![অযত্নে বেড়ে ওঠা মুক্তঝুরি গাছেই রয়েছে অসম্ভব ঔষধি গুণ। বাড়ির আনাচে-কানাচে রাস্তার ধার বা পতিত জমিতে অযত্নে বেড়ে ওঠে। এই গাছের পাতার পাশ থেকে কান্ড থেকে ঝুড়ি বের হয়।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/03/4241395_HYP_0_IMG_20240327_065913_1444_x_810_pixel_watermark_27032024_092452.jpg)
![এই গাছের উপকারী গুণ রয়েছে বহু। শিশুর শক্ত মলের সমস্যার ক্ষেত্রে দারুন কার্যকরী। দুই থেকে তিন বছরের শিশুর কষা পটির সমস্যা সমাধানে দারুন কার্যকর। এই গাছের সামান্য মূল বেটে খেলেই উপকার পাওয়া যেতে পারে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/03/4241395_HYP_0_1711503155380_watermark_27032024_092925.jpg)
![কৃমি দূর করতেও দারুন কার্যকরী এই মুক্তঝুরি গাছের পাতা। ২০-২৫ ফোঁটা পাতার রস গরম করে সামান্য জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/03/4241395_HYP_0_1711503083065_watermark_27032024_093305.jpg)
![সর্দি ও বুকে জমা কফ তুলতে মুক্তঝুরি গাছের জুড়ি নেই। শুকনো গাছের সবুজ অংশ বা পাতা দু গ্রাম নিয়ে সামান্য জলের সঙ্গে ফুঁটিয়ে ছেঁকে খেতে পারলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/03/4241395_HYP_0_IMG_20240327_065831_1444_x_810_pixel_watermark_27032024_093543.jpg)
![এছাড়াও টিউবারকুলোসিস বা টিবি রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই গাছ।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/03/4241395_HYP_0_IMG_20240327_065740_1444_x_810_pixel_watermark_27032024_094056.jpg)
![এ প্রসঙ্গে ডাক্তার সৌরেন্দু শেখর বিশ্বাস জানান, গ্রাম বাংলায় অযত্নে বেড়ে ওঠা মুক্তঝুরি গাছে রয়েছে বহু উপকারী গুণ। বুকে জমা কফ দূর করে, শিশুর কষা পটির সমস্যা দূর করে। এছাড়াও টিউবারকুলোসিস বা টিবি রোগ সারাতে দারুন কার্যকরী ভূমিকা রাখে এই গাছ।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/03/4241395_HYP_0_1711503018870_watermark_27032024_094306.jpg)
আজও হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। এইসব স্থানে প্রাকৃতিক গাছ ও লতা-পাতা নিয়ে নানা গবেষণা পরিচালিত হয়। কিছু ক্ষেত্রে একথা প্রমাণিত যে, এইসব অঞ্চলের মানুষ নানান ভেষজ গাছ ও শাক-সবজির উপর নির্ভর করেই নিজেদের জীবনকে সুস্থ রেখেছেন। হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে এই রকম অনেক ঔষধি গাছ পাওয়া যায়, যেগুলো আমাদের খাবারের জন্যও ব্যবহৃত হয়। এই রকম একটি ঔষধি গাছ হল গন্দ্রায়ণ যা চোরু নামেও পরিচিত। শিকড় থেকে পাতা পর্যন্ত এই গাছের প্রতিটি অংশই অমৃতের ভাণ্ডার। খাবারের স্বাদ বাড়াতেও অনেক স্থানে চোরু ব্যবহার করা হয়। এর ব্যবহার খাবারের স্বাদ বদলে দেয় এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
চোরু বা গন্দ্রায়ণ, উত্তরাখণ্ড সহ অন্যান্য হিমালয়ের সমস্ত রাজ্যেই পাওয়া যায়। রাজমা, অড়হর ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হলে এটি খাবারের সুগন্ধ এবং গন্ধকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এটি উত্তরাখণ্ডে সাধারণ গৃহস্থ বাড়িতে পাওয়া যায়, তবে বাজারে এর দাম অনেকটাই বেশি। এটি উত্তরাখণ্ডের আঞ্চলিক খাবারে বহু শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হেপ্রেক ইনস্টিটিউটের ডা. রাজীব রঞ্জন গত ১০ বছর ধরে হিমালয়ের ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে, যেহেতু এটির প্রচুর চাহিদা রয়েছে, তাই অনেকে এই উদ্ভিদটি ব্যবসায়িক ভাবে চাষও করেন।
ডা. রাজীব রঞ্জন আরও বলেন যে, চোরু বিভিন্ন নামে পরিচিত। চোরুর বোটানিক্যাল নাম অ্যাঞ্জেলিকা গ্লাউকা। আয়ুর্বেদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্ভিদ। এর ব্যবহার ক্ষুধা বাড়াতে এবং চর্মরোগ নিরাময়ে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এতে অ্যাঞ্জেলিক অ্যাসিডের উপস্থিতি এবং এর শিকড় থেকে নির্গত রাইজোম তেলও খুব উপকারী। চোরুর মূলের গুঁড়ো এক থেকে দুই গ্রাম গরম জলে মিশিয়ে পান করলে বদহজম বা ক্ষুধামান্দ্য, কোষ্ঠকাঠিন্য ও পিত্তজনিত রোগের উপশমে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন : ছোট এই বীজেই মুক্তি পিরিয়ডের ব্যথা থেকে, বলছেন চিকিৎসকরাই
আয়ুর্বেদ বর্ণনা করে যে, এটি বিভিন্ন চর্মরোগ, পোকামাকড়ের কামড়, বদহজম সারাতে সাহায্য করে, ক্ষুধা বাড়ায়, জ্বর ও মানসিক রোগ নিরাময়েও ব্যবহৃত হয়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরাও এইসব ঔষধি গাছ চাষে নিয়োজিত হচ্ছেন, যার ফলে তাঁরা ভাল আয়ও করছেন এবং হিমালয়ের দুর্লভ ভেষজগুলিও সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।