Tag Archives: Superstition

Child Death: কুসংস্কারের বলি শিশু! জলে ডুবে যাওয়ার পর হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে চলল তুকতাক

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আবার‌ও কুসংস্কারের বলি হল এক শিশু। জলে ডুবে যাওয়া শিশুকে উদ্ধার করতে পারলেও তাকে নিয়ে যাওয়া হল না হাসপাতালে। বদলে তুকতাক করা হয়। সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত মারা যায় দেড় বছরের শিশুটি। বাসন্তীর দক্ষিণ নারায়ণতলা গ্রামের ঘটনা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে সকলের চোখ এড়িয়ে পুকুরে পড়ে গিয়েছিল বছর দেড়েকের শিশুটি। পরে বাড়ি লাগোয়া পুকুরের জলে ভেসে ওঠে তার দেহ। সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ও গ্রামের কয়েকজন মিলে তাকে পাড়ে তুলে এনে তুকতাক শুরু করে দেয়। শিশুটিকে মাথার উপর তেলে বনবন করে ঘোরানো হয়। পুকুরে লাঠি দিয়ে জল পেটানো হয়। গ্রামে একে ‘জল রাক্ষস’ মারা বলে। এইভাবে কয়েক ঘণ্টা মূল্যবান সময় চলে যায়। পরে গ্রামের কিছু মানুষ কার্যত জোর করে শিশুটিকে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।

আর‌ও পড়ুন: মুষলধারে বৃষ্টিতে ভেসে গেল পুকুরের সব মাছ! পথে বসার যোগাড় মৎস্যজীবীদের

খবর পেয়ে বাসন্তী থানার পুলিশ এসে শিশুটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃত শিশুর বাবা বলেন, বাড়ির সকলেই বিশ্বাস করেন, জলে ডুবলে জল পেটানো, মাথায় নিয়ে ঘোরাঘুরি করলে প্রাণ ফেরে। আমরা সে সব করছিলাম। তবে আগেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। বাসন্তীর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, বহু মানুষ এখনও কুসংস্কারের আচ্ছন্ন। তুকতাকে বিশ্বাস করে এইভাবে সময়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন না। দ্রুত শিশুটিকে হাসপাতালে আনলে হয়ত প্রাণে বাঁচানো যেত।

সুমন সাহা

Sudden Fire Incident: ভুতুড়ে কাণ্ড! হঠাৎ হঠাৎ আগুন লেগে যাচ্ছে বাড়ির জিনিসপত্রে, সমাধানে ‘বিজ্ঞান’ও ফেল…

বাঁকুড়া: অবাক করা আতঙ্কের সম্মুখীন গোটা পরিবার। সকাল-সন্ধে নিয়ম করে বাড়ির বিভিন্ন দাহ্য জিনিসপত্রে আগুন লেগে যাচ্ছে। বাঁকুড়ার সিমলাপালের জামবেদিয়া গ্রামের জনৈক তপন লোহারের বাড়িতে এমন কাণ্ড ঘটছে। অনেক চেষ্টা করেও বিষয়টির কিনারা না হওয়ায় আতঙ্ক গ্রাস করেছে লোহার পরিবারের সদস্যদের। বিষয়টি জানাজানি হতেই ঘটনার কারণ খুঁজতে জামবেদিয়া গ্রামে গিয়েছিল সিমলাপাল থানার পুলিশ, ব্লক প্রশাসন, বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী থেকে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। যায় খাতড়া দমকল কেন্দ্রের একটি ইঞ্জিনও। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি।

লোহার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ প্রথম আগুন লাগে বাড়ির বারান্দায়। সেই আগুন প্রতিবেশীদের সহায়তায় নিয়ন্ত্রণে আসে। তারপর থেকে নিয়ম করে প্রতিদিন কোনও কারণ ছাড়াই হঠাৎ হঠাৎ আগুন লাগছে বিভিন্ন দাহ্য জিনিসপত্রে। তাতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে পরিবার সহ গ্রামবাসীদের মধ্যে। মঙ্গলবার সন্ধে নাগাদ ফের আগুন লেগে যায় বাড়ির মধ্যে। খবর দেওয়া হয়েছিল খাতড়া দমকল কেন্দ্রে। দমকলের একটি ইঞ্জিন সহ কর্মীরা মঙ্গলবার সারারাত ওই ব্যক্তির বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে সিমলাপাল থানার পুলিশকর্মীরাও ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

