জামাইষষ্ঠীর বাজার (প্রতীকী ছবি)

Market Ownership Problem: জামাইষষ্ঠীর বেচাকেনা পণ্ড, বাজারের মালিকানা নিয়ে সাতসকালে দু’পক্ষের মধ্যে ধুন্ধুমার

নদিয়া: একদিন বাদেই জামাইষষ্ঠী। এইসময় আম, কাঁঠাল, লিচু সহ নানান ফল, নানান টাটকা আনাজ, দই-মিষ্টি সবকিছুরই চাহিদা তুঙ্গে। ব্যবসায়ীরাও এই সময় পসরা সাজিয়ে প্রতীক্ষায় থাকেন ভাল বিক্রি বাটা হওয়ার আশায়। কিন্তু সেসব দুর অস্ত, সকাল হতেই শান্তিপুর রেল বাজার বোস মার্কেটে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। বাজারের মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গন্ডগোলে পণ্ড হয়ে গেল যাবতীয় ব্যবসা।

নদিয়ার এই বাজারে প্রায় দু’শো দোকানদার আছেন। তাঁদের কেউ ৪০-৫০ বছর ধরে, আবার কেউ কেউ তারও বেশি সময় ধরে বংশপরম্পরায় এখানে ব্যবসা করছেন। ২০১১ সালে স্থানীয় অসিত ঘোষ (ওরফে বেচা) নামে এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী দাবি করেন, গোটা বাজার তিনি কিনে নিয়েছেন। তারপর থেকেই চলছে আইনি লড়াই। গত বছরেও জামাইষষ্ঠীর আগের দিন চলেছিল ডামাডোল, এইবছর একই পরিস্থিতি তৈরি হল।

আর‌ও পড়ুন: লোকালয়ে চিতাবাঘ! আতঙ্ক ছড়াতেই খাঁচা পাতল বন দফতর

বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, এদিন সকালে রোজের মতই তাঁরা কারবার শুরু করেছিলেন। সেই সময় পুরোহিত নিয়ে এসে অসিত ঘোষ ভিত পুজো চেষ্টা করেন। তাতে আপত্তি জানান ব্যবসায়ীরা‌। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়, হয় হাতাহাতি। বাজারের বিক্রেতাদের মধ্যে এক মহিলা সহ দুই পুরুষ ব্যবসায়ী মার খান বলে অভিযোগ। অন্যদিকে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চলা সমস্যার সমাধানের জন্য আজ সকালে বাজারে উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু বেশকিছু ব্যবসায়ী তাঁদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। গোটা বিষয়টা বাজারের কাছের একটি বিল্ডার্সের দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধরা আছে বলে দাবি করা হয়।

এদিকে বিতর্কিত ওই বাজারের মালিক বলে দাবি করা অসিত ঘোষ বলেন, ২০০২ সালে এই বাজার কেনার সময় তৎকালীন বাজার কমিটির সভাপতি, সম্পাদক সহ অনেকেরই সই স্বাক্ষর আছে। কিন্তু ২০১১ সালে হঠাৎ কেন আমার বিরুদ্ধে কিছু ব্যবসায়ী আদালতে গেল তা জানি না। তবে আইনি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজে পরিদর্শনে এসে কাজ করার অনুমতি দিয়ে গেছেন বলে তিনি দাবি করেন। সেই নির্দেশ মেনেই আজ কাজ করতে গিয়ে বাধা পান বলে অসিত ঘোষের অভিযোগ।

এই গোটা ঘটনায় শান্তিপুর কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সম্পাদক এবং নদিয়া জেলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ট্রেডের সহ-সম্পাদক অরুণ কুমার ঘোষকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে জানা গিয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ জানানো হবে বলে খবর। এদিকে রেলবাজার ব্যবসায়িক কল্যাণী সমিতির সভাপতি সনাতন পালের দাবি, মালিকানার বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন। ফলে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে ভিত পুজো করা ঠিক নয় বলে তিনি জানান। পাশাপাশি তাঁর দাবি, অসিত ঘোষ বহিরাগতদের নিয়ে এসে বাজারের ব্যবসায়ীদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করেন।

দু’পক্ষই বিষয়টি নিয়ে শেষ পর্যন্ত শান্তিপুর থানার দ্বারস্থ হয়। এই সমস্যাটি আপাতত জেলা প্রশাসনের উচ্চস্তর থেকে দেখা হচ্ছে বলে খবর।

মৈনাক দেবনাথ