চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে

Medicinal Plant: গাছ তো নয়, যেন অমৃতের ভাণ্ডার! সর্বরোগ হরণ করে হিমালয়ের এই ভেষজ

আজও হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। এইসব স্থানে প্রাকৃতিক গাছ ও লতা-পাতা নিয়ে নানা গবেষণা পরিচালিত হয়। কিছু ক্ষেত্রে একথা প্রমাণিত যে, এইসব অঞ্চলের মানুষ নানান ভেষজ গাছ ও শাক-সবজির উপর নির্ভর করেই নিজেদের জীবনকে সুস্থ রেখেছেন। হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে এই রকম অনেক ঔষধি গাছ পাওয়া যায়, যেগুলো আমাদের খাবারের জন্যও ব্যবহৃত হয়। এই রকম একটি ঔষধি গাছ হল গন্দ্রায়ণ যা চোরু নামেও পরিচিত। শিকড় থেকে পাতা পর্যন্ত এই গাছের প্রতিটি অংশই অমৃতের ভাণ্ডার। খাবারের স্বাদ বাড়াতেও অনেক স্থানে চোরু ব্যবহার করা হয়। এর ব্যবহার খাবারের স্বাদ বদলে দেয় এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

চোরু বা গন্দ্রায়ণ, উত্তরাখণ্ড সহ অন্যান্য হিমালয়ের সমস্ত রাজ্যেই পাওয়া যায়। রাজমা, অড়হর ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হলে এটি খাবারের সুগন্ধ এবং গন্ধকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এটি উত্তরাখণ্ডে সাধারণ গৃহস্থ বাড়িতে পাওয়া যায়, তবে বাজারে এর দাম অনেকটাই বেশি। এটি উত্তরাখণ্ডের আঞ্চলিক খাবারে বহু শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হেপ্রেক ইনস্টিটিউটের ডা. রাজীব রঞ্জন গত ১০ বছর ধরে হিমালয়ের ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে, যেহেতু এটির প্রচুর চাহিদা রয়েছে, তাই অনেকে এই উদ্ভিদটি ব্যবসায়িক ভাবে চাষও করেন।

ডা. রাজীব রঞ্জন আরও বলেন যে, চোরু বিভিন্ন নামে পরিচিত। চোরুর বোটানিক্যাল নাম অ্যাঞ্জেলিকা গ্লাউকা। আয়ুর্বেদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্ভিদ। এর ব্যবহার ক্ষুধা বাড়াতে এবং চর্মরোগ নিরাময়ে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এতে অ্যাঞ্জেলিক অ্যাসিডের উপস্থিতি এবং এর শিকড় থেকে নির্গত রাইজোম তেলও খুব উপকারী। চোরুর মূলের গুঁড়ো এক থেকে দুই গ্রাম গরম জলে মিশিয়ে পান করলে বদহজম বা ক্ষুধামান্দ্য, কোষ্ঠকাঠিন্য ও পিত্তজনিত রোগের উপশমে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন : ছোট এই বীজেই মুক্তি পিরিয়ডের ব্যথা থেকে, বলছেন চিকিৎসকরাই

আয়ুর্বেদ বর্ণনা করে যে, এটি বিভিন্ন চর্মরোগ, পোকামাকড়ের কামড়, বদহজম সারাতে সাহায্য করে, ক্ষুধা বাড়ায়, জ্বর ও মানসিক রোগ নিরাময়েও ব্যবহৃত হয়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরাও এইসব ঔষধি গাছ চাষে নিয়োজিত হচ্ছেন, যার ফলে তাঁরা ভাল আয়ও করছেন এবং হিমালয়ের দুর্লভ ভেষজগুলিও সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।