শীতের কামড় দাঁত ফোটাচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে নামছে পারদ। ভারত তথা বাংলা জুড়ে জাকিয়ে শীত পড়তেই কম্বল লেপের তলা থেকে আর বেরোতে ইচ্ছে করছে না কারও।হাড়কাঁপুনে শীতে সকাল সকাল ট্যাপ খুলতেই যেন আতঙ্ক। কনকনে ঠান্ডা জল হাতে লাগলেই মাথার চুল খাঁড়া। অবশ্য সেই একই জল টিউবঅয়েলের হলে বেশ আরাম। কারণ শীতকালে আপনিও নিশ্চই লক্ষ্য করেছেন যে টিউবওয়েলের জল বেশ গরম থাকে।শীতকালে হাড়হিম ঠান্ডায় বার বার গিজার চালিয়ে বা ওভেনে ডেকচিতে গরম করে তবেই হাত দেওয়া যায় জলে। অথচ অবাক কাণ্ড হল, এই একই সময় দেখা যায়, টিউবওয়লের জল কিন্তু বেশ আরামদায়ক উষ্ণ থাকে।এখন প্রশ্ন হল, যখন ট্যাপকলের জল ভয়ানক ঠান্ডা এ সময়। তাহলে টিউবওয়েলের জল গরম থাকার রহস্য কী? আসলে টিউবওয়েলের জল থাকে মাটির অনেক গভীরে। বাতাসের সংস্পর্শ একেবারেই পায় না এই জল।আমাদের চারপাশের পরিবেশের তাপমাত্রা অনেকটাই নির্ভর করে সূর্যের অবস্থানের ওপর। শীতকালে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলি থেকে সূর্য অনেকটাই হেলে পড়ে দক্ষিণের দিকে। ফলে দিনের দৈর্ঘ্য যেমন কমে আসে, তেমনি সূর্যের তেজও এ সময় কম থাকে।এর ফলে বাতাস কম উৎতপ্ত হয়। অন্যদিকে হিমালয় থেকে বয়ে আসা উত্তুরে হিমেল হাওয়া পরিবেশের তাপমাত্রা অনেকটাই কমিয়ে দেয়।যে কোনও বস্তু থেকে তাপ পরিবহন করে তুলনামূলক ঠান্ডা জায়গায় ছড়িয়ে দিতে বাতাসের জুড়ি নেই।তাই সহজেই খোলা জলাশয়, ট্যাঙ্কের জল দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায় বায়ুপ্রবাহের কারণে। অন্যদিকে ভূপৃষ্ঠের গভীরে থাকা জলের তাপমাত্রা সারা বছর মোটামুটি একই থাকে। বাতাসের সংস্পর্শ পায় না বলেই এমনটা হয়।শীতকালে আসলে মাটির গভীরের জল উষ্ণ হয় না। বরং পরিবেশের তাপমাত্রা অনেক কম থাকে বলে আমাদের শরীর ও হাত-পাতুলনামূলক ঠান্ডা হয়ে যায়। তাই টিউবওয়েলের স্বাভাবিক তাপমাত্রার জলই আমাদের কাছে উষ্ণ মনে হয়।দেখবেন দুপুরের চেয়ে সকাল কিংবা রাতে টিউবওয়েলের জল বেশি গরম মনে হয়। আসলে এর কারণ হল দুপুরে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে, তাই টিউবওয়েলের জল অতটা গরম মনে হয় না।শীতকালে যেমন টিউবওয়েলের জল গরম মনে হয়, গরমকালে ঠিক তার উল্টো মনে হয়। গরমকালে পরিবেশের তাপমাত্রা বেশি থাকে বলে আমাদের শরীরের তাপমাত্রাও তুলনামূলক বেশি থাকে।ওদিকে টিউবওয়েলের জলের তাপমাত্রা কিন্তু একই থাকে। শরীরের তাপমাত্রা বেশি বলে তখন টিউবওয়েলের জল ঠান্ডা মনে হয়।