সার্থক পণ্ডিত, কোচবিহার: কোচবিহারে তোর্সা বাঁধের পাশেই রয়েছে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শ্মশানকালী দেবীর মন্দির। দীর্ঘ প্রায় আনুমানিক দেড়শো বছরের বেশি পুরনো এই মন্দিরে আজও জাঁকজমকের সঙ্গেই পুজোর আয়োজন করা হয়। একটা সময় এই মন্দির ছিল তোর্সা নদীর চরে। তবে পরবর্তী সময়ে নদীর ভাঙনের ফলে মন্দির নিয়ে আসা হয় তোর্সা বাঁধের পাশে। বর্তমানে এই মন্দিরের পুজোতে ভিড় জমান ভক্তবৃন্দ। দূর-দূরান্তের বহু মানুষ ছুটে আসেন এই মন্দিরের পুজো দেখতে। এই মন্দিরে নিত্যপুজোর পাশাপশি বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়।
মন্দিরের ক্লাব কমিটির সম্পাদক খোকন দাস জানান, ‘‘জেলার বেশ পুরনো কালী মন্দিরের মধ্যে এই মন্দির একটি। একটা সময় এই মন্দিরে সেরকম কিছুই ছিল না। টিনের একচালা ঘরের মধ্যে কালী দেবীর পুজো সম্পন্ন করা হত। তবে পরবর্তী সময়ে এলাকায় মানুষের সহযোগিতায় এই মন্দির স্থাপন করা হয়। মন্দিরের ইতিহাস অনেকটাই পুরনো। তাই এই মন্দির আকর্ষণ করে বহু মানুষকে। এই মন্দির স্থাপনের পর পাথরের কালী দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয় এখানে। বর্তমানে এই মূর্তির মধ্যেই পুজোর আয়োজন করা হয় দীর্ঘ সময় ধরে।”
মন্দিরের নিত্য পূজারী গোপালচন্দ্র দাস জানান, ‘‘এই মন্দির সূচনা করেছিলেন জটাধারী এক সন্ন্যাসী সাধক। তিনি মূলত তিনটি বিশেষ সময় দেবীর পুজো করতেন। কৃষ্ণ সংক্রান্তি, মকর সংক্রান্তি এবং দীপাবলির অমাবস্যা তিথিতে। তাঁর পরবর্তী সময়েও এই নিয়ম বজায় রাখা হয়েছে। এছাড়া দেবীর এখানে সকাল ও বিকেলে নিত্যপূজার আয়োজন করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই পুজোর অনেকটাই গুরুত্ব রয়েছে এই এলাকায় মানুষের কাছে। তাই বহু মানুষ উৎসাহের সঙ্গে এই দেবীর পুজোয় যোগদান করে থাকেন। বর্তমানে বেশ অনেকটাই জাঁকজমকের সঙ্গে এই পুজোর আয়োজন করা হয়।’’
দীর্ঘ সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই শ্মশানকালী দেবীর মন্দির বহু ইতিহাসের সাক্ষী। তবে একটা সময় এই মন্দিরের পুজো শাক্ত মতে করা হলেও, বর্তমানে এই পুজো সম্পূর্ণ বৈষ্ণব মতেই করা হয়। বহু ভক্তবৃন্দ ছুটে আসেন এই মন্দিরের পুজোর দিনগুলিতে। মন্দির প্রাঙ্গণে বিপুল পরিমাণ ভোগের আয়োজন করা হয় দেবীর ভক্তদের জন্য।