উত্তর ২৪ পরগনা: হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা সঠিকভাবে না মেলায় হারাতে হল সন্তানকে, কান্নায় ভেঙে পড়লেন সন্তানহারা মা। চোখে জল নিয়ে আক্ষেপের সুর তাঁর গলায়। দক্ষিণ দমদম পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসীনতা ও সরকারি হাসপাতালে আন্দোলনের জেরে পরিষেবা না পাওয়ার কারণেই পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ পরিবারের।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামনগর দাস ভিলা এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বছর এগারোর পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সৃজন সাহার। পরিবারের দাবি, তাঁদের সন্তানের জ্বর হওয়ায়, রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পরে। এরপরেই দক্ষিণ দমদম পৌর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রকে। পরিবারের অভিযোগ, দক্ষিণ দমদম পৌর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও, সেখানে কোনরকম চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়নি। উল্টে তারা পরিষেবা দিতে পারবেন না বলে অন্যত্র রোগীকে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। এরপরেই, ছাত্রের পরিবার তাদের সন্তানকে নিয়ে বেলঘাটা আই ডি হাসপাতালে পৌঁছন। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসা পরিষেবা মেলেনি বলে অভিযোগ পরিবারের। শুধু তাই নয়, অভিযোগ, আইডি তে সামান্য স্যালাইনটুকুও দেওয়া হয়নি রোগীকে।
হাসপাতালে থাকাকালীন প্লেটলেট দেড় লক্ষ থেকে ৪০ হাজারে নেমে যায়। সন্তানের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে দেখে, ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সৃজনকে ভর্তি করা হয়। এরপরই পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যু হয়৷ সৃজনের মাসির অভিযোগ, চিকিৎসকদের অন্দোলনের জেড়েই তাঁরা পরিষেবা পাননি। আন্দোলনকে তাঁরাও সমর্থন করেন। কিন্তু অসহায় মানুষদের দিকেও তাকানো উচিৎ।
সৃজনের মায়ের দাবি, চিকিৎসা পরিষেবা সঠিকভাবে না মেলায় আজ সন্তানহারা হলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাজে ফেরার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যদিও নিজেদের পাল্টা পাঁচ দফা দাবি না মানা হলে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে অনড় আন্দোলনরত চিকিৎসক মহল। তবে এলাকার ছেলের চিকিৎসা না পেয়ে এমন করুণ পরিণতিতে শোকের ছায়া নেমেছে দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এলাকায়।
রুদ্র নারায়ণ রায়