বাবার ভাঙা দোকানের পাশে বসে দুই মেয়ে

Birbhum News: ‘চুরি ভাল কাজ নয়’! অসহায় বাবাকে মেয়েদের শিক্ষা! রুটিরুজি জোগাতে পাশে প্রশাসন

বীরভূম: কয়েকদিন আগে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া  তোলপাড় করেছিল। প্রসঙ্গত, প্রশাসনিক নির্দেশে ফুটপাতের উপর অবৈধ ফুটপাত থেকে নির্মাণ সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর সেই মতো চলে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। অভিযোগ, সরকারি জমির উপর বেআইনিভাবে দোকান চালাচ্ছিলেন বীরভূমের বোলপুরের রাজু দাস। বিষয়টি নজরে আসার পরেই আইন মেনে সেই দোকান সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু রাজুর দুই মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে বাবার সেই ভাঙা দোকান দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। আর মনভার নিয়ে রাজু যখন বলেছিলেন, ‘এবার চুরিই করব’, সেই সময় বাবার গলা জড়িয়ে চিৎকার করে ‘না’ বলে উঠেছিল দ্বিতীয় শ্রেণির খুদে। “চুরি ভাল কাজ নয়”, বাচ্চা মেয়ের অবুঝ মন এক অসাধারণ শিক্ষা দিয়েছিল। এই ভিডিও দেখে মন খারাপ করেছিল নেটিজেনদের।

আর এর পরেই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রাজুর জন্য বিকল্প রুজির কথা ভাবা হচ্ছে বলেও প্রশাসন সূত্রে খবর। রাজু বলেন, “দিন কয়েক আগে আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মহকুমা শাসক। তাঁরা বলেছিলেন যেখানে আমার দোকান ছিল সেখানে একটি ঠেলাগাড়ি নিয়ে খাবারের দোকান শুরু করতে। তা শুরু করার জন্য তাঁরাই খরচ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।” তবে প্রশাসন পাশে দাঁড়ালেও সমস্যা দানা বাঁধছে অন্য জায়গায়। নর্দমার সামনে ঠেলাগাড়়িতে খাবার বিক্রি করতে একটি অসুবিধা হবে। নর্দমার দুর্গন্ধ এবং বর্ষাকালের নর্দমার জল উঠে গেলে সমস্যা দেখা দেবে।

অন্য কোনও দোকান ভাড়া নিয়ে চালানোর ইচ্ছে থাকলেও তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। বোলপুরের মহাকুমা শাসক অয়ন নাথ বলেন, “রাজুবাবু আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। ওঁকে ঠেলা গাড়ি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে তিনি তাতে রাজি হননি। আমি ওঁর ফোন নম্বর এবং ঠিকানা নিয়ে রেখেছি। ওঁর বাড়িতে আমি লোক পাঠিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এরপর যা করণীয় করব। ওঁর দুই সন্তান রয়েছে। তাঁদের টিউশন বা পড়াশোনার বিষয়টিও আমার মাথায় রয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে যতটা সম্ভব সাহায্য করা হবে।”

আরও পড়ুন: মর্মান্তিক! রাতে নৌকার উপর থেকে মৎস্যজীবীকে তুলে নিয়ে গেল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার 

আরও পড়ুন: কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বর্নিভরতার পথ দেখছেন ছাত্রীরা… কোর্স শেষ করলেই কাজের সুযোগ

আর এই খবর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই কার্যত যেন খুশির জোয়ার দেখা দিয়েছে। বোলপুরের এক স্থানীয় বাসিন্দা দীপঙ্কর বর্মণ জানান প্রশাসন যে পদক্ষেপ করেছে ফুটপাথ দখলমুক্ত করার সেটা অবশ্যই ভাল। তবে বাচ্চা মেয়ে দু’টির কান্না তাঁদের মনে অনেকটাই দুঃখ দিয়েছিল। তাই প্রশাসন বাচ্চা মেয়ে দুটির কথা ভেবে যে পাশে দাঁড়িয়েছে সেটাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন।

সৌভিক রায়