প্রসন্ন কুমার গিরি

Independence Day 2024: পেশায় আয়ুর্বেদ চিকিৎসক, তাও দেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন আন্দোলনে, কে জানেন?

পশ্চিম মেদিনীপুর: তখন পরাধীন ভারতবর্ষ। অবিভক্ত মেদিনীপুরে জন্ম তাঁর। দেশকে স্বাধীন করতে এগিয়ে এসেছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। ঘরের লোক জানতেনই না তাঁর বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের কথা। স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়ে দু’বার হাজতবাসও হয়েছে। পেশাগতভাবে আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হলেও দেশকে বাঁচানোর জন্য তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।

পূর্ব মেদিনীপুরে জন্ম হলেও তিনি জেলবন্দি অবস্থা কাটার পর চলে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুরের বাংলা ওড়িশা সীমানা এলাকার দাঁতনে। সেখানে ইংরেজ হটাতে স্বাধীনতা আন্দোলনের পাশাপাশি আর্ত-পীড়িত মানুষদের সেবা করতেন। মানুষের আপদে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। মহামারী হোক কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে, সাহায্য করতে এগিয়ে যেতেন তিনি। দাঁতনে কংগ্রেসের দল প্রতিষ্ঠা লগ্নে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কখনও খেয়েছেন মালাই পনির স্যান্ডউইচ? জেনে নিন কীভাবে তৈরি হয় এই বিশেষ স্যান্ডউইচ

ইতিহাস ঘাঁটলে সীমানা বাংলা এলাকায় যে কজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম প্রসন্নকুমার গিরি। যার জন্মের সাল পাওয়া না গেলেও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তার জন্ম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নস্করপুর গ্রামে। তৎকালীন পরাধীন ভারতবর্ষে তিনি আয়ুর্বেদ নিয়ে পড়াশোনা করেন। হয়েছিলেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক। তবে তখনই তিনি জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা আন্দোলনে। স্বাধীনতা আন্দোলনে থাকার কারণে কারাবাস হয় তার। জেলবন্দী অবস্থায় পরিচয় হয় অপর স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র মহান্তির সঙ্গে। এরপর তিনি চলে আসেন দাঁতনে।

দাঁতনে এসে প্রান্তিক গ্রামীণ এলাকায় মানুষদের সেবা শুশ্রূষার পাশাপাশি কংগ্রেসকে ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কয়েকজন মিলে দাঁতনে কংগ্রেস দল প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়ে দু’বার জেল খেটেছেন। দাঁতনে তৃণমূল স্তরে কংগ্রেস সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তিনি ১৯২১ সালে দাঁতন থানার কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক হন। তিনি ১৯৪৩ সালে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং বিনামূল্যে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে সক্রিয় ভূমিকা নেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সক্রিয় রাজনীতিও করেছেন।

স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পীঠস্থান দাঁতন লাইব্রেরি গড়ে তোলার পিছনে বেশ ভূমিকা ছিল তাঁর। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে স্বাধীনতা সংগ্রামীর মর্যাদাও পেয়েছিলেন। এখনও তাঁর বাড়িতে তাঁর উত্তর পুরুষেরা বিভিন্ন ধরনের দরকারি কাগজপত্র, বিপ্লবী প্রসন্ন গিরির বিভিন্ন ইতিহাসকে গুছিয়ে রেখেছেন। তবে স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।

রঞ্জন চন্দ