মুর্শিদাবাদ: আর হাতে গোনা মাত্র কয়েক দিন বাকি। তার পরই দুর্গাপুজো! মহিলাদের নয়, এ বছর পুজোতে নজর কেড়েছে মুর্শিদাবাদের রেশমের তৈরি সিল্কের বিভিন্ন রকমের শার্ট পিস। এই শার্ট পিস থেকে কেউ তৈরি করতে পারেন জামা, কেউ বা পাঞ্জাবি। মুর্শিদাবাদ রেশম সিল্কের খ্যাতি জগৎ জোড়া। তবে শাড়ির যেমন কদর রয়েছে, ঠিক তেমনই এ বছর বেশ চাহিদা তুঙ্গে সিল্কের শার্ট পিসের।
মুর্শিদাবাদ সিল্কের কথা সকলেই জানেন। সেই সিল্কের শাড়ি মুর্শিদাবাদে তৈরি হয়ে রওনা দেয় বিভিন্ন জেলা ও রাজ্য। তবে এ বছর নজর কাড়ছে এই সিল্কের জামার পিস। সিল্কের বিভিন্ন রকমের শার্ট পিস ছেলেদের পোষাকের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় ৫০০ টাকা প্রতি মিটার হিসেবে বিক্রি করছেন ক্রেতারা। মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ, খড়গ্রাম, নবগ্রামে এই সিল্কের ছিটের চাহিদা তুঙ্গে। এই পিস দিয়ে বিভিন্ন রকম পোশাক বানানোর জন্য ক্রয় করছেন উৎসাহী মানুষ।
মুর্শিদাবাদ সিল্কের ইতিহাস রয়েছে। অধুনা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা ও ভারতের মালদা ও মুর্শিদাবাদ বেঙ্গল সিল্কের প্রধান উৎপাদনস্থল হিসেবে হয় পরিগণিত। মুর্শিদাবাদ সিল্ক ইতিহাসের সেই নজিরই বহন করে এখনও। রেশম ও রেশম শাড়ি তৈরির কারখানা ইতিহাসের সিল্ক যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়। বেঙ্গল সিল্ক বলতে মূলত বাংলাদেশের রাজশাহী, এই রাজ্যের মালদা ও মুর্শিদাবাদের সিল্ককেই বোঝানো হত সে কালে। কথিত আছে, রেশমচাষের পদ্ধতি, সিল্কের কার্যক্রম ও ব্যবসায় হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য টিপু সুলতান সুদূর মহীশুর থেকে শিক্ষানবিশ হিসেবে স্থানীয় তাঁতিদের পাঠিয়েছিলেন অবিভক্ত বাংলায়।
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে চিনে প্রথম রেশম আবিষ্কৃত হয়। আবিষ্কারের পর দীর্ঘদিন চিন সন্তর্পণে রেশমচাষ ও উৎপাদনে গোপনীয়তা বজায় রাখে। যা আজও বজায় রেখে তৈরি হয়ে চলছে এই মুর্শিদাবাদ সিল্ক। মুর্শিদাবাদের মির্জাপুরে তৈরি করা হয় এই সিল্ক শাড়ি। পাশাপাশি নবগ্রাম ও খড়গ্রামে তৈরি হচ্ছে এই সিল্কের পুরুষদের জন্য শার্ট পিস।
কৌশিক অধিকারী