কাঠের কাজ করছেন বৃদ্ধ দৃষ্টিহীন অনিল দাস

Viral News: আশ্চর্য! যেন দৃষ্টিহীন বিশ্বকর্মা, দু’চোখই অচল, তাও নিখুঁত মাপে ঠাকুরের আসবাব বানিয়ে রোজগার বৃদ্ধের

হুগলি: বিশ্বকর্মাকে বলা হয় তিনি নাকি দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার। সৃষ্টির রূপ নির্মাতা ঠাকুর বিশ্বকর্মা। আর হুগলির পাণ্ডুয়ার সরাই গ্রামের ৬০ বছরের বৃদ্ধ অনিল দাস হলেন এলাকার দৃষ্টিহীন বিশ্বকর্মা। জন্ম থেকে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও তাঁর হাতে যাদু রয়েছে। দুই চোখে দেখতে না পেয়েও শুধুমাত্র অনুভূতি দিয়েই তিনি তৈরি করে চলেছেন কাঠের আসবাবপত্র। যা তাঁর জীবিকা ও বটে।

আরও পড়ুন: একটি নয়, পাঁচটি! চার-পেয়ে ঘোড়ার দলে ৫টি তিন-পেয়ে ঘোড়া খুঁজে পাবেন ১০ সেকেন্ডে? দেখুন তো চেষ্টা করে!

ছোটবেলায় পড়াশোনার সেভাবে সুযোগ পাননি বৃদ্ধ অনিল দাস। তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর ইতি টানতে হয়েছিল পঠনপাঠনে। এরপরেই বাবার দোকানে কাঠের কাজে হাতেখড়ি হয়। প্রথম দিকে দোকানে অন্যান্য ভাইয়ের সঙ্গে বসে হাতের অনুভূতির সাহায্যে কাজ শেখা শুরু। নির্দিষ্ট মাপকাঠি দিয়ে সমস্ত ধরনের আসবাবপত্ৰ তৈরি করতেন। পরবর্তীকালে নিজেই দোকান খুলে বসেন। তখন থেকেই তিনি ঠাকুরের ছোট চৌকি, লক্ষী ও গোপালের সিংহাসন বানাতে শুরু করেন। যদিও চৌকির অর্ডার আসে বেশি তাঁর কাছে। বর্ধমান, মেমারী, চন্দননগর-সহ বিভিন্ন জায়গায় যায় তাঁর হাতে তৈরি কাঠের জিনিস। কাঠ কাটা থেকে পেরেক মারা সবেতেই সাবলীল অনিল। বর্তমানে তার কাছে দুজন কাজ করে।

অনিল বলেন, ”ছোট থেকে বাবার দোকানে কাজে হাতেখড়ি। ১৫ বছর বয়স থেকেই এই কাজ করে আসছি। জলচৌকি তৈরি করাই আমার মূল কাজ। তার সঙ্গে লক্ষীর সিংহাসন, গোপালের খাট সবই তৈরি করি। বাবার দোকানে থাকার সময় খাট, দরজা-জানলা, বেঞ্চি সবই তৈরি করতাম। কিন্তু এখন আমার কাছে সিংহাসন, গোপালের খাট এসবের অর্ডার আসে। তবে সরকারি সাহায্য বলতে প্রতিবন্ধী ভাতা পাই হাজার টাকা করে। যদিও এই ব্যবসায় সেভাবে কিছু উপার্জন হয় না। অন্য কিছু কাজ জানা নেই, তাই এই কাজ করেই দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন যোগাই। সরকার যদি আমাকে সাহায্য করে তাহলে ভাল হয়।”

অনিলের ভাইপো সৌমেন দাস বলেন, ”জেঠুই আমাকে হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছেন। কাঠের মাপ থেকে সব কিছুই তিনি করান। আমার ভুল হয়, কিন্তু ওনার কোনও ভুল হয় না। এমনি অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছে।”

রাহী হালদার