শরীর ভাল রাখতে কোন খাবার গ্রহণ করা উচিত জানুন

Health Tips: হার্টের কোনও সমস্যা রয়েছে? রোজের পাতে কী রাখবেন? বাদ দেবেন কোন খাবার? আজই সাবধান হন

হাওড়া: বর্তমান জীবনযাত্রায় যে কোনও শারীরিক অসুস্থতার প্রভাব এসে পড়ে হার্টের উপর। উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল, অনিয়মিত হার্টবিট এগুলি হার্টের রোগীদের জন্য সাধারণ উপসর্গ। আর এই পরিস্থিতিতে হৃদরোগীদের অত্যন্ত সাবধানতা অবলন্বন করা উচিত। সুষম আহার ও সঠিক ডায়েট প্ল্যানই আপনার জীবনকে সুন্দর ও সুস্থ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রে কোন খাবার একেবারেই নিষেধ, আর কোন খাবার হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করবে? সে বিষয়ে শুনে নেব হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অরুণাংশু ধোলের পরামর্শ। হৃৎপিণ্ড আমাদের দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। হার্টের সুস্থতা আমাদের বেঁচে থাকার কারণ। কিন্তু খারাপ খাদ্যাভ্যাস ও অস্বাভাবিক জীবনধারার কারণে রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি থাকতে পারে। বর্তমানে হার্ট অ্যাটাক খুব সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুনঃ জেদি পাইলসের যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছেন! এই জিনিস ফ্রিতে মেলে মুঠো মুঠো! ১৫ দিনেই সমস্যা গায়েব

কোলেস্টেরল আর ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়লে হার্টের সমস্যা আসবেই। আবার জীবনযাত্রা যদি অনিয়ন্ত্রিত হয়, অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকে সেই সঙ্গে উল্টোপাল্টা খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে কিন্তু খুব সাধারণ ভাবে হার্টের সমস্যা আসতে বাধ্য। তাই হার্ট অ্যার্টাক রুখতে প্রথম থেকেই এই কয়েকটি খাবার তালিকা থেকে একেবারেই বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অরুণাংশু ধোলে।

যে সব খাবারে বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি থাকে সেইসব খাবার খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও। চিজ, দই, লাল মাংস, মাখন, কেক, বিস্কিট ও নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। লবণ বেশি খেলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। ফলে বৃদ্ধি পায় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও। একজন হৃদরোগীর ডায়েটে ডিম থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু শরীরে স্যাচুরেটেড ফ্যাট-সমৃদ্ধ ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলাই ভাল।

তবে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমা হবে, এই ভেবে হঠাৎ করে ডিম খাওয়া বন্ধ না করাই উচিত। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও এ রয়েছে, হৃদরোগীদের জন্য উপকারীও বটে। তাই খুব কম পরিমাণেই ডিম খান। ময়দার মাধ্যমে শরীরে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল জমা হয়। কোলেস্টেরল একপ্রকার ফ্যাট, যা শরীরের মধ্যে রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়। রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে হার্টেরও সমস্যা তৈরি করে।

আরও পড়ুনঃ ওষুধকে বলুন ‘টাটা’! এই ৮ ড্রাইফ্রুটস ক্যালসিয়ামের খনি, রোজের ডায়েটে একটি রাখা মাস্ট

নিয়মিত হারে ময়দার তৈরি জিনিস খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তৈরি হয়। হার্ট সুস্থ রাখতে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে। তবে শুধু দৈনন্দিন কার্যাবলিতে পরিবর্তন আনলেই হবে না, খাবারেও পরিবর্তন আনতে হবে। তাই সবার সেই খাবারগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। রোজ সবুজ শাকসবজি খাচ্ছেন তো? পালং শাকের মতো একাধিক সবুজ শাক হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। বাদামও হার্টের সমস্যার ঝুঁকি কমায়।

বাদামে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর বাদামগুলো হলঃ আমন্ড, আখরোট, হ্যাজেলনাট। গোটা শস্যদানাও হার্টের জন্য উপকারী। গোটা শস্যদানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। উচ্চ রক্তচাপ এড়ানোর জন্য প্রয়োজন। বেরী জাতীয় ফল হার্টের জন্য ভাল। তালিকায় রাখতে পারেন, পেয়ারা, আপেল, কমলালেবু, কলা খেতে পারেন ন্যাসপাতিও। এই ফলে রয়েছে প্রচুর ফাইবার। এ ছাড়া ভিটামিন ডি, সি, কে এবং পটাশিয়াম থাকায় প্রেশার নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

বিটের রস নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে পাশাপাশি বিট হার্টের জন্য খুবই উপকারী। গবেষণা বলছে, নিয়মিত এক গ্লাস বিটের রস রক্তনালিতে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক খাবার হার্টের যেকোনও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারীহার্ট ভাল রাখতে ডায়েটে প্রচুর বীজ জাতীয় খাবার রাখুন। বীজ ফাইবার এবং ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের জন্য খুবই উপকারী।

রাকেশ মাইতি