Indo-Bangladesh treaty: ‘কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার জল বিক্রি করে দিচ্ছে,’ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী! আজই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে কড়া চিঠি মমতার

কলকাতা: ফরাক্কা-গঙ্গা চুক্তির নবীকরণ নিয়ে গত রবিবারই তীব্র আপত্তি তুলেছিল তৃণমূল৷ সরাসরি বাংলার জলকে ‘বিক্রি’ করার অভিযোগ তোলা হয়েছিল বাংলার শাসকদলের তরফে৷ আজ, সোমবার পুর প্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সেই চুক্তি নিয়েই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা৷ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আজই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাবেন তিনি৷

এদিন নবান্নের সভাঘরের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, ‘‘একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার জল বিক্রি করে দিচ্ছে। রাজ্যকে জানাচ্ছে না। জল নেই তিস্তায়। আমি আজ একটা কড়া চিঠি PM-কে (প্রধানমন্ত্রীকে) দিচ্ছি। আপনারা একদিকে জমি বিক্রি করছেন, কেন্দ্র বাংলাকে বিক্রি করছে।’’

এরপরেও মমতার মন্তব্য, ‘‘একতরফা যদি এই সিদ্ধান্ত হয় তাহলে বাংলা, গোটা দেশজুড়ে আন্দোলন হবে। ১৪টি হাইডেল পাওয়ার স্টেশন হয়েছে৷ সিকিম সব জল আটকে দিয়েছে। এখন বলছে জল দাও।’’

আরও পড়ুন: ‘বাংলাকে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা’! রাজ্যকে এড়িয়ে ফরাক্কা চুক্তি করায় মোদিকে আক্রমণ তৃণমূলের

প্রসঙ্গত, গত শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ভারত সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সফরেই ফরাক্কা-গঙ্গা চুক্তির নবীকরণ হয়। সেই নিয়ে আগেই তীব্র আপত্তি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল।

তৃণমূলের অভিযোগ, “বাংলার সঙ্গেই আলোচনা না করেই ফরাক্কা-গঙ্গা চুক্তির নবীকরণ করা হয়েছে, অথচ ফরাক্কা চুক্তির একটি অংশ পশ্চিমবঙ্গ”। অর্থাৎ রাজ্যকে এড়িয়ে ফরাক্কা চুক্তি করা নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন দাবি করেছেন, আগের চুক্তি অনুযায়ী রাজ্য়ের পাওনা টাকাও রাজ্যকে দেয়নি কেন্দ্র, সেই সঙ্গে গঙ্গায় থেকে পলি তোলার কাজও বন্ধ রয়েছে, যা বন্যা এবং ভাঙনের প্রাথমিক কারণ। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে ‘বাংলাকে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা’ বলে অভিহিত করেছেন ডেরেক।

আরও পড়ুন: চাকরিজীবী মহিলাদের জন্য সুখবর! এবার চালু হচ্ছে ‘মহিলা স্পেশ্যাল বাস’, কোথা থেকে কখন থাকবে পরিষেবা, জানুন

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার জলবণ্টন নিয়ে চুক্তি হয়েছিল। ভারত এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন দেবগৌড়া এবং শেখ হাসিনা। এই চুক্তির অংশ ছিল একাধিক রাজ্যও। ৩০ বছরের মেয়াদি এই চুক্তি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৬ সালে। এই চুক্তির নবীকরণে বাংলাকে এড়িয়ে গিয়েছে কেন্দ্র, এমনটাই দাবি তৃণমূলের।

অন্যদিকে, এদিন সুজিত বসু থেকে শুরু করে গৌতম দেব৷ সকলের নাম করে করে পুরসভার পরিষেবা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কোথাও জমি দখল, কোথাও বেআইনি ভাবে বিদ্যুতের কানেকশন দেওয়া, কোথাও পুকুর ভরাট এদিন সব কিছু নিয়েই রাজনৈতিক সতীর্থ তো বটেই প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদেরও তীব্র ভর্ৎসনা করেন মমতা৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এত চক্রন্তের মাঝে এই কাজগুলো যদি না করেন। পুকুরগুলো ভরাট করে দিচ্ছে, খাল গুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। সিপিআইএমের সময় থেকে চলছে। আগামী দিনে সরকার ছেড়ে কথা বলবে না। যত বড় নেতাই হোক, ভেঙে দিতে হবে।’’

ক্ষুব্ধ মমতা এদিন বলেন, ‘‘কারও কারও অভ্যাস হয়ে গেছে যতদিন IC, DM, SDM থাকব কিছু গুছিয়ে নেব। সুজিত বসু লোক বসিয়ে দিছে। ARD ডিপার্টমেন্টের বাইরে কেন লোক বসিয়ে রাখা হচ্ছে? আমাকে কি এবার রাস্তা ঝাঁট দিতে বেরোতে হবে? সল্টলেকের কাউন্সিলেররা কোনও কাজ করে না।’’

মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়েছেন উত্তরবঙ্গের গৌতম দেবও৷ এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেবক রোড, ডাবগ্রাম,যে জমি নিয়ে হয়ছে গৌতম দেব তুমিও এটা এড়াতে পারো না। এটার জন্য আমি কেউকে ছাড়ব না.. মনোজ সবাইকে অ্যারেস্ট করে নাও। কাউকে ছাড়বে না। আমাকে কেন বেআইনি জিনিস নিয়ে বলতে হবে?’’

শুধু তাই নয়, কয়লা, বালি, গরু পাচারের টাকা পুলিশের মাধ্যমে বিজেপির কাছে যায় বলেও এদিন অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