Kiyan Nassiri : কিয়ানের মাথা ঘুরে যাবে না, পা মাটিতেই থাকবে বলছেন বাবা জামশিদ নাসিরি

#কলকাতা: ভারতীয় ফুটবলের মানচিত্রে ছেলেটার আবির্ভাব ঘটে গিয়েছিল আগেই। কিন্তু লাইম লাইটে আসতে প্লাটফর্ম তৈরি করে দিল কলকাতা ডার্বি। ২০০০ কিলোমিটার দূরের মারগাও নেহেরু স্টেডিয়ামে সবুজ মেরুনকে কাঙ্খিত ডার্বি জিতিয়েছেন কিয়ান নাসিরি। সারা বিশ্বে সবুজ মেরুন সমর্থকদের হৃদয় জিতে নিয়েছেন বছর একুশের ছেলেটা। বাবা এবং প্রাক্তন ময়দান কাঁপানো বিখ্যাত ইরানি স্ট্রাইকার জামশিদ নাসিরি এক কথায় মেনে নিলেন ছেলের নায়ক হয়ে ওঠার পেছনে প্রাক্তন মোহনবাগানের আই লিগ জয়ী কোচ কিবু ভিকুনার অবদান রয়েছে।

আরও পড়ুন – Mario Rivera East Bengal: সুযোগ নষ্ট এবং দু মিনিটের ভুলে হারতে হয়েছে ম্যাচ, বলছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিও

পাশাপাশি দুটো দল মিশে যাওয়ার পর মোহনবাগান দল থেকে শুধুমাত্র শেখ সাহিল এবং কিয়ানকে রাখা হয়েছিল নতুন দলে। অ্যান্টোনিও লোপেজ হাবাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলেন জামশিদ। এই দুজন কোচ সিনিয়র দলে কিয়ানকে রেখে চূড়ান্ত পর্যায়ে তৈরি হওয়ার সাহস দিয়েছেন। বড় ফুটবলারদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি থেকে শুরু করে এক সঙ্গে ওঠা বসা, এর ফলে কিয়ানের মধ্যে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।

আরও পড়ুন – U19 WC Ravi Kumar: দেখার মতো ডেলিভারি, বাংলাদেশী ব্যাটারের অফ স্ট্যাম্প ওড়ালেন ভারতের রবি কুমার

হুয়ান ফেরান্ডো সেটা আরো ধার বাড়িয়েছেন বোঝা গিয়েছে ডার্বিতে। শনিবার ডার্বির নায়ককে ঘিরে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি শব্দই ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাপ কা বেটা। ফাতোরদার নেহরু স্টেডিয়ামে ২১ বছর বয়সি ফুটবলারের দ্বিতীয় গোলের পর সামারসল্টের জন্যই এই বিশেষণ। এদিন বড় ম্যাচের ইতিহাসে প্রবেশ করল নাসিরি পরিবার। আটের দশকে ইস্টবেঙ্গল জার্সি গায়ে বড় ম্যাচে গোল রয়েছে জামশিদ নাসিরির।

১৯৮৫ সালে বেঙ্গালুরুতে তাঁর গোলেই প্রথমবার এককভাবে ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-হলুদ ব্রিগেড। শনিবার আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতে পরিবর্ত হিসেবে খেলতে নেমে নায়ক কিয়ানই। তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে হ্যাটট্রিক। ১০১ বছরের ডার্বির ইতিহাসে বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গোলের নজির পুত্রেরও। আড়াই বছর আগে মোহন বাগান কোচ কিবু ভিকুনার কোচিংয়ে তাঁর ডার্বিতে অভিষেক হয়। সেটা ছিল আই লিগের ম্যাচ।

আর আইএসএলের মঞ্চে শনিবারই ছিল কিয়ানের প্রথম ডার্বি। ছেলের এই কৃতিত্বে গর্বিত জামশিদ নাসিরিও। ইরানের প্রাক্তন ফুটবলার বলেন, গত তিন বছর ধরে এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। কিয়ানের মধ্যে ফুটবলার হওয়ার যাবতীয় গুণ রয়েছে। আমি পরিকল্পনামাফিক ওকে গড়ে তুলি। সিসিএফসি’র কোচ থাকার সময় ও আমার সঙ্গে মাঠে যেত।

মোহনবাগান মাঠ তাই কিয়ানের পরিচিত। সবুজ-মেরুনের অনূর্ধ্ব-১৫ দলে সুযোগ পেতে ওর অসুবিধা হয়নি। তারপর থেকে কিয়ান মোহনবাগানেই রয়েছে। গত মরশুমে ওর সতীর্থ শেখ সাহিল কিছু ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিল। কিয়ান তা পায়নি। তা সত্ত্বেও ওকে সবসময় ফোকাস ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছি। লকডাউনের মধ্যেও কিয়ান খেটেছে। শনিবারের পারফরম্যান্স হয়তো তারই সুফল।

২০১৯ সালের মে-জুনে একটি টিভি চ্যানেল আয়োজিত সারা বাংলা অনূর্ধ্ব-১৯ প্রতিযোগিতায় নজর কাড়েন কিয়ান। তারপর ডাক পান সিনিয়র দলে। তবে ছেলের এই সাফল্যে মাথা ঘুরে যাবে না নিশ্চিত জামশিদ। পরিষ্কার জানালেন বয়স কম হলেও কিয়ান জানে বড় ফুটবলার হতে গেলে একটা ম্যাচের পারফরম্যান্স নিয়ে ভাবলে চলে না। ডার্বির হ্যাটট্রিক ও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলবে। আমি চাই পরবর্তী ম্যাচগুলোয় নিজের পারফরম্যান্স আরো ধারাবাহিক করুক।