আর‌ও পড়ুন: শিক্ষক-দারোয়ান-রাঁধুনি সব তিনিই! ভিলেন রাস্তার জন্য প্রধান শিক্ষকের এ কী হাল

বুধবার সকাল ছ’টা নাগাদ ফের হঠাৎ আগুন লেগে যায় বাড়ির গোয়াল ঘরে। দমকলকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে আগুন নেভান। তবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি বলে দমকল সূত্রে খবর। পরপর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে বাঁকুড়ার লোহার পরিবারের সদস্যদের। বুধবার সকালে বাড়িটিতে যান সিমলাপালের বিডিও মানস চক্রবর্তী। পরিবার সহ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞান মঞ্চের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বুধবার বিকেলে জামবেদিয়া গ্রামে ওই ব্যক্তির বাড়ি সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। সকলের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সমস্যার সমাধানের বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়ে আসেন। তবে কীভাবে এবং কেন আগুন লাগছে সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকেও কিছু জানানো সম্ভব হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে নানান রকম গুজব, কুসংস্কার ছড়াতে শুরু করেছে। যদিও বিজ্ঞান মঞ্চ এবং ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা সব সময় পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তবে এটি কোন‌ও ভৌতিক বিষয় নয়। নিশ্চয়ই কোনও বৈজ্ঞানিক কারণে এমন ঘটনা ঘটছে। সেটি দ্রুত খতিয়ে দেখে সমাধান করার চেষ্টা চলছে।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

Superstition: ‘ভূতে ধরেছে’ ভেবে ওঝার বিধানে শিকলে বাঁধা! কুসংস্কার কাটিয়ে অবশেষে মুক্ত কিশোর

রাহী হালদার, হুগলি : কুসংস্কার কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে ব্যান্ডেল কেওটার হেমন্ত বসু কলোনি। দিন কয়েক আগেই ‘ভূতে ধরেছে’ সন্দেহে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল বছর ষোলোর এক কিশোরকে। বুধবার চুঁচুড়া সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা ওই কিশোরের বাড়িতে যান।স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দিতা মণ্ডলের সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা।

হেমন্ত বসু কলোনি এলাকায় এক কিশোর গত কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। হাত পা ছুঁড়ে গালিগালাজ করতে থাকে। সামনে কাউকে পেলে তাকে মারধরও করতে যায়। একদিন সন্ধ্যায় শিক্ষকের কাছে পড়ে বাড়ি ফিরে হঠাৎ করেই তার এই আচরণ শুরু হয়। ভূতে ধরেছে এই সন্দেহে বাড়ির লোকেরা তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে।ওঝার থেকে জল পড়া এনে খাওয়ানো, মাদুলি পরানো সবই করা হয়। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয় না। এরপর চিকিৎসককে দেখালে কিশোর ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। তার শিকল খুলে দেওয়া হয়।

এখনও মানুষের মধ্যে কুসংস্কার রয়েছে ভূত প্রেতের। এগুলি দূর করতে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে সচেতন করা হয় এলাকাবাসীদের। এই বিষয়ে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরে কিশোরের বাড়িতে আসি।ওঝা ঝাড়ফুঁক এসবের ফলে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তেমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সচেতন থাকতে হবে।’’

আরও পড়ুন : বট পাকুড়ের ছায়ায় গৌড়ীয় ইটের প্রাচীন মন্দির, সতীপীঠের বিশেষ পুজো ও যজ্ঞে হয় অগণিত ভক্ত সমাগম

মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘এখনও মানুষের মধ্যে কিছু কুসংস্কার রয়েছে।কিশোরের বাবা কুসংস্কার আচ্ছন্ন হয়ে ওঝার কাছে গেছেন তাতে সময় এবং অর্থ দুটোই ব্যয় হয়েছে।স্থানীয় কাউন্সিলর বা প্রশাসনের লোকজনকে জানালে হয়তো আরও আগে কিশোরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত।এখন নিউরো সাইক্রিয়াটিস্টকে দেখানো হচ্ছে কিশোরকে৷ অনেকটাই সুস্থ আছে সে। ক্লাস টেনের ছাত্র ভাল ভাবে পড়াশোনা করুক, এটাই আমরা চাই।’’ কিশোরের বাবা কার্তিক মালাকার বলেন, ‘‘সবাই পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন৷ ভাল লাগছে। ছেলে আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ হয়েছে।’’