লা নিনা একটি প্রাকৃতিক জলবায়ু চক্রের অংশ যা পৃথিবীজুড়ে চরম আবহাওয়া সৃষ্টি করতে পারে — এবং এর প্রভাব স্থানভেদে পরিবর্তিত হয়। বৈশ্বিক আবহাওয়ার উপর লা নিনার প্রভাব তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (IMD) ভারতের জন্য একটি অস্বাভাবিকভাবে কঠোর শীতের পূর্বাভাস দিয়েছে, বিশেষ করে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড এবং জম্মু ও কাশ্মীরের উত্তরের রাজ্যগুলিকে৷দ্য ন্যাশানাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টারের ওয়েদার অ্যালার্ট অনুসারে ৬০% চান্স রয়েছে একটি লা নিনা হওয়ার৷ যা এল নিনোর বিপরীত৷ তবে এটি একটি দুর্বল লা নিনা হবে৷ যা শরৎ কালের শেষ থেকে শুরু হয়ে মার্চ পর্যন্ত থাকবে৷IMD-র পূর্বাভাস বলছে, লা নিনার প্রভাবে এবছর জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়তে চলেছে গোটা বিশ্বে৷ লা নিনা হল দক্ষিণী উষ্ণ বায়ু চলাচল চক্রের শীতল পর্যায়, যা এক প্রাকৃতিক গ্লোবাল জলবায়ু প্যাটার্ন যা প্রশান্ত মহাসাগরে বায়ু এবং সমুদ্রের তাপমাত্রায় পরিবর্তনের সাথে জড়িত এবং এটি পৃথিবীজুড়ে চরম আবহাওয়া সৃষ্টি করতে পারে।আইএমডি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে ভারতের একটি তীব্র শীতের জন্য আগাম প্রস্তুত থাকা উচিত, কারণ লা নিনা ঘটনাটি প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে সমুদ্রের তাপমাত্রার চেয়ে শীতল হয়ে যায়, যা বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনকে ট্রিগার করে। উত্তর ভারতের জন্য, এর অর্থ হল আরও ঘন ঘন তুষারপাত-সহ একটি শীতল, দীর্ঘ শীতের ঋতু।লা নিনা নয় থেকে বারো মাস স্থায়ী থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতের শীতে-এর সর্বোচ্চ প্রভাব থাকবে। এই পূর্বাভাস ইঙ্গিত দেয় যে উত্তরের জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলি একটি উল্লেখযোগ্য শীত অনুভব করবে, সম্ভাব্য সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় পৌঁছবে।শীতের মরসুমে আরও বেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যায়৷ আইএমডি লা নিনার কারণে তীব্র শীতকালীন পরিস্থিতির পূর্বাভাস দিয়েছে ভ্রমণকারীদের ৷ হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং জম্মু ও কাশ্মীরের মতো উত্তরের জায়গাগুলির তুষারময় অ্যাডভেঞ্চারের জন্য বেশ কিছু গাইডলাইনও দিয়েছে৷IMD-র পূর্বাভাস বলছে, সিমলা , মানালি , আউলি , মুসৌরি , শ্রীনগর এবং গুলমার্গের মতো জনপ্রিয় গন্তব্যগুলিতে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে, ঘন ঘন তুষারপাতের ফলে মনোরম, তুষার-কাম্বল ল্যান্ডস্কেপ তৈরি হয়। তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও নিচে নেমে যেতে পারে, যা দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপ, পরিবহনকেও প্রভাবিত করতে পারে।ভারী তুষারপাত এবং হিমায়িত তাপমাত্রা রাস্তা এবং বিমান ভ্রমণ ব্যাহত করতে পারে, বিশেষ করে লেহ এবং গুলমার্গের মতো উচ্চ-উচ্চ গন্তব্যগুলিতে । ভ্রমণকারীদের সম্ভাব্য বিলম্বের আশা করা উচিত এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করা উচিত, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং আইএমডি থেকে ভ্রমণ সংক্রান্ত পরামর্শের উপর আপডেট থাকা উচিত।এই সমস্ত অঞ্চলে রিসর্ট, হোটেল এবং ভ্রমণ অপারেটররা শীতকালীন আবাসনের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, বিশেষ করে তুষার-প্রেমী পর্যটকদের জন্য। অনেক জায়গায় আরামদায়ক, শীতকালীন বাসস্থানের বিকল্পগুলি অফার করা হয় যা চরম ঠাণ্ডা সামলাতে সজ্জিত। শীতের অ্যাডভেঞ্চারের জন্য এই গন্তব্যগুলিতে আরও পর্যটকদের ভিড় হওয়ায় আগাম বুকিং করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ঠাণ্ডা তাপমাত্রা হাইপোথার্মিয়া এবং শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ায়, তাই ভ্রমণকারীদেরকে উত্তাপযুক্ত জ্যাকেট, গ্লাভস এবং থার্মাল পরিধান-সহ উচ্চ মানের শীতের পোশাক পর্যাপ্তভাবে প্যাক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
