জেনারেল নলেজ বা সাধারণ জ্ঞান আমাদের যেমন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা অথবা সরকারি-বেসরকারি যেকোনও চাকরি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তেমনই এর চর্চা পড়ুয়াদের চৌখস ও বুদ্ধিদীপ্ত করে তোলে নিঃসন্দেহে।তাই মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পাঠ্য বিষয়ের পাশাপাশি কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও জেনারেল নলেজের প্রশ্নগুলিও জেনে রাখার চেষ্টা করেন। আজ এই প্রতিবেদনে তেমনই সহজ সরল কিন্তু অনেকেরই অজানা কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসা হয়েছে যা শুনলে অনেকেই দেখবেন উত্তর তাঁদের কাছে নেই আবার হয়তো সঠিক উত্তর শুনে অনেকেই লাফিয়ে উঠবেন।বর্তমানে বই পড়ার পাশাপাশি টেলিভিশন ও সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমেও জানা যায় এমন সব আশ্চর্য জ্ঞান যা বার বার অবাক করে। আজ এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু মজাদার তথ্য শেয়ার করা যাক যার উত্তর বোধহয় আমরা অধিকাংশই জানি না।আবার অন্যান্য দেশের সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও পাশাপাশি নিজের দেশ নিয়ে গর্বিত হয়েও অনেকেই কিন্তু জানেন না দেশ-সম্পর্কিত নানা খুঁটিনাটি তথ্য। আচ্ছা বলুন তো, ভারতবর্ষে তো এত রাজ্য, এর মধ্যে কোন রাজ্য সবচেয়ে বেশি ধনী? কিংবা বলতে পারেন এই দেশের জাতীয় সবজিটির নাম কী? অথবা কোন রাজ্যকে ‘ভারতের জাপান’ বলা হয়?- চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই কিছু নতুন নতুন অজানা তথ্যের হদিস।প্রশ্ন: ভারতের ধনী রাজ্য কোনটি? ভারতে এমন অনেক রাজ্য রয়েছে যাদের জিডিপি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রতি বছর বৃদ্ধি পায়। এই রাজ্যগুলি সামগ্রিকভাবে ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে তোলে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই রাজ্যগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, যারা কৃষি ও শিল্পকে একসঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ আমরা আপনাকে দেশের এমন একটি রাজ্য সম্পর্কে বলব যা সম্পদের দিক থেকে টেক্কা দিচ্ছে অন্য সব রাজ্যকে।মহারাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য। সম্পদের নিরিখে রাজ্যের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে এই রাজ্য। ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জিএসডিপি-সহ মহারাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য। এই রাজ্যের রাজধানী মুম্বইকে দেশের অর্থনৈতিক রাজধানীও বলা হয়। এটি দেশের তৃতীয় সর্বাধিক শহুরে জনবহুল রাজ্য, যেখানে জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করেন। চলচ্চিত্র তারকা থেকে শুরু করে দেশের বেশির ভাগ বিত্তবানের বসবাস এখানে।প্রশ্ন: আমাদের জাতীয় সবজি কী? উত্তর: প্রায়শই মানুষ আলু এবং সবজির নাম শুনে খুশি হন। কিন্তু অনেকেরই ব্যাজার মুখ হয়ে যায় যদি শোনেন পাতে পড়তে চলেছে কুমড়ো। কিন্তু জানলে অবাক হবেন এই কুমড়ো আমাদের দেশের জাতীয় সবজি। এটিকে আয়ুর্বেদে একটি ঔষধি ফলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এটি কোলেস্টেরল কমায় এবং ডায়াবেটিস ও হার্ট সংক্রান্ত রোগেও উপকারী।প্রশ্ন: ভারতের জাপান কোন রাজ্যকে বলা হয়? উত্তর: অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যকে ভারতের জাপান বলা হয়। ভারতের এই বিশেষ রাজ্যে দেশের মধ্যে সবার আগে সূর্যোদয় হয়। আসলে প্রতিদিন সকালে সূর্যোদয় আমরা প্রায়ই দেখি আর পৃথিবীর সর্বত্র যে একসাথে সূর্য ওঠে তা কিন্তু নয়। এলাকাভিত্তিক সূর্যোদয় হবার এই তারতম্যের কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে।প্রশ্ন: জানেন ভারতের কোন নদীকে ‘অদৃশ্য নদী’ বলা হয়? উত্তর: সরস্বতী নদীকে ভারতের অদৃশ্য নদী বলা হয়। প্রায় সবাই এই নদীর নাম শুনেছেন, কিন্তু কেউ কখনও বয়ে যেতে দেখেনি। তবে অতীতে এই নদীর অস্তিত্ব ছিল বলে, বিভিন্ন পুরানে উল্লেখ রয়েছে।প্রশ্ন: ভারতের কোন গ্রামে জুতো পরা নিষেধ? উত্তর: অন্ধ্রপ্রদেশের ভেনামা ইনডুলু আর তামিলনাড়ুর আন্দামান গ্রামে জুতো পরা নিষেধ। তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে (চেন্নাই থেকে গাড়িতে সাড়ে সাত ঘণ্টার দূরত্বে), আন্দামান নামের এই গ্রামে কেউই জুতা পায়ে দেন না! আন্দামান গ্রামে মাত্র ১৩০টি পরিবারের বাস। গ্রামের বাসিন্দাদের বেশিরভাগই কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।প্রশ্ন: সারাদিন জল খেলেও আমাদের মাঝে মাঝে তৃষ্ণা পায় কেন? উত্তর: যখন আমাদের শরীর থেকে ১ শতাংশ জল কমে যায় তখনই আমাদের তৃষ্ণা পায়। জল পান করলে ওজন যেমন কমে, তেমনই জল আমাদের আরও অনেক রোগ থেকে দূরে রাখে।জল আমাদের জীবনকে ভারসাম্যপূর্ণ করে, কিন্তু এর পরিমাণ যদি শরীরে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে তাহলে তা জীবনের জন্য সংকট তৈরি করতে পারে। আমাদের শরীর তৃষ্ণার অনুভূতির মাধ্যমে আমরা জলের পান করার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারি।লাল, হলুদ ও সবুজ আলো কেন? ট্রাফিক সিগন্যালে শুধু লাল, হলুদ ও সবুজ বাতিই কেন? লাইফসায়েন্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্র্যাফিক সিগন্যালে যে রঙটি প্রাথমিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল তা জাহাজের নেভিগেশন সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল।লাল এবং সবুজ রং ব্যবহার করার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য অন্যান্য রঙের তুলনায় অনেক বেশি। এই দুটি রঙই দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যায়। এ কারণে জাহাজগুলি নৌচলাচলের জন্য ব্যবহার করা হত। পুরনো লাইট হাউসেও একই রং ব্যবহার করা হত। পরে সেগুলিও ট্রাফিক সিগন্যালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।মজার ব্যাপার হল, শুরুতে ট্রাফিক সিগন্যালে হলুদ বাতি ছিল না। শুধু লাল আর সবুজ বাতিই ছিল। ১৯২১ সালে উইলিয়াম পট যখন তিন রঙের সংকেত নিয়ে আসেন, তখন তিনি এতে হলুদ রঙ যোগ করেন।
