আন্দোলন চলবে?

Junior Doctors Protest: ‘কোনও রাজনীতি নেই এই আন্দোলনে’, কেন ৩০ সদস্যের শর্ত? আলোচনা ভেস্তে যেতেই স্পষ্ট করে দিলেন কিঞ্জল নন্দ

কলকাতা: নবান্নে থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের খোলা মনে আলোচনায় বসায় আর্জি জানানোর পাশাপাশি এই আন্দোলনে রাজনৈতিক ‘মদতের’ অভিযোগও তোলেন। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে কিঞ্জল নন্দ সাফ জানিয়ে দেন, ”এই আন্দোলনে কোনও রাজনীতির রঙ নেই।” একই সঙ্গে তাঁদের চার দফা শর্ত মানলেই আলোচনায় যোগ দেবেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, কেন ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে তাঁরা আলোচনায় বসতে চান, তা নিয়েও স্পষ্টতই কিঞ্জল জানান, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের একজন করে প্রতিনিধিদের থাকতে দিতে হবে। সেই কারণেই নির্দিষ্ট ভাবে প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা জানানো হয়েছে।

কিঞ্জলের সংযোজন, ”আমাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ আছে। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের কোনও সংযোগ নেই। আমরা যা দাবি করছি, তা সকলের সঙ্গে আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া।”

জুনিয়র ডাক্তাররা যে দফা শর্ত দিয়েছিলেন, তা হল, প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বৈঠকে থাকতে হবে, দ্বিতীয়ত, ৩০ জনের প্রতিনিধি দলকে নবান্নে যেতে দিতে হবে, বৈঠকের লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে এবং কর্মবিরতি প্রত্যাহার নয়, আলোচনা হবে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁরা বৈঠকে যাননি। এর পরেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।

আরও পড়ুন: সর্বনাশ! সন্দীপ ঘোষের ল্যাপটপে এগুলো কী! দেখে মাথায় হাত তদন্তকারীদের, এমন কী মিলল?

মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়ে দেন, পূর্ব নির্ধারিত কোনও শর্ত মেনে আলোচনায় বসতে রাজি নয় রাজ্য সরকার৷ বরং রাজ্য চায় জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে সমস্যার নিরসন করতে৷ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই বক্তব্য জানিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের তোলা চার দফা শর্ত কার্যত খারিজ করে দেওয়া হল৷ ফলে জটিলতা কাটার বদলে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের মধ্যে চলতে থাকা স্নায়ুর লড়াই আরও জটিল হল বলেই মনে করা হচ্ছে৷

মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করেছিলাম যাতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জুনিয়র চিকিৎসকরা কাজে ফিরে এসে পরিষেবা দিতে শুরু করুন৷ আমরা গঠনমূলক এবং খোলামেলা আলোচনা করতে চেয়েছিলাম৷ নিরাপত্তা নিয়ে চিকিৎসকদের যে মূল দাবি ছিল, তার জন্য আমরা কী করেছি তা ওনাদের জানাতাম৷ ওনাদের পরামর্শও আমরা শুনতাম৷ কিন্তু আমরা ওনাদের থেকে ইতিবাচক উত্তর পাইনি৷ যে ই মেল পাঠানো হয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে, তাতে চারটি শর্ত, পাঁচ দফা দাবির কথা বলা হয়েছে৷ কোনও শর্ত রেখে আলোচনা করা যায় না৷ পারস্পরিক মত বিনিময় করতে চেয়েছিলাম আমরা৷ যাতে সমস্যাগুলি দূর করা যায়৷ কিন্তু চিকিৎসকদের থেকে সাড়া না মেলায় আজকেও আলোচনা করা গেল না৷’

মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এ দিন বার বারই বলেছেন, রাজ্য সরকার চিকিৎসকদের কাজে ফেরা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিতে চায়৷ আলোচনার জন্য রাজ্য সরকার আদৌ আর জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করবে কি না, সেই প্রশ্নেরও সরাসরি কোনও জবাব দেননি মন্ত্রী বা পুলিশ প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্তা৷ মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, ‘কিছু দাবি মানলেই আলোচনা হবে, এ ভাবে কথা এগোতে পারে না৷ আমরা আশা করব সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে, আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে চিকিৎসকরা কাজে ফিরবেন৷’