বসিরহাট: এমএ-বিএড শিক্ষিত বেকার জুতো সেলাই করে সংসারের হাল ধরেছেন। ডিগ্রির ঝুলিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা ইতিহাসে এমএ, বিএড ডিগ্রিও আছে। ইচ্ছে ছিল স্কুলে শিক্ষাগতা করার। কিন্তু তা আজও অধরা। উচ্চ প্রাথমিকে পাশ করেও আটকে নিয়োগ। তবে তিনি শিক্ষকতা করেন গৃহ শিক্ষক হিসাবে।
হিঙ্গলগঞ্জের সুভাষচন্দ্র দাস হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ বাজারে অনেক দিন ধরেই জুতো সেলাই করেন। তবে তার জুতো সেলাই আজকের থেকেই নয়, দরিদ্র পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। পড়াশোনার খরচ চালাতে এক সময় কলেজে যাওয়ার সময় ট্রেনে জুতা সেলাই থেকে জুতো পালিশ করতেন। দিনের পরিবর্তন হলেও সুভাসের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। এখনও রাস্তার পাশে বসে জুতো পালিশ করেন এমএ, বিএড পাস করা সুভাষচন্দ্র দাস। উচ্চশিক্ষিত যুবকটিকে এলাকায় সকলে চেনেন। সেই সূত্রে কিছু ছাত্রও পড়ান।
সুন্দরবনের নদী জঙ্গল বেষ্টিত এলাকা উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের দক্ষিণ গোবিন্দকাটি গ্রামে বসবাস তার। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগ নিয়ে এমএ পাস করে সুভাষ।পড়াশোনার সময়, কলেজ এর জীবনটি ও তার ভাল ছিল না। পড়াশোনা সূত্রে বারাসাতে এক ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন খরচ চালাতে তাকে জুতো সেলাই, পালিশের কাজ করতে হত।
ভাড়া বাড়িতে থাকা কর্তার কাছে এই খবর পৌঁছালে তিনি অন্যত্র থাকার কথা বলে দেন। তারপরের বেশ কয়েকদিন প্ল্যাটফর্মেই কাটে সুভাষের। সুভাষ জানায়, ২০১৬ সালের উচ্চ প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় সফল সে। আইনি জটে আটকে নিয়োগ। তবে পুজোর আগে সেই জট কাটতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সুভাষের মা টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় বলে জানান। হয়তোবা চাকরিটা তখন পেলে হয় তো ভাল চিকিৎসা করাতে পারতাম বলে আক্ষেপ সুভাষের। তবে কি এবার সেদিন ফিরবে সুভাষের! পুজোর আগে কি কোনও সমাধান সূত্র মিলতে পারে, তার অপেক্ষায় সুভাষ।
জুলফিকার মোল্যা