মানিক সাহা

Lok Sabha Election 2024: ‘এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার জন্য বিজেপির জয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’, নির্বাচনী জনসভায় বললেন মানিক সাহা

আগরতলা: দেশের সার্বিক উন্নয়নে এবং ‘এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা’ গড়ে তুলতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির জয় নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসতে হবে সকলকে। এই সরকারই প্রকৃত অর্থে মানুষের বিকাশে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করছেন। উত্তর জেলার কদমতলায় পূর্ব ত্রিপুরা জনজাতি সংরক্ষিত আসনে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মার সমর্থনে আয়োজিত এক সুবিশাল নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা।

সভায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় আমাদের দুটি আসন রয়েছে। আগে আইপিএফটি আমাদের সঙ্গে ছিল। আর এখন তিপ্রা মথাও ভারতীয় জনতা পার্টিতে সামিল হয়েছে। একটা সময় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত বক্সনগরে জয় অসম্ভব বলে অনেকেই বলেছিলেন। তবে আমরা উপনির্বাচনে সেই আসন জয় করে দেখিয়েছি। ৩০ হাজারের অধিক ভোটে জয়ী হয়েছেন আমাদের প্রার্থী। আর এটা কীভাবে সম্ভব হল, সে নিয়ে বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়। তবে আমি বলেছিলাম যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস’-দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই মানুষ আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন। সেই কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি শুধু কথার কথা বলেন না, তিনি গ্যারান্টিও দেন। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যাতে মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দকৃত জনমুখী প্রকল্পের সুফল থেকে বাদ না যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরা সরকারও জনগণের জন্য ‘প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান’ চালু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বদা জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেন।

নির্বাচনী সভায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চালু করা অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির কারণে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি ব্যাপক উপকৃত হয়েছে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের রাজ্যগুলি উন্নয়নের দিশায় এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের হিরা (HIRA) মডেল দিয়েছেন। কারণ উন্নয়নের জন্য কোন রাজনীতি বা জাতপাতের প্রয়োজন হয় না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মানুষের আশীর্বাদ ও সমর্থন পেতে দলের প্রতিটি কর্মীকে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতি ছিল। তবে ২০১৪ সালের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর সারা দেশে রাজনীতির অর্থও বদলে যায়। আমাদের বিজেপি সরকার জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে সংকল্পবদ্ধ। রাজ্য সরকারও সেই একই দিশায় জনকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন-   শৈশবে চরম কষ্ট, বাবা দেননি মেয়ের মর্যাদা, পড়াশোনা ছেড়ে চলচ্চিত্রে এসেই বলিউডের এভারগ্রীন তিনি, বলুন তো মায়ের কোলে ‘এই’ শিশুটি কে?

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা আরও বলেন, রাজ্য সরকার মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যেমন মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠনের মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রূপায়ণ করছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের লক্ষ্যে আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ডেন্টাল কলেজ এবং অন্যান্য হাসপাতালগুলিতেও অত্যাধুনিক ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে। অতীতে জাতি ও জনজাতিদের নিয়ে অনেক রাজনীতি প্রত্যক্ষ হয়েছে। কিন্তু এখন বিজেপি, আইপিএফটি এবং তিপ্রা মথা ত্রিপুরাকে সবদিক দিয়ে সেরা করে তুলতে একসঙ্গে কাজ করছে৷ সিপিএম সর্বদা বিভাজনের রাজনীতি করে গেছে এবং একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে রাজ্য শাসন করেছে। তারা তাদের ৩৫ বছরের শাসনামলে গণতন্ত্রকে দাবিয়ে রেখেছিল। এই রাজ্যের মানুষ সেটা প্রত্যক্ষ করেছে। মানুষ তখন সিপিএম থেকে মুক্তি পেতে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকেছিল। কিন্তু কংগ্রেসও তাই করেছিল।

ত্রিপুরায় আমরা ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচন সহিংসতা ছাড়াই সম্পন্ন করার ইতিহাস তৈরি করেছি। মানুষ বুঝতে পেরেছে যে শুধুমাত্র বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই এই রাজ্যের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটাতে পারেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। দেশকে রক্ষা করতে এবং ত্রিপুরাকে শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা করতে, আমাদের অবশ্যই বিজেপির জয় নিশ্চিত করতে হবে ৷ এদিন জনসভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির পূর্ব ত্রিপুরা জনজাতি সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মা, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, যুব নেতা নবাদল বণিক সহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব।