স্বাভিক ছন্দে ফিরছে কিশোর

Superstition: ‘ভূতে ধরেছে’ ভেবে ওঝার বিধানে শিকলে বাঁধা! কুসংস্কার কাটিয়ে অবশেষে মুক্ত কিশোর

রাহী হালদার, হুগলি : কুসংস্কার কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে ব্যান্ডেল কেওটার হেমন্ত বসু কলোনি। দিন কয়েক আগেই ‘ভূতে ধরেছে’ সন্দেহে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল বছর ষোলোর এক কিশোরকে। বুধবার চুঁচুড়া সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা ওই কিশোরের বাড়িতে যান।স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দিতা মণ্ডলের সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা।

হেমন্ত বসু কলোনি এলাকায় এক কিশোর গত কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। হাত পা ছুঁড়ে গালিগালাজ করতে থাকে। সামনে কাউকে পেলে তাকে মারধরও করতে যায়। একদিন সন্ধ্যায় শিক্ষকের কাছে পড়ে বাড়ি ফিরে হঠাৎ করেই তার এই আচরণ শুরু হয়। ভূতে ধরেছে এই সন্দেহে বাড়ির লোকেরা তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে।ওঝার থেকে জল পড়া এনে খাওয়ানো, মাদুলি পরানো সবই করা হয়। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয় না। এরপর চিকিৎসককে দেখালে কিশোর ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। তার শিকল খুলে দেওয়া হয়।

এখনও মানুষের মধ্যে কুসংস্কার রয়েছে ভূত প্রেতের। এগুলি দূর করতে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে সচেতন করা হয় এলাকাবাসীদের। এই বিষয়ে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরে কিশোরের বাড়িতে আসি।ওঝা ঝাড়ফুঁক এসবের ফলে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তেমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সচেতন থাকতে হবে।’’

আরও পড়ুন : বট পাকুড়ের ছায়ায় গৌড়ীয় ইটের প্রাচীন মন্দির, সতীপীঠের বিশেষ পুজো ও যজ্ঞে হয় অগণিত ভক্ত সমাগম

মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘এখনও মানুষের মধ্যে কিছু কুসংস্কার রয়েছে।কিশোরের বাবা কুসংস্কার আচ্ছন্ন হয়ে ওঝার কাছে গেছেন তাতে সময় এবং অর্থ দুটোই ব্যয় হয়েছে।স্থানীয় কাউন্সিলর বা প্রশাসনের লোকজনকে জানালে হয়তো আরও আগে কিশোরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত।এখন নিউরো সাইক্রিয়াটিস্টকে দেখানো হচ্ছে কিশোরকে৷ অনেকটাই সুস্থ আছে সে। ক্লাস টেনের ছাত্র ভাল ভাবে পড়াশোনা করুক, এটাই আমরা চাই।’’ কিশোরের বাবা কার্তিক মালাকার বলেন, ‘‘সবাই পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন৷ ভাল লাগছে। ছেলে আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ হয়েছে।’’