মা দুর্গার প্রতিমা

Bankura News: কাঁচামালের দাম আকাশ ছুঁয়েছে! বাঁকুড়ায় প্রতিমা তৈরি ঘোর সংকটে, শিল্পীরা কী বলছেন

বাঁকুড়া: প্রতিমা গড়নের ক্ষেত্রে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এই শিল্প ধুঁকছে রীতিমতো। বিশেষ করে ছোট শহরগুলিতে। যেমন বাঁকুড়া সদর। সব কিছু ঠিকই ছিল বেশ। তবে বিগত এক থেকে দু’বছরের মধ্যে যেন চিত্রটা পাল্টে গিয়েছে। প্রতিমা তৈরির কাঁচামালের দাম যেন আকাশ ছুঁয়েছে এই দু’বছরে। বিশেষ কিছু কাঁচামালের দাম বেড়েছে দেড় থেকে দু’গুণ। ফলে প্রতিমা গড়ে বিক্রি করে যথেষ্ট মুনাফা লাভ করতে পারছেন না মৃৎশিল্পীদের একাংশ।

একটি প্রতিমা তৈরি করতে যা যা প্রয়োজন হয় তার মধ্যে পাটার দাম পাঁচ-সাত টাকা কেজি থেকে  ১৫-২০ টাকা কেজি। প্রতিমার কাঠামো তৈরি করতে প্রয়োজন বাঁশ। এই বাঁশ প্রতি পিস ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে মৃৎশিল্পীদের। যদিও ওই দাম এক বছর আগে ছিল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। তাছাড়া ৪০-৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে খড়। বাঁশ, খড়, দড়ি এবং পাটা বাদ দিয়ে রয়েছি আনুষঙ্গিক বহু খরচ যেমন পেরেক, রং , মাটি ইত্যাদি। সব মিলিয়ে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিতে নাজেহাল বাঁকুড়া শহরের মৃৎশিল্পীরা।

বিগত ৩০ থেকে ৪০ বছর প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন বাঁকুড়া শহরের ফাঁসি ডাঙার মৃৎশিল্পী সুভাষ পাল। তবে এবার প্রতিমা তৈরি করা বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন তিনি। সুভাষ পাল জানান, এইভাবে চলতে থাকলে খুবই কঠিন হবে মৃৎশিল্পীদের পক্ষে জীবিকা নির্বাহ করা। কাঁচামাল কিনতে গিয়ে খরচ হয়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ, উল্টোদিকে দিন দিন কমছে অর্ডার দেওয়া প্রতিমার দাম। সামঞ্জস্য তৈরি করতে ব্যর্থ তাঁরা। সুভাষ বলেন, “আমরা বহুবার সরকারি দফতরে কিংবা নেতামন্ত্রীকে জানিয়েছি। কিন্তু কোথাও কোনও ভাবে সঠিক দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। অন্যান্য জেলাগুলিতে যেমন পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানে প্রতিটি কাঁচামালের নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করা রয়েছে। আমাদের জেলাতে সেই ধারা বজায় থাকলে খুব সুবিধা হত।”

একদল মানুষ বছরের পর বছর ধরে একটি জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে সেই জীবিকা যদি অর্থহীন পড়ে হয়ে পড়ে তাহলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার কথা। ঠিক তেমনটাই ঘটছে বাঁকুড়া শহরের মৃৎশিল্পীদের একাংশের। যে মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা গড়তেন, তাঁরা লড়াই করছেন এক অসম টানাপোড়েনের সঙ্গে। ভবিষ্যৎ এই শিল্পকে কোন দিকে নিয়ে যায় সেটাই দেখতে মুখিয়ে রয়েছে সাধারণ মানুষ।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়