজন ট্যুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ভিডিও দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছিল। কিন্তু ত্রুটি আছে বুঝতে ৪ ঘণ্টা সময় লেগে গেল! হায় ভগবান!’
আর একজন লিখেছেন, ‘অঙ্ক আর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঠিক গুরুত্ব কোথায়, তা বোঝার জন্য এটি বোধহয় সবথেকে প্রযোজ্য দৃষ্টান্ত।’
তবে আতঙ্ক ধরা পড়েছে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেনেইটা মেকাডনি (Kenyatta Mcadney) বলেন, ‘আমি আমার সন্তানদের নিয়ে পার্কে এসেছিলাম। আনন্দ আতঙ্কে বদলে গেল। আমি নিচ থেকে দেখছিলাম ওরা কী ভাবে সজোরে মাটিতে এসে আছড়ে পড়ল।’ বাবার পাশে আতঙ্কিত দাঁড়িয়েছিল কেমার (Keymarr), সে বলে, ‘যে ভাবে নামার কথা তার থেকে অনেক জোরে পড়ে গেলাম। ব্যথা লেগেছে।’
পার্ক কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, স্লাইডের গতিতে কিছু গোলমাল হয়েছিল। তা মেরামত করা গিয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় তা ফের চালু করে দেওয়া হয়। বলা হয়, ৪৮ ইঞ্চির থেকে কম উচ্চতা সম্পন্ন কোনও কিশোর এই স্লাইডে চড়তে পারবে না। আর বসার সময় সামনের দিকে একটু ঝুঁকে বসতে হবে।